একটা সময় ছিল থানার আধিকারিকদের কাজের স্বাধীনতা তেমন ছিলনা। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে থানার আধিকারিকরা নিজেদের কাজ সঠিকভাবে করার সুযোগ পেতেন না। যার কারণে সাধারণ মানুষ আইনের সুফল থেকে বঞ্চিত হতেন। কিন্তু বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।
আগরতলা, ২০ ডিসেম্বর।।
মানুষের কাছে ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম দ্বার হলো থানা। এখান থেকেই আইনের উপর মানুষের নিরাপত্তা ও আস্থার ভিত্তি গড়ে উঠে। তাই আইনকে স্বচ্ছতার মাধ্যমে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকদের বিরাট দায়িত্ব রয়েছে। আজ আগরতলা প্রজ্ঞা ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। আজ আগরতলা প্রজ্ঞা ভবনে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার সভাপতিত্বে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, জননিরাপত্তা ইত্যাদি সার্বিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ, বিভিন্ন বিভাগের আই জি, বিভিন্ন জেলার এস. পি, মহকুমা স্তরের পুলিশ অফিসার ছাড়াও থানার ওসি এবং থানা পর্যায়ের অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা সাংবাদিক সম্মেলনে বৈঠকের বিভিন্ন বিষয় সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল থানার আধিকারিকদের কাজের স্বাধীনতা তেমন ছিলনা। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে থানার আধিকারিকরা নিজেদের কাজ সঠিকভাবে করার সুযোগ পেতেন না। যার কারণে সাধারণ মানুষ আইনের সুফল থেকে বঞ্চিত হতেন। কিন্তু বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। রাজ্যের বর্তমান সরকার পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার দিয়েছে। পুলিশরাও আইন রক্ষায় সঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন। তিনি পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, পুলিশের পোশাক হল তাঁর অলঙ্কার। এই পোশাকের গড়িমা বজায় রাখার দায়িত্ব পুলিশের। তাই নিজ দায়িত্ব পালনে সর্বদা সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী থানার ওসিদের প্রতিদিনের কাজের মূল্যায়নের উপর জোর দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন পুলিশের কাজ সঠিকভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে এবং জনগণের জন্য সঠিক আইন পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত পুলিশের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, থানা পর্যায়ে আইন প্রণয়ণের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নজরদারি, চার্জশিট প্রদানের ক্ষেত্রে গতিশীলতা এবং পুলিশ এবং পিপি-র সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। এছাড়াও পুলিশের নিজস্ব সমস্যা, পুলিশ স্টেশনগুলির অবস্থা, পুলিশের শারীরিক সক্ষমতা বজায় রাখা নিয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয় বৈঠকের আলোচনায়।
ত্রিপুরার ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কঠোর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও প্রকার বিভ্রান্তি ছড়ালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলনের নামে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা যাবেনা। প্রয়াস কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণকে আইনিভাবে আরও সচেতন করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা এখন সারা দেশে সমাদৃত। অপরাধের হার, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ, সড়ক দুর্ঘটনা ইত্যাদির সংখ্যা রাজ্যে বর্তমানে অনেক হ্রাস পেয়েছে। সাজার হারও অনেক বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, রাজ্যের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করার কোনও অপচেষ্টা বরদাস্ত করা হবেনা। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোরতম জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় বর্তমানে শান্তির বাতাবরণ রয়েছে।

