
ডেস্ক রিপোর্টার, ১৭আগষ্ট।।
অবশেষে কোনো ক্রমে নিজেদের মান বাঁচালো রাজধানীর পুলিশ। উদ্ধার করলো পুলিশ সদর দফতরের লিগ্যাল সেল থেকে চুরি যাওয়া গুরুত্ব পূর্ন ১৬৫টি ফাইল।পুলিশ গ্রফতার করেছে ফাইল চুরির ঘটনায় জড়িত পাঁচ কুশীলবকে। ধৃতরা হলো বিজয় ঋষি দাস, তাপস আচার্য্য, অমিত দেব, সুব্রত সূত্রধর ও সুমন ধর। তাদের মধ্যে প্রথম দুইজন দাগি চোর।বাদবাকি তিনজন কাগজ বিক্রেতা। ধৃতদের বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। তদন্তকারী পুলিশ ধৃতদের রিমান্ডের আবেদন জানায় আদালতে। বিচারক তাদের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

পুলিশের নিরাপত্তার চক্রবুহ্যকে বেআব্রু করে রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তরে হানা দেয় চোর চক্রের পান্ডারা। রাতের অন্ধকারে চোরদের দল পুলিশ সদর দফতরের লিগ্যাল সেলে হানা দেয়।এবং হাতিয়ে নেয় ১৬৫টি মূল্যবান ফাইল।এই ঘটনা জানাজানি হতেই গোটা পুলিশ মহলে গুঞ্জন শুরু হয়। এবং প্রশ্ন উঠে নিরাপত্তা নিয়ে।কারণ পুলিশ সদর দফতরই যে জায়গায় নিরাপদ নয়,সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার চেহারা কেমন হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
পুলিশ সদর দফতরের ডিএসপি শঙ্কর পুরকায়স্থ এই মর্মে রাজধানীর পশ্চিম থানায় মামলা(১৩৩/২২) রুজু করেন। পুলিশ ভারতীয় দণ্ড বিধির ৩৮০,৪১১ ৪৫৭ ও ৩৪ধারায় মামলা দায়ের করে।এবং শুরু করে তদন্ত। রাজধানীর
পশ্চিম থানা ও বটতলা ফাঁড়ির পুলিশ তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে। এবং সনাক্ত করে চোর চক্রের দুই পান্ডা বিজয় ঋষি দাস ও তাপস আচার্য্যকে। এরপর পুলিশ সোর্স মাধ্যমে বিজয় ও তাপসের গোপন ডেরার সন্ধান পায়।মঙ্গলবার রাত ভর পুলিশ অভিযান চালায়। দুই চোর বিজয় ও তাপসকে গ্রেফতার করে শুরু করে জিজ্ঞাসাবাদ।পুলিশের টানা জেরায় দুইজনেই ভেঙ্গে পড়ে।এবং তারা চুরির ঘটনা কবুল করে। ধৃত দুই চোর জানায়, তারা রাতের অন্ধকারে পুলিশী ঘেরাটোপ ডিঙিয়ে লিগ্যাল সেলের রুমে প্রবেশ করে।তার আগে তারা ঘরের জানালা ভাঙ্গে। এরপর শুরু অপারেশন। শেষ পর্যন্ত তারা অপারেশন সম্পূর্ণ করে বেরিয়ে যায় নিরাপদে।

ধৃত দুই চোর জানায়,তারা লিগ্যাল সেল থেকে চুরি করা ফাইল বিক্রি করে দিয়েছে তিন পুরনো কাগজ বিক্রেতার কাছে। তাদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক পুলিশ ধাপে ধাপে তিন কাগজ বিক্রেতাকে জালে তুলে।এরা হলো অমিত দেব, সুব্রত সূত্রধর ও সুমন ধর। তারা পুলিশকে জানিয়েছে, পুরনো কাগজ বিক্রি করা তাদের পেশা। বিজয় ঋষি দাস ও তাপস আচার্য্য তাদের কাছে ফাইল বিক্রির জন্য নিয়ে যায়।এবং তারাও কিনে নেয়। পুলিশ এই তিন কাগজ বিক্রেতাকেও আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয় এবং চুরি যাওয়া ১৫৬টি ফাইল নিজেদের হেফাজতে রেখে দেয় পুলিশ।
এই ঘটনা রাজ্য পুলিশের নাক কাটা গেছে বলেই মনে করছে সাধারণ মানুষ। কেননা পুলিশ সদর দফতর এই রাজ্যের প্রাণ ভোমরা। হাই সিকউরিটি জোন। তারপরও কিভাবে ঘটলো এই ঘটনা? তবে এই চুরি কাণ্ডের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে এলো রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তার কঙ্কালসার।