#Tripura #Bangladesh #Crime #Administration#Janatar#Mashal
অপরাধী যদি সরকারের পছন্দের লোক হয় তাহলে ধরা যাবে না। আর অপছন্দের লোককে বিনা অপরাধে জেল খাটতে হয়।

কিন্তু দুঃভাগ্য হল আমাদের দেশে ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদ্বয় কমর্চারীদের, কর্ম-দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, নিরপেক্ষতার ও মানুষিক দৃঢ়তার চেয়ে তার অতীত ছাত্র জীবন ও পারিবারিক রাজনৈতিক পরিচয়ের উপর ভিত্তি করে গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন ও পদোন্নতি পাওয়ার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তাই তারা অর্পিত দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে তোষামোদ এবং ক্ষমতাসীন দলের লোক হিসাবে নিজকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং দলীয় প্রভাব সৃষ্টি ও ক্ষমতাসীনদের মনোতুষ্টির মাধ্যমে একটা প্রভাব বলয় সৃষ্টি করে।বাংলাদেশ থেকে কলম ধরলেন…অশ্রু হাসি
বাংলাদেশের মানুষ মনে করে দেশে বিশ্বাস যোগ্য সুষ্ঠ নির্বাচন হয় না। যে কারণে সারা বছর আন্দোলন এবং প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠ পোষকতায় দলের ভিতরে-বাহিরে সুবিধাবাদী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জায়গা করে নেয়। যার ফলে মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করে। এর সমাধানের জন্য মানুষ বড় স্বপ্ন আশা নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাঃ ইউনূসকে স্বাগত জানিয়ে ছিল। মানুষ মনে করেছিল তাদের আকাঙ্ক্ষা কিভাবে পূরণ হবে তা নিশ্চয়ই তিনি ভালোভাবে বুঝবেন। কারণ তিনি উচ্চশিক্ষিত নোবেল লরিয়েট, কথাবার্তায় সব সময় মনে হয় মানব দরদী উচ্চ মানসিকতা সম্পূর্ণ মানুষ। রাজনীতিবিদদের যা হউক না কেন তাদের সীমাবদ্ধতা হলো দলের ও দলের বাহিরে অনেক কিছুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলতে গিয়ে কখনও কখনও দেশের জন্য প্রয়োজনীয় কঠিন সিদ্ধান্তের
পরিবর্তে সহনশীল হন। কিন্তু ডঃ ইউনূসের তো কোন পক্ষ বিপক্ষ বা দল নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর যে সীমাবদ্ধতা বা ত্রুটি তা দূর করে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করলে, তখন ভবিষ্যতে রাজনীতিক দলগুলি তা অনুসরণ করার সুযোগ থাকবে না। কারণ তারাও দেশের মঙ্গল চায় এবং ভাল সৃষ্টি অনুসরণ না করলে দেশের মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে। অরাজনৈতিক সরকার কোনো দেশের জন্যেই শুভ নয়, ইহা যেমন সত্য, তেমনি কখনও তারাও কিছু ভালো কাজ করতে পাবে, যা রাজনৈতিক সরকার গুলি ইচ্ছা থাকা সত্বেও করতে পারে নাই। যেমন নিম্ন আদালত (Lower Judiciary) আলাদা করা রাজনৈতিক সরকার গুলি ইচ্ছা থাকার পরও প্রশাসন বিভাগের সাথে দ্বন্দ্ব এড়ানোর জন্য বার বার চেষ্টা করেও কাউ এই দায়িত্ব নেয় নাই। ০১/১১ সরকার এই কাজটি করেছে এবং ইহা স্থায়ী হয়ে গেছে। এর ফলে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের চর্চা তরান্বিত করা হয়েছে। যদিও খুব কম লোক এইটা মনে রেখেছেন।
কিন্তু দেশ নিয়ে যারা ভাবেন উচ্চ স্তরের নিরপেক্ষ মানুষ তারা ঠিকই মনে রেখেছেন, তাই মানুষ ভেবেছিল ডাঃ ইউনূস বড় মনের মানুষ, নষ্ট লোকের মত সংকীর্ণ প্রতিশোধ পরায়ন হবে না । ব্যক্তিগত রাগ, হিংসা, প্রতিশোধ পরায়নাতার উদ্ধে উঠে সত্যিকার নিরপেক্ষ ভাবে কিছু সাহসী কাজ করে দেশেকে সঠিক ভাবে চলার ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলির সীমাবদ্ধতার ভবিষৎতে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রশাসন পেশী শক্তি ব্যবসায়ী ও মিডিয়ার সাথে ন্যায় অন্যায় সম্পর্ক বজায় রাখে যেন নির্বাচনের সময় তাদের সমর্থন পায়। যেহেতু দেশের প্রধান সমস্যা হল সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারা সৃষ্টি করা, যদি দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা সৃষ্টি করা যায় তখন দেশ না এগিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।

তখন কর্মকর্তারা দলীবাজির পরিবর্তে কেরিয়ার গড়ার জন্য সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করত। সিংহভাগ কর্মকর্তারাও চায় প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসাবে রাষ্ট্রের নিদ্ধারিত আইন/বিধি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মর্যাদাশীল হতে। এবং Performance অনুযায়ী পুরষ্কার তিরষ্কার নির্ধারিত হউক ও ন্যায্য প্রটেকশন যেন পায়। তখন কর্মকর্তা- কমর্চারী আইন ও নিয়মের বাহিরে যাবে না।
এই কাজটা ড. ইউনূস করতে পারতেন কারণ তার কোন দল ছিল না সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তিনি করলেই হত। কিন্তু দুর্ভাগ্য তিনি করলেন সম্পূর্ণ উল্টা প্রথমে তিনি অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে কর্মকর্তাদেরকে দলীয় ভাবে চিহ্নিত করলেন এবং কোন নিয়ম নীতি অনুসরণ না করে, যোগ্যতা বিবেচনা ছাড়াই প্রকাশ্য দলীয় বিবেচনায় পদোন্নতি এবং পদায়ন করলেন। যা অতীতে কোন রাজনৈতিক দলীয় সরকারও এই মাত্রায় কখনও করে নাই। ১৫ দিনের ভিতর সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব ও ৪ মাসে সচিবে উন্নীত করে, ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। শত শত হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করে দিলেন। একইভাবে পুলিশকে দলীয় ভাবে বিভক্তির মাধ্যমে ধ্বংস করে দিলেন। অপরাধী যদি সরকারের পছন্দের লোক হয় তাহলে ধরা যাবে না, নিরপরাধ অপছন্দের দলের লোকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার উদাহরণ সৃষ্টি করলেন যার অপরাধের সাথে কোন সম্পর্ক নাই। বিচারবিভাগকে একই ভাবে দলবাজীর মাধ্যমে শেষ করে দিলেন। এ ধরনের কিছু করতে বাধ্য হয়ে তাদের মনবল ভেঙ্গে গেছে। গ্রামে গ্রামে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামাতের মধ্যে স্মরণকালের ভয়াবহ তাণ্ডব লাগিয়ে দিলেন। মানুষ বলে গত ৭০-৭৫ বছরের মধ্যে এই তান্ডব দেখে নাই। প্রায় ২ কোটির বেশী মানুষ ভিটা মাটি ছাড়া। আওয়ামী লীগের গন্ধ আছে এরকম সকল মানুষের উপর অমানবিক অত্যাচার চলছে। এদের অনেকেই ড. ইউনূসের ভক্ত ছিল।
নির্বাচনের পূর্বে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যেন প্রতিটি প্রার্থী দেশের জন্য তার বা তার দলের পরিকল্পনা স্বাধীন ভাবে জনগণকে অবহিত করার সুযোগ পায়।
তার পরও আমার মিনতি যদি প্রধান উপদেষ্টার মানবতা ও দেশের প্রতি নুন্যতম অঙ্গীকার থাকে, তাহলে এখনই সকল প্রশাসনকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে দলীয় ভাবে চিহ্নিত করা বন্ধ করতে হবে এবং তাদেরকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসাবে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে সুযোগ করে দিতে হবে। একটা শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ ন্যায় পরায়ন কর্মকর্তা ব্যতিত সুষ্ঠ নির্বাচন অসম্ভব।
যেহেতু নির্বাচনই হলো জনগণের রায়ের এক মাত্র মাধ্যম, তাই নির্বাচনের পূর্বে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যেন প্রতিটি প্রার্থী দেশের জন্য তার বা তার দলের পরিকল্পনা স্বাধীন ভাবে জনগণকে অবহিত করার সুযোগ পায়। জনগণ প্রত্যেক প্রার্থী/দলের পরিকল্পনা গুলিকে পর্যালোচনা করে সঠিক ব্যক্তি/দলকে ভোট দেওয়ার জন্য ভয়-ভীতি মুক্ত, পরিবেশ সরকারকে সৃষ্টি করতে হবে। ভোটারদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরপেক্ষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই জন্য রাষ্ট্রের সকল পুলিশ, সরকারী কর্মকর্তা-কমর্চারীগনকে দলীয় নয় নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে দায়বদ্ধ করতে হবে।
এই জন্য সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের পেশগত দায়িত্ব পালনের শ্রেষ্ঠতা অনুযায়ী পদায়ন ও পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের কর্মচারী গণদের উপর অর্পিত দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে পালনের যে কোন ঝুকির প্রয়োজনীয় প্রটেকশন দিতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের স্ব-স্ব পরিকল্পনা ও প্রস্তাবনা বা অঙ্গীকার, মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সমান সুযোগ দিতে হবে। ভোট কেন্দ্র গুলিতে মানুষ ভয় ভীতি মুক্তভাবে যাওয়া এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট দেওয়ার পরিবেশ সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। এই জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে মোতায়ন ও তাদের নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের ব্যর্থতার জবাবদিহি শক্ত ভাবে দিতে হবে।

আরো খবর পড়ুন
এই অবস্থায় সারা দেশে একসাথে নির্বাচনের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য করার মত পর্যাপ্ত সংখ্যক কমকতা-কর্মচারী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার লোকবল যথেষ্ট নয়। সে জন্য বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনে ৩/৫ দিনে অনুষ্ঠিত করা যায়। আটটি বিভাগকে ৩/৫ দিনে ভাগ করে ভোট গ্রহণ করার ব্যবস্থা করলে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক মোতায়ন করা যাবে। আসন অনুযায়ী ভোট সম্পূর্ণনের পর সকল ভোটের বাস্ক সীল গালা করে জেলা হেডকোয়ার্টারে বিশেষ ব্যবস্থায় ও সম্পূর্ণ নিরাপ্তার সহিত সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে। সার দেশে ভোট সম্পূর্ণনের পর জেলায় স্বস্ব প্রার্থীর-প্রধান/উপ-প্রধান/সহকারী এজেন্টদের উপস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে গণনা সম্পূর্ণ করে সাথে সাথে ফলাফল ঘোষণা করার ব্যবস্থা করা। তাহলে সত্যতিকার জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন করা সম্ভব। আর এই প্রতিনিধিগণই যখন আইন প্রণয়ন করবে তাকে জনগণের ক্ষমতার ভিত্তিতে আইন/সংবিধান/শাসন ব্যবস্থা বলা যায়।

ইউনূস সংবিধানের উপর শপথ নিয়ে বলেছিলেন জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ চলবে, আইন প্রণয়ন, সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন হবে।
ডঃ ইউনূস সংবিধানের উপর শপথ নিয়ে বলেছিলেন জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ চলবে, আইন প্রণয়ন, সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন হবে। আইন সবার জন্য সমান ও নিরপেক্ষ ভাবে প্রয়োগ হবে। কর্মচারীদের পেশা গত দায়িত্ব পালনের জ্যেষ্ঠতা, শ্রেষ্ঠতা অনুযায়ী পদোন্নতি ও পদায়ন হবে। জনগণের পছন্দের ব্যাক্তি বা দলকে নির্বাচিত করার স্বাধীন সুযোগ থাকবে। জনগণের মতামত বা রায় দেওয়ার ব্যবস্থা সত্যিকারে প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু ইহা না করে কোন পক্ষের হয়ে কাজ করলে মানুষ/মীর জাফর হিসাবে চিরদিন ধিক্কার দিবে এবং প্রতিষ্ঠিত হবে রাজনীতিবিদদের থেকে তথা কথিতি উচ্চশিক্ষিত লোকেরা অনেক সংকৃন ও খারাপ। মানুষ মনে রাখবে এরা যত সুন্দর কথা বলে উপরে কিন্তু ভিতরে অনেক বেশি ধ্বংসাত্মক এবং এরাই মনবতার প্রকৃত শত্রু।