#Bangladesh#Constitution# Sheikh# Mujibur# Mohammad# Younus# Janatar #Marshal

বাংলাদেশ সরকার প্রধানের প্রেস সেক্রেটারি বলেন ”ইহা পাবলিক ইনিশিয়েটিভ”। সরকার এর সাথে জড়িত নয়। কি অদ্ভুত কথা !

সংবিধান পরিবর্তনের পরিণতি কি হতে পারে? এটা বুঝার কোনো ক্ষমতা নেই সুদ ব্যবসায়ী ড. ইউনূসের। তার প্রমাণ ইউনূস নিজেই দিয়েছেন। বাংলাদেশের একটি টিভিতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলছেন, ” দেশ পরিচালনা সম্পর্কে আমি তো কিছুই জানি না।আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে বসেছি।ব্যর্থ হলে চলে যাবো। যখন একটা দেশের প্রধান একথা বলতে পারেন, তখন বুঝতে হবে গণতন্ত্র, সংবিধান,প্রশাসন ,রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানের আলোর গভীরতা কতটা।….. কলম ধরলেন অশ্রু হাঁসি

        #    বাংলাদেশের সংবিধান জনগনের রায়ে ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তিগণের দ্বারা সম্পূর্ন আইন সম্মত এবং গনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার উপর ভিত্তি করে তৈরী। বাংলাদেশের সংবিধান পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় অনেক বেশী জাতি সত্তার উপর ভিত্তি করে রচিত।
১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন হয়। সে নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানের অনেক গুলো রাজনৈতিক দলের মধ্যে দুটি প্রধান দল, আওয়ামী লীগ ও পিপলস পার্টি অংশ নেয়। আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান এবং পিপলস পার্টির সভাপতি ছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। সেই  নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানে ৩০০ জাতীয় পরিষদের আসনের মধ্যে ১৬০টি এবং পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়। অন্যদিকে জুলফিকার আলী ভু্ট্টো পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে ৮৮টি আসনে জয় লাভ করে আর বাকি ৫২টিতে অনেক ছোট ছোট দল জয়ী হয়। পাকিস্তনি শাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বিজয়ী নেতা বঙ্গবন্ধুর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর না করার উদ্দেশ্যে ৩রা মার্চ জাতীয় সংসদে আহ্বানকৃত সংসদ অধিবেশন স্থগিত করে দেন।

শেখ মুজিবর ও জুলফিকার আলী ভুট্টো(ছবি – সংগৃহীত)

“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলার  আহ্বান  করেন।”

তখন বাংলার মানুষ চরম প্রতিবাদী হয়ে উঠেলে গুলি করে বেশ কিছু মানুষকে হত্যা করে। এই অবস্থায় ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবের ঐতিহাসিক ভাষনে “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলার  আহ্বান  করেন। তার পরও পরবর্তীতে কোন প্রশ্ন যেন না আসে, সে জন্য বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনায় বসেন। কিন্তু আলোচনায় সমাধান না করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে ঢাকা সহ সারা দেশে র্নিবিচারে মানুষ শুরু করে। এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু ২৫শে মার্চ দিবাগত রাত্রি অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ, (১৯৭০ এর নির্বাচনে মানুষের ভোটের  ক্ষমতাপ্রাপ্ত হিসেবে) বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।
এখানে  উল্লেখ্য, যেহেতু সমগ্র পাকিস্তানের জনগণের ভোটে আইন সন্মত একমাত্র ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিব, তিনি ছাড়া অন্য কেউ ঘোষণা দিলে ইহা আইনসম্মত ঘোষণা  হবে না। আমি/আপনি যে কেউ ঘোষনা দিতে পারি কিন্তু সে ঘোষনা আইন সম্মত হবে না, কারণ যে ভূখন্ডের যারা মালিক তারা যাকে ক্ষমতা প্রদান করবেন তিনিই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক হবেন। আর তখন শুধু বঙ্গবন্ধুই একমাত্র ক্ষমতা প্রাপ্ত ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্বাপর ধারাবাহিক ভাবে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সহিত বঙ্গবন্ধু সব অনুসরণ করার কারণে স্বাধীনতার এক বছরের কম সময়ের মধ্যে পৃথিবীর ৭০টি দেশের স্বীকৃতি পান এবং ৩ বছরের কম সময়ের মধ্যে জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করেন। অথচ অনেক দেশ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরনের অভাবে স্বাধীনতার বহু বছর পরও খুব কম দেশের স্বীকৃতি লাভ ও জাতিসংঘের পদ পেতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে।


বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার উপর ভিত্তি করে পূর্নাঙ্গ Proclamation of Independent রচিত হয়।

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার উপর ভিত্তি করে পূর্নাঙ্গ Proclamation of Independent রচিত হয়। পরবর্তীতে জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য গনকে নিয়ে মেহহেরপুর জেলার আমলা কাননে (বর্তমান মজীব নগর) নিয়ে ১০ই এপ্রিল ১৯৭১ সনে যে গণপরিষদ গঠিত হয়, এবং উক্ত গণপরিষদ কতৃক এই পূর্ণাঙ্গ Proclamation of Independent অনুমোদিত হয়।

Proclamation of Independent এর ২টি প্রধান দায়িত্ব চিহ্নিত করা হয়:

(১) সরকার গঠন করা, যা মুজিবনগর সরকার বলে পরিচিত ছিল। ঐ সরকার কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করা।

(২) পূর্ণাঙ্গ সংবিধান প্রনয়ণ করা।

এই আলোকে ১৯৭২ সনের ৪ঠা এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩৪ সদস্য সংবিধান প্রনয়ণ কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি সারা পৃথিবীর বহু সংবিধান পর্যালোচনা ও সকল প্রক্রিয়া অনুসরন ও অক্লান্ত পরিশ্রম করে ৬ মাস ২৪দিন অর্থাৎ ৪ঠা নভেম্বর ১৯৭২ সনে তুমুল হর্ষধ্বনির মাধ্যমে গণপরিষদ কতৃক পাশ করা হয়। এই সংবিধানে ৩৯৯ জন গণপরিষদ সদস্য স্বাক্ষর করেন। যেখানে প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, এরপর সৈয়দ নজরুল এবং তাজ উদ্দিন আহমেদের স্বাক্ষর রয়েছে।
নিশ্চয়ই উপরে উল্লেখিত বর্ণনা মতে স্বাধীনতা ঘোষণা Proclamation of Independent এবং পরবর্তীতে সংবিধান রচনার একটা আইন সম্মত ভিত্তি আছে।

।।বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংবিধান রচয়িতা দল।।

আরো খবর পড়ুন

https://janatarmashal.com/how-is-the-blue-plan-of-destruction-being-implemented-in-bangladesh/ (অশ্রু হাসি)

কিন্তু জুলাই ২৪-র আন্দোলন চাকুরিতে বৈষম্য দূরের লক্ষ্যে কোটা আন্দোলন হয়। প্রায় প্রতিটি দেশে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন হয়। ঐ সমস্ত আন্দোলনের পরবর্তীতে অর্জিত ফলাফলের ব্যাপারে কখনও লিখিত চুক্তির উদাহরণ আছে। কিন্তু আন্দোলনে অংশ গ্রহনকারী গোষ্ঠি সংবিধান বাতিল করার কথা বলার উদাহরন পৃথিবীতে এটাই প্রথম। এই ধরনের কথা বলা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। যারা সংবিধানকে এরকম অবমাননার কথা বলবে, অবশ্যই যে কোন উন্নত দেশে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাংলাদেশের সংবিধান উৎপত্তি, প্রনয়ণ ও অনুমদন  জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে সম্পূর্ণ যে সংবিধানের সাথে ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম জড়িত। প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তন করা যায়? সংবিধান বাতিল হয় কি করে? সংবিধান বাতিল করলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকে না। সংবিধানে হাত দেওয়ার ক্ষমতা শুধু মাত্র সংসদের আছে কিন্তু অন্যরা প্রয়োজনে সংশোধনের প্রস্তাব তৈরী করতে পারেন। সংবিধান বাতিল হওয়ার সাথে সাথে রাষ্ট্র পরিচালনার সকল আইন বাতিল হয়ে যাবে না? কারণ সকল আইন সংবিধানের ক্ষমতা বলে জাতীয় সংসদ কতৃক অনুমোদিত।

।।৭১- র মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বাঘিনীরা।।

সংবিধান বাতিলের সাথে সাথে সুপ্রিম কোটও তার অধীনস্থ আদালত কি বিচার কার্য্য চালাতে পারবে?

বাতিলের সাথে সাথে আইন সভা, বিচার বিভাগ, প্রশাসন বিভাগ সব বাতিল হয়ে যাবে। সংবিধান বাতিলের সাথে সাথে সুপ্রিম কোটও তার অধীনস্থ আদালত কি বিচার কার্য্য চালাতে পারবে? সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন দেওয়ার ক্ষমতা বাতিল হয়ে যাবে না? বিদেশী সংস্থার সাথে যে সমস্ত চুক্তি তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিবে না? বাংলাদেশের ট্রেজারি থেকে টাকা কিভাবে ছাড় দিবেন, সংবিধান বাতিল হওয়ার অর্থ কি রাষ্ট্র বাতিল নয়? পৃথিবীতে রাষ্ট্রের সংবিধান অল্প বিস্তর সংশোধন হওয়ার উদাহরণ আছে। কিন্তু বাতিল হয় না। কোথাও সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করলে সংবিধান স্থগিত করার উদাহরণ আছে। যেমন মায়ানমারে, মিশর, ফিজি ও পাকিস্তান সহ খুবই আশ্চর্য রকম কয়েকটা দেশের উদাহরণ আছে। সেই সমস্ত দেশের মানুষ অত্যন্ত অসন্মানজনক জীবন যাপন করে।

।।বাংলাদেশে ২৪- র অসভ্যতা।।

পৃথিবীর কোন সভ্য দেশ সংবিধানের বিরুদ্ধে এভাবে কথা বললে অবশ্যই সে গ্রেফতার হবে অথচ বাংলাদেশ সরকার প্রধানের প্রেস সেক্রেটারি বলে ”ইহা পাবলিক ইনিশিয়েটিভ” সরকার এর সাথে জড়িত নয়। কি অদ্ভুত কথা !

ইউনূস কি পারবেন সংবিধান পরিবর্তন করতে?

৩০ লক্ষ জীবনের বিনিময় রচিত সংবিধানকে অসম্মান করা হচ্ছে অথচ সরকার বলেছে এর সাথে তারা জড়িত নয়। এই সরকার সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে প্রকাশ্যে শপথ ভঙ্গ করছে। এর চেয়ে বড় অপরাধ আর কি হতে পারে? আমেরিকার রাষ্ট্রপতি তার শপথের কোন অংশ বিশেষও ভঙ্গের জন্য রাষ্ট্রপতির পদ হারাতে হয়। এই অবস্থায় ড. ইউনুসের কাছে কি আমরা জানতে চাইবো না; তাঁর সরকারের কি শাস্তি হওয়া উচিৎ?


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *