হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত হাতে আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত ছবি পাঠিয়ে দেয় জঙ্গিরা।
দেও উপত্যকা (ছবি – সংগৃহীত)
ঠিকাদারদের ভাষায়, শুধু তাই নয়, প্রতিটি সরকারি নির্মাণ কাজের ওয়ার্ক অর্ডারে থাকা মূল অর্থ রাশির দশ শতাংশ অর্থ দেওয়ার হুলিয়া জারি করেছে জঙ্গিরা। চাহিদা অনুযায়ী তাদের ডেরায় টাকা না পৌঁছালে তারা বন্ধ করে দেবে কাজ। এবং তার জন্য ঠিকাদারদের দিতে হবে চরম মূল্যও। পরিষ্কার ভাবেই এই বার্তা ঠিকাদারদের কর্ণকুহরে পৌঁছে দিয়েছে বৈরীরা।
ডেস্ক রিপোর্টার,১৭ ডিসেম্বর।। জঙ্গি আতঙ্কে কম্পিত দেও উপত্যকা। বাংলাদেশের উত্তাল রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একদল জঙ্গি উত্তর জেলার কাঞ্চনপুর মহকুমার দক্ষিণাঞ্চলের ভারত -বাংলা সমীন্তবর্তী এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে । ইতিমধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি কাজে যুক্ত ঠিকাদারদের কাছে মোটা অংকের অর্থ দাবি করে হুমকি দিচ্ছে নিয়মিত। বেশ কয়েকজন ঠিকাদার বৈরীদের কাছ থেকে হুমকি পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তারা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাছেও লিখিত ভাবে বৈরী হুমকির কথা জানিয়ে বন্ধ রেখেছেন নির্মাণ কাজ। ফলে কাঞ্চনপুর মহকুমার আরডি দপ্তর , ডিডাব্লিউএস ও পূর্ত দফতরের বিভিন্ন শাখায় সরকারি নির্মাণ কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বৈরী বিরোধী অভিযান নিয়ে নীরব পুলিশ।
জঙ্গলে অস্ত্র হাতে জঙ্গি। ঠিকাদারদের কাছে এই ছবি পাঠিয়েছে এরা।।( ছবি – সংগৃহীত)।
মহকুমার সরকারী নির্মান কাজের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারদের বক্তব্য, বৈরীরা মোটা অঙ্কের চাঁদা চেয়ে নিয়মিত হোয়াটস অ্যাপে নিয়মিত ভয়েস ম্যসেজ পাঠিয়ে থাকে। ঠিকাদারদের ভাষায়, শুধু তাই নয়, প্রতিটি সরকারি নির্মাণ কাজের ওয়ার্ক অর্ডারে থাকা মূল অর্থ রাশির দশ শতাংশ অর্থ দেওয়ার হুলিয়া জারি করেছে জঙ্গিরা। চাহিদা অনুযায়ী তাদের ডেরায় টাকা না পৌঁছালে তারা বন্ধ করে দেবে কাজ। এবং তার জন্য ঠিকাদারদের দিতে হবে চরম মূল্যও। পরিষ্কার ভাবেই এই বার্তা ঠিকাদারদের কর্ণকুহরে পৌঁছে দিয়েছে বৈরীরা।
পুলিশের কাছে অভিযোগকারী এক ঠিকাদার ভীত স্বতন্ত্রস্ত হয়ে জানিয়েছেন, ” মোবাইলে জঙ্গিদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা কিছু বলে না। কিন্তু মুহূর্তেই হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত হাতে আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত ছবি পাঠিয়ে দেয়।”
।জঙ্গি ফিলিপ কুমার।
কাঞ্চনপুর মহকুমাতে জঙ্গি গতিবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল গোয়েন্দা। গোয়েন্দার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কাঞ্চনপুরের দক্ষিণাঞ্চলের ভাঙমুন, ভান্ডারিমা , ছয়গড়পুর,পুষ্পরাম পাড়া, বিজয় কুমার ,শাইকার,শেরমুন-ওয়ান শেরমুন-টু ,খাসিতাই ইত্যাদি প্রত্যন্ত অঞ্চলে জঙ্গিদের বিচরণ। সংশ্লিষ্ট অঞ্চল গুলিতে নির্মাণ কাজে যুক্ত ঠিকাদারদেরকেই হুমকি দিচ্ছে বৈরীরা।
পাহাড়ের এই নির্জন অঞ্চল গুলিকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের বুকে পুনরায় অশান্তি সৃষ্টি করতে একদল জনজাতি যুবক তাদের জঙ্গি বাণিজ্যের ঝাঁপ খোলে বসেছে।
স্বাভাবিক ভাবেই ঠিকাদার ও শ্রমিকরা প্রাণ ভয়ে এই সব অঞ্চলে যাইতে চাইছেন না। নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে সমতল থেকে চালকরা গাড়ি নিয়েও যেতে ভয় পাচ্ছেন। এই সমস্ত অঞ্চলগুলি অতি স্পর্শকাতর হিসাবেই পুলিশের খাতায় নথিভুক্ত। এবং বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। তাই পাহাড়ের এই সব নির্জন অঞ্চল গুলিকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের বুকে পুনরায় অশান্তি সৃষ্টি করতে একদল জনজাতি যুবক তাদের জঙ্গি বাণিজ্যের ঝাঁপ খোলে বসেছে। পুলিশ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সরকারি নির্মাণ কাজের বরাদ প্রাপক নির্মাণ সংস্থা ও তাদের শ্রমিকদের কতটা নিরাপত্তা দিতে পারবে?আপাতত কুলুঙ্গিতে তোলা থাক এই প্রশ্নের উত্তর।