“পশ্চিম বাংলার বীরভূম জেলার বাসিন্দা সোনালী খাতুন। তার অভাব অনটনের সংসার। পেট ও সংসার প্রতিপালনের জন্য কাজের সন্ধানে গিয়েছিল দেশের রাজধানী দিল্লিতে। সঙ্গে ছিল আরো কয়েকজন। স্বপ্ন ছিল দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে অর্থ রোজগার করে রাজ্যে ফিরে আসা। কিন্তু বিধির বিধান ,যে কেউ ঠেকাতে পারবে না? ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের সম্মুখীন হতে হলো সোনালিকে।”
ডেস্ক রিপোর্টার, ১২ অক্টোবর।। দিল্লি পুলিশের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে এক ভারতীয় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে। তার অপরাধ ছিলো সে একজন বাঙালি। তার ভাষা বাংলা। জাতিগত ভাবে বাঙালি ও ভাষা বাংলা হওয়ার সুবাদে দিল্লী পুলিশ এই নারীকে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে পাঠিয়ে দিয়েদিলো ওপার সীমান্তে। বাংলাদেশের জেলে থাকা এই নারী এখন অন্তঃসত্ত্বা। তাকে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ হাইকোর্ট। বাংলাদেশ আদালতের এই নির্দেশ এসে পৌঁছেছে ভারতীয় হাইকমিশনে।
স্বপ্ন ছিল দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে অর্থ রোজগার করে রাজ্যে ফিরে আসা।
পশ্চিম বাংলার বীরভূম জেলার বাসিন্দা সোনালী খাতুন। তার অভাব অনটনের সংসার। পেট ও সংসার প্রতিপালনের জন্য কাজের সন্ধানে গিয়েছিল দেশের রাজধানী দিল্লিতে। সঙ্গে ছিল আরো কয়েকজন। স্বপ্ন ছিল দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে অর্থ রোজগার করে রাজ্যে ফিরে আসা। কিন্তু বিধির বিধান ,যে কেউ ঠেকাতে পারবে না? ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের সম্মুখীন হতে হলো সোনালিকে।
দিল্লির পাইকর থানা এলাকার বাসিন্দা ভারতীয় নাগরিক সোনালী খাতুন সহ আরো ছয় জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
গত জুন মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ভারত থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের বিতাড়নের কাজ শুরু করেছিল বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসন। তার অঙ্গ হিসেবে দিল্লি পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছিল। দিল্লির পাইকর থানা এলাকার বাসিন্দা ভারতীয় নাগরিক সোনালী খাতুন সহ আরো ছয় জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারা সবাই পশ্চিমবাংলার বাসিন্দা। অভিযোগ, ভারতীয় নাগরিকত্বের তথ্য প্রমান দেখানো সত্ত্বেও পশ্চিম বাংলার বাসিন্দা বাংলা ভাষী অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন সহ ছয় জনকে অসম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করেছিল বিএসএফ।
বাংলাদেশ আদালত অন্তঃসত্ত্বা সোনালী সহ তার সঙ্গে থাকা ৬ জনের জামিন মঞ্জুর করেছে গত ২৯ সেপ্টেম্বর।
সোনালী সহ তার সঙ্গে থাকা ৬ জনকে বিএসএফ বাংলাদেশে পুশব্যক করলেও সেই দেশে গিয়ে তাদের স্থান হয়েছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারা অন্দরে। কারণ তারা ভারতীর নাগরিক।সুতরাং বাংলাদেশেও সোনালীরা “অনুপ্রবেশকারী”। বাংলাদেশ আদালত অন্তঃসত্ত্বা সোনালী সহ তার সঙ্গে থাকা ৬ জনের জামিন মঞ্জুর করেছে গত ২৯ সেপ্টেম্বর। এরপর পুজোর ছুটি থাকায় থমকে যায় গোটা প্রক্রিয়া।
বাংলাদেশি সন্দেহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের ওই ছ’জনকে আটক করা ও বিতাড়নের সিদ্ধান্তও খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিকে সোনালি ও তার সঙ্গীদের ফিরে পেতে তাঁদের পরিজনদের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট কড়া নির্দেশ দিয়েছিল । কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, বাংলাদেশে পুশব্যাক করা ছ’জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশি সন্দেহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের ওই ছ’জনকে আটক করা ও বিতাড়নের সিদ্ধান্তও খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও আইনী প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের আদালতে যদি সোনালিদের জামিন হয়েও যায়, ছাড়া পেয়ে তাঁরা, তারপর কোথায় থাকবেন তারা?, তা নিয়ে সংশয় ছিল। কারণ, তাঁরা বাংলাদেশেও ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত। এই পরিস্থিতিতে সোনালিদের স্বস্তি দিয়েছে ঢাকা হাইকোর্টের নির্দেশ।