ঘটনার পরের দিন দিবাকর একটি ইকো গাড়িতে করে ট্রলি ব্যাগে থাকা শরিফুল ইসলামের লাশ নিয়ে যায় গন্ডাছড়াতে। সেখানে চিকিৎসক দিবাকর সাহার বাবার দোকানে থাকা আইসক্রিমের ফ্রিজের মধ্যে শরিফুলের দেহ রেখে দেয়। এখান থেকেই পুলিশ উদ্ধার করে স্মার্ট সিটির ইলেকট্রিশিয়ান শরিফুলের নিথর লাশ।
ডেস্ক রিপোর্টার, ১১ জুন।। অবশেষে উদ্ধার হলো ইন্দ্রনগরের নিখোঁজ যুবক শরিফুল ইসলামের (২৪) রক্তাক্ত দেহ। গণ্ডাছড়া থেকে লাশ উদ্বার করেছে পুলিশ।শরিফুলের লাশ আইসক্রিমের ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলো খুনি দিবাকর সাহা। নেপথ্যে ছিলো ত্রিকোণ প্রেমের রহস্য।সাংবাদিক বৈঠক করে শরিফুল হত্যাকাণ্ডের মোডাস অপারেন্ডি নিশ্চিত করেছেন পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার। এসপি জানিয়েছেন, শরিফুল হত্যা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে পুলিশ ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা হলো মূল মাস্টার মাইন্ড চিকিৎসক দিবাকর সাহা (২৮), জয়দীপ দাস (২৮), নবনীতা দাস(২৫),অনিমেষ যাদব (২৫) দীপক সাহা৫২) ও দেবিকা সাহা( ৪২)। তাদের বিরুদ্ধে শহরের এনসিসি থানায় খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
দিবাকর তাকে গিফট দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলো ইন্দ্রনগরের বাসিন্দা জয়দীপ দাসের বাড়িতে। রাতে এখানেই ঠান্ডা মাথায় গলা কেটে শরিফুলকে খুন করে দিবাকর সাহা।
গত ৮ জুন রাত সাড়ে নয়টায় চিকিৎসক দিবাকর সাহার ডাকে সাড়া দিয়ে ইন্দ্রনগর কবরখলাস্থিত বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলো শরিফুল ইসলাম। দিবাকর তাকে গিফট দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলো ইন্দ্রনগরের বাসিন্দা জয়দীপ দাসের বাড়িতে। রাতে এখানেই ঠান্ডা মাথায় গলা কেটে শরিফুলকে খুন করে দিবাকর সাহা।তাকে সাহায্য করে জয়দীপ, নবনীতা ও অনিমেষ। শরিফুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে তার দেহ কয়েকটি টুকরা করে ট্রলি ব্যাগে ঢুকিয়ে নেয়। এবং পাশে থাকা দিবাকরের এক মাসির ঘরে। ট্রলি ব্যাগটি রেখে দেয়।ঘটনার একদিন আগে দিবাকর এই ট্রলি ব্যাগটিকে নিয়ে রেখেছিল জয়দীপের বাড়িতে।
গন্ডাছড়াতে আইসক্রিমের ফ্রিজে শরিফুলের দেহ।
পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমারের বক্তব্য, ঘটনার পরের দিন দিবাকর একটি ইকো গাড়িতে করে ট্রলি ব্যাগে থাকা শরিফুল ইসলামের লাশ নিয়ে যায় গন্ডাছড়াতে। সেখানে চিকিৎসক দিবাকর সাহার বাবার দোকানে থাকা আইসক্রিমের ফ্রিজের মধ্যে শরিফুলের দেহ রেখে দেয়। এখান থেকেই পুলিশ উদ্ধার করে স্মার্ট সিটির ইলেকট্রিশিয়ান শরিফুলের নিথর লাশ ।
রেশমির ভালবাসা একা পাওয়ার জন্য শরিফুলকে চিরতরে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া রক্তাক্ত স্ক্রিপ্ট রচনা করে দিবাকর।
তদন্তকারী পুলিশ শরিফুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে আগরতলায়। গ্রেফতার করে বাংলাদেশ থেকে ডাক্তারি পাশ করা দিবাকর সাহার বাবা দীপক সাহা ও মা দেবিকা সাহাকে। এর আগেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল দিবাকর, জয়দীপ, নবনীতা ও অনিমেষকে। মঙ্গলবার রাতেই ধৃত চিকিৎসক দিবাকর সাহার স্বীকারোক্তি মূলেই গণ্ডাছড়াস্হিত তারা বাবার দোকানের ফ্রিজ থেকে শরিফুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
কে কিরণ কুমার ( এসপি, পশ্চিম জেলা)
গ্রেফতার করে বাংলাদেশ থেকে ডাক্তারি পাশ করা দিবাকর সাহার বাবা দীপক সাহা ও মা দেবিকা সাহাকে।
আইপিএস কিরন কুমার জানিয়েছেন, ঘটনার নেপথ্যে ত্রিকোণ প্রেমের রহস্য। চন্দ্রপুর এলাকার যুবতি রেশমির সঙ্গে শরিফুলের ভালবাসার সম্পর্ক ছিলো।মাঝে তাদের এই সম্পর্কের মধ্যে ভাটা পড়ে। এই সময়ে চিকিৎসক দিবাকর সাহার সঙ্গে রেশমির সম্পর্ক তৈরি হয়।তখন শরিফুলের বিষয়টি জানতে পারে দিবাকর। রেশমির ভালবাসা একা পাওয়ার জন্য শরিফুলকে চিরতরে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া রক্তাক্ত স্ক্রিপ্ট রচনা করে দিবাকর। রেশমি ও দিবাকর সম্পর্কে তুতো ভাই – বোন। দিবাকরের মূল বাড়ি গণ্ডাছড়া হলেও সে শহরের বনকুমারী এলাকায় ভাড়া থাকতো। রেশমি ও দিবাকরের মোবাইল থেকে পাওয়া তথ্য উভয়ের সম্পর্কের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। বুধবার ময়না তদন্তের পর শরিফুলের মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় তার পরিবারের সদস্যদের হাতে। শরিফুল হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য খুব দ্রুত উন্মোচন করেছে তদন্তকারী পুলিশ।