খয়েরপুর বাইপাস সড়কের বুক চিরে নিয়মিত মাদক সামগ্রী পাচার করে মাস্টার মাইন্ড মান্তুনু সাহা।
।মাদক সম্রাট মান্তনু সাহা।
অপহৃত চালক তাপস দেবকে উদ্ধার না করে মাদক মাফিয়া মান্তুনু সাহা ও তার লোকজনের সঙ্গে আর্থিক সেটিং শুরু করেছে পুলিশ। মূখ্য ভূমিকা পালন করছে বোধজং নগর থানার ওসি। তার পেছনে নাকি খোদ হাত রয়েছে পশ্চিম জেলার এসপি কিরন কুমারের। গুঞ্জন পুলিশ মহলে।
মাদক বাণিজ্য কেন্দ্র করে রাজধানীতে ফের এক চালককে অপহরণ করেছে মাদক মাফিয়ারা। ঘটনা খয়েরপুরে। অপহৃত চালকের নাম তাপস দেব। তাকে একটি কালো রঙের থার গাড়িতে করে অপহরণ করে মাদক সিন্ডিকেটের চাইরা। গোটা ঘটনার নেপথ্যে রাজ্যের এলিট ক্লাসের মাদক দস্যু মান্তুনু সাহা। তার বাড়ি তেলিয়ামুড়াতে। পুরো ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল রাজধানীর পুলিশ। চালক অপহরণের প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে পুরাতন আগরতলা পুলিশ ফাঁড়িতে।অভিযোগ, অপহৃত চালক তাপস দেবকে উদ্ধার না করে মাদক মাফিয়া মান্তুনু সাহা ও তার লোকজনের সঙ্গে আর্থিক সেটিং শুরু করেছে পুলিশ। মূখ্য ভূমিকা পালন করছে বোধজং নগর থানার ওসি। তার পেছনে নাকি খোদ হাত রয়েছে পশ্চিম জেলার এসপি কিরন কুমারের। গুঞ্জন পুলিশ মহলে।চালক অপহরণের ঘটনা কেন্দ্র করে খয়েরপুর বিজেপিতে চলছে ঝামেলা। কারণ চালক তাপস দেব সহ স্থানীয় যুবকরা মাদক বিরোধী অভিযানে নেমেই মান্তুনুর ফেনসিডিলের গাড়ি আটক করেছিল। তাই তারা পুলিশের এই কার্যকলাপে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে।
।।প্রতীকী ছবি।।
বাইপাস সড়ক স্পর্শ করা তিন থানাকে মোটা অঙ্কের কাঞ্চনমূল্য দিয়ে থাকে মান্তুনু।
স্থানীয় সূত্রের খবর, খয়েরপুর বাইপাস সড়কের বুক চিরে নিয়মিত মাদক সামগ্রী পাচার করে ব্যাবসায়ী মান্তুনু সাহা। বহিঃ রাজ্য থেকে সে নিয়ে আসে ফেনসিডিল।এবং রাজ্য থেকে রপ্তানি করে গাঁজা। বরাবর মান্তুনু মাদক সামগ্রীর চালান বোঝাই গাড়ি বাইপাস সড়ক ধরেই চলাচল করে থাকে। আমতলী থেকে খয়েরপুর পর্যন্ত বাইপাস সড়ক তিন থানার অধীনে।প্রথমে আমতলী থানা, তারপর শ্রীনগর থানা শেষে বোধজং নগর থানা। এই থানার অধীনে থাকা পুরাতন আগরতলা পুলিশ ফাঁড়ি খোদ খয়েরপুর বাইপাসের মুখেই। মান্তুনু থানা ও ফাঁড়িকে কাঞ্চনমূল্য দিয়েই ব্যবসা করে থাকে। রাজ্যের অধিকাংশ থানার সঙ্গেই মান্তুনুর সেটিং রয়েছে। অভিযোগ, রাজনৈতিক ভাবে তাকে সাহায্য করে থাকে সৈকত দাস নামে এক যুবক।
।আমতলী – খয়েরপুর বাইপাস সড়ক।
রাজনৈতিক ভাবে তাকে সাহায্য করে থাকে সৈকত দাস নামে এক যুবক। কে এই সৈকত?
মান্তুনু সাহার মাদক পাচারের রুট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল খয়েরপুরের শাসক দলের যুব ব্রিগেড। তাই তারা নামে মাদক বিরোধী অভিযানে।শনিবার সন্ধ্যায় খয়েরপুর বাইপাস সড়ক ধরে ১০ হাজার ফেনসিডিলের বোতল নিয়ে সোনামুড়ার দিকে যাচ্ছিলো মান্তুনু সাহার একটি বোলেরো পিকআপ। প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে তখন স্থানীয় যুবকরা বাইপাস সড়কে আড়াআড়ি ভাবে একটি ডি – আই গাড়ি দাঁড় করিয়ে মান্তনুর ফেনসিডিলের গাড়ি আটক করে।অর্থাৎ নেশা বিরোধী অভিযানের যুক্ত যুবকদের পাতা এম্বুশের ফাঁদে আটকে যায় মান্তুনুর সাহার ফেনসিডিল বোঝাই গাড়ি।তখন ডি আই গাড়িতে চালকের ভূমিকায় ছিলো তাপস দেব। স্থানীয় যুবকরা ফেনসিডিল বোঝাই বোলেরো পিকআপ আটক করে নিয়ে আসে পুরাতন আগরতলা পুলিশ ফাঁড়িতে। তারা পুলিশের হাতে গাড়ি সপে দিয়ে চলে যায়।
এরপরেই শুরু হয় নতুন ক্লাইমেক্স। মান্তুনু সাহার ত্রাতা হয়ে মাঠে নামেন খোদ বোধজং নগর থানার ওসি। অভিযোগ, তিনি নিজ ক্ষমতা বলে পুরাতন আগরতলা পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মাদক কারবারি মান্তুনু সাহার ফেনসিডিল বোঝাই গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। আর এই সময়ের মধ্যেই মান্তুনুর পোষা গুন্ডারা চলে যায় ডি আই গাড়ির চালক তাপস দেবের বাড়িতে।তাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে একটি থার গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো খবর নেয়। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, চালক তাপস দেবের অপহরণের কাজে ব্যবহার করা হয় ব্যবহৃত কালো রঙের একটি থার গাড়ি। এই গাড়িটির মালিকের নাম সায়ন্তন দাস। পুলিশ এই গাড়িটিকে সন্ধান করছে।কিন্তু এখনো খোঁজ পায় নি। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে গাড়িটিকে নাকি সনাক্ত করেছে। এই ফুটেজ রয়েছে জিরানিয়া থানার পুলিশের হাতে।
গোয়েন্দার তথ্য মান্তুনু ,রানা সায়ন্তন, সৈকত দীর্ঘ দিন ধরেই মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত।
পুরাতন আগরতলা ফাঁড়ির পুলিশ ও খয়েরপুরের মাদক বিরোধী অভিযানে জড়িত যুবকদের বক্তব্য, মান্তুনু ,রানা সায়ন্তন, সৈকত দীর্ঘ দিন ধরেই মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। একই তথ্য দিয়েছে গোয়েন্দাও। সমাজে নিজেদের ভদ্রবেশী মুখ তুলে ধরতে মাদক কারবারের অন্তরালে এরা অটোমোবাইলের ব্যবসাও করে থাকে।
প্রশ্ন হচ্ছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা যখন নেশা বিরোধী অভিযানে পুলিশকে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছেন, ঠিক তখনই পুলিশ হাঁটছে উল্টো পথে। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা রেখে মাদক বিরোধী অভিযানে যুক্ত লোকজনকে অপহরণ করতে সাহায্য করছে খোদ পুলিশেই। আবার মাদক কারবারীদের পন্য সামগ্রীও ছড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এটাই কি পুলিশের জিরো টলারেন্স নীতি? ছিঃ ছিঃ।