বিদ্যাজ্যোতির আতঙ্কে ছাত্র ছাত্রীরা।গণ হারে ছাড়ছে স্কুল। স্কুল হ্রাসের সিদ্ধান্ত শিক্ষা দপ্তরের। vidyajyoti school | Janatar Mashal
“রাজ্য সরকারের বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের স্কুলগুলির ফলাফলে হতাশ। তার জন্য অবশ্যই দায়ী শিক্ষা দপ্তর। সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ভাবে রাজ্যের ১০০টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হয়েছিলো।“....

আগরতলা সহ বিভিন্ন জেলার বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল ত্যাগ করতে শুরু করেছে। তারা পুনরায় ফিরে যাচ্ছে আশপাশের বাংলা স্কুলগুলিতে।

ডেস্ক রিপোর্টার, ২১জুন।।
আগামী কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্য শিক্ষা দপ্তর জারি করতে পারে এক তুঘলকি ফরমান! কারণ শিক্ষা দপ্তর বিদ্যা জ্যোতি প্রকল্পের স্কুল গুলির স্বাদ আস্বাদন করেছে। কিন্তু স্বাদ বড় তেতু।এটা দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছে শিক্ষা দপ্তর। তাই আগামী দিনে বিদ্যা জ্যোতি স্কুলের সংখ্যা কমানোর পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার।ইতিমধ্যে শিক্ষা দপ্তর একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিতে পারে। এমন খবর ঘুরছে শিক্ষা দপ্তরের অন্দরে।

রাজ্য সরকারের বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের স্কুলগুলির ফলাফলে হতাশ। তার জন্য অবশ্যই দায়ী শিক্ষা দপ্তর। সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ভাবে রাজ্যের ১০০টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হয়েছিলো।মূলত ছাত্র – ছাত্রীদের বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করার উদ্দেশ্যেই শিক্ষা দপ্তর বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প চালু করেছিল। উদ্দেশ্য ভালো হলেও তার জন্য ছিলনা কোন সঠিক পরিকল্পনা। উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবেই বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের স্কুলগুলির শিক্ষার বুনিয়াদ ভেঙ্গে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।তার প্রমাণ ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাশা জনক ফলাফল। দু:স্থ ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে স্কুলের মাসিক বেতন মেটানো দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। একদিকে পরীক্ষার হতাশা জনক ফলাফল, অন্যদিকে আর্থিক চাপের কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা গণহারে বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে আলবিদা জানিয়ে দিচ্ছে।

খবর অনুযায়ী, আগরতলা সহ বিভিন্ন জেলার বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল ত্যাগ করতে শুরু করেছে। তারা পুনরায় ফিরে যাচ্ছে আশপাশের বাংলা স্কুলগুলিতে। স্বাভাবিক ভাবেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকারের স্বপ্নের বিদ্যাজ্যোতি স্কুলগুলি। রাজ্য সরকার বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছে, আগামী দিনে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প তাদের কাছে বিষ ফোঁড়ার মতো হয়ে উঠবে। তোপের মুখে পড়তে হবে সরকারকে। এই কারণেই বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের সংখ্যা কমানোর দিকে হাঁটছে শিক্ষা দপ্তর। তথ্য বলছে, গোটা রাজ্যে মাত্র ৫০টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় রাখা হবে।

আরো খবর
রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলি নিয়মিতভাবে ভুগছে শিক্ষক স্বল্পতায়। রাজ্যের বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলির সিংহভাগ শিক্ষক শিক্ষিকা একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড বাংলাকে ভিত্তি করে। অথচ এই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকেই বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পঠন পাঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে একটা বড় ভুল। তার আগে অবশ্যই শিক্ষক শিক্ষিকাদের সেই ভাবে বিশেষ ট্রেনিং দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। একই ভুল ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গেও। এই সমস্ত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা এতদিন বাংলায় পড়াশোনা করেছে। পরীক্ষা দিয়েছে বাংলায়। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের সমস্ত বিষয় হয়ে গেলো ইংরেজি। এটাও বড় সমস্যা।এই পরিস্থিতিতে বাংলা মাধ্যমের ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে পড়াশোনা করে ভালো ফলাফল করা অসম্ভব। এই কারণেই তারাও বাধ্য হচ্ছে স্কুল ছাড়তে।