ডেস্ক রিপোর্টার, ২১ এপ্রিল।। রাজ্যেও আন্তর্জাতিক জাল পাসপোর্ট চক্রের এজেন্টদের খুঁজে বের করতে পৃথক তদন্ত শুরু করবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট( ইডি)। আগামী সপ্তাহেই মাঝামাঝি রাজ্যের বিভিন্ন এসডিএম অফিস সহ পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালাতে পারে ইডি। খবর, আগারতলাস্থিত ইডি’ র অফিস সূত্রে।
প্রায় শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিক ঘুরপথে রাজ্যের ঠিকানায় পাসপোর্ট হাতিয়ে নিয়েছে।
ইডি’র খবর অনুযায়ী, আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ঠিকানায় বাংলাদেশি নাগরিকরা ভুয়ো দস্তাবেজ দিয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে রেখেছে।তাছাড়া প্রায় শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিক ঘুর পথে পাসপোর্ট হাতিয়ে নিয়েছে। এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে ইডি। সম্প্রতি কলকাতা সহ পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন শহরে ইডি অভিযান করেছিলো। তখনই ইডির আধিকারিকদের সামনে ত্রিপুরার ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
ইডির সূত্রের দাবি, স্থানীয় দালাল চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকরা পাসপোর্ট হাতিয়ে নিয়েছে। দালাল চক্রের পান্ডারা মূলত ভুয়ো ভারতীয় নথি পত্র বের করে দিয়ে থাকে বাংলাদেশি নাগরিকদের। আগরতলা শহরে বেশ কিছু এজেন্সি অফিস বানিয়ে পাসপোর্ট ব্যবসা করছে দীর্ঘ দিন ধরে।তাদের সঙ্গে পাসপোর্ট অফিস, এসডিএম ও পুলিশের একটি চক্র জড়িত। এই ত্রিবেণী সঙ্গমের হাত ধরেই বাংলাদেশিরা ভারতীয় পাসপোর্ট হাতিয়ে নিয়েছে। এই সমস্ত এজেন্সিগুলিও এখন ইডির রাডারের মধ্যে।
বহু বাংলাদেশি নাগরিক ত্রিপুরার ঠিকানায় পাসপোর্ট বের করে বর্তমানে বিদেশে চাকরী করছে।
ইডির সূত্রের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বহু বাংলাদেশি নাগরিক ত্রিপুরার ঠিকানায় পাসপোর্ট বের করে বর্তমানে বিদেশে চাকরী করছে। ইডি তাদের নামের তালিকাও তৈরি করেছে।তথ্য সংগ্রহ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এপরেই গুছিয়ে দফা ওয়ারি অভিযান চালাবে ইডির আধিকারিকরা। তবে ত্রিপুরার স্থায়ী বসবাসকারীর ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। আন্তর্জাতিক জঙ্গিরাও মোটা অঙ্কের বিনিময়ে পাসপোর্ট হাতিয়ে নিয়েছিলো।
আল কায়েদার জঙ্গি আগরতলার লক্ষীনারায়ণবাড়ী রোডের ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছিলো।
এই ঘটনা প্রথমে জন সন্মুখে আসে ২০০৭ সালে। এই বছর হায়দরাবাদ মক্কা মসজিদের বিস্ফোরণের পর কলকাতার লাল বাজার থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল বিশ্ব ত্রাস জঙ্গি সংগঠন আল – কায়েদার সদস্য আব্দুল রহমান কাইয়ূম। এই জঙ্গি আগরতলার লক্ষীনারায়ণবাড়ী রোডের ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছিলো।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর তৎকালীন বাম সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। তদন্ত কমিটির দায়িত্বে ছিলেন টিসিএস তমাল মজুমদার। তদানীন্তন সময়ে সদরের মহকুমা শাসক ছিলেন টিসিএস দুলাল দাস। শেষ পর্যন্ত তদন্ত কমিটি সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা করেছিলো কিনা তা আজও জানা যায় নি।
বহু বছর ধরেই ত্রিপুরার মাটিতে জাল পাসপোর্ট চক্রের দালালদের রক্ত বীজ সক্রিয়।
পরিশেষে বলা যায়, বহু বছর ধরেই ত্রিপুরার মাটিতে জাল পাসপোর্ট চক্রের দালালদের রক্ত বীজ সক্রিয়। তারা কাজ করছে নিয়মিত। বর্তমান সময়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট পৃথক ভাবে তদন্ত করে কতটা গভীরে প্রোথিত হতে পারে তা বলবে সময়েই।