আগরতলা, ২১জুন।।

       শহরবাসীকে সুন্দর, সুস্থ, পরিচ্ছন্ন নাগরিক পরিষেবা প্রদানে বর্তমান রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর। এই লক্ষ্য পূরণে রয়েছে রাজ্য সরকারের প্রতিনিয়ত ইতিবাচক জনকল্যাণমুখী উদ্যোগ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিকতা। আজ আগরতলা পুরনিগম এলাকার পুকুরের সৌন্দর্য্যায়ন ও সংস্কারসাধন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। উল্লেখ্য আজ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একাধারে দুটি অনুষ্ঠানের যথাক্রমে ৩৩ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত নাগেরজলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে পুকুরের (ভট্টপুকুর) এবং ৪০ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত পুকুরের (মন্ত্রী পুকুরের) সৌন্দর্যায়ন এবং সংস্কারসাধন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।


অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ত্রিপুরা ক্রমশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ত্রিপুরার নগরগুলির উন্নয়ন মানুষ আজ উপলব্ধি করতে পারছেন। এই সরকার চায় একটি পরিচ্ছন্ন রাজ্য এবং একটি স্মার্ট শহর, তাই সরকার নিরন্তর কাজ করে চলছে। তবে সরকারের এই সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের মূল দায়িত্ব নাগরিকের। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার শুধুমাত্র আগরতলা শহরকেই নয়, রাজ্যের সবক’টি শহর এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে চলছে। ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৩টি পুকুরের সংস্কার সাধন ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরও ১৪টি পুকুরের কাজ হাতে নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ভট্টপুকুর বা মন্ত্রী পুকুরের অস্তিত্ব একসময় বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু বর্তমান সরকার জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে এরকম পুকুর তথা রাজ্যের বিভিন্ন ঐতিহ্যকে রক্ষা করে চলছে। তিনি বলেন, রাজ্যের ২০টি নগরশাসিত সংস্থার উন্নয়নে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১,১৪৭ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এবারের বাজেটে রাজ্যে ২টি ফ্লাইওভার গড়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। একটি আগরতলা এবং অপরটি উদয়পুরে নির্মাণ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আগরতলা মোটরস্ট্যান্ডে মাল্টিস্টোরিড পার্কিং, আগরতলা রিং রোড, ইউনিটি মল, গুর্খাবস্তিতে জি+১৪ অফিস বিল্ডিং, জিবি-তে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হসপিটাল, শহরে জল নিষ্কাশন প্রণালী ইত্যাদির উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।


মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিগত দিনে নাগেরজলা বাসস্ট্যান্ডের করুণ অবস্থা সম্পর্কে রাজ্যের মানুষ অবগত। আজকের নাগেরজলা বাসস্ট্যান্ড এলে বিগত দিনের সাথে জনগণ পার্থক্য পরখ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে জানে। বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিকশিত ভারত ২০৪৭ লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে বিকশিত ত্রিপুরা ২০৪৭ গঠনে এগিয়ে চলছে। ত্রিপুরা রাজ্য দেশের কোনও রাজ্য থেকে কোনও অংশে কম নয়। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও দেশের বিভিন্ন স্থানে বক্তব্য রাখার সময় ত্রিপুরার উন্নয়নের কথা তুলে ধরছেন। যা ত্রিপুরাবাসীর জন্য গর্বের বিষয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, এই সরকার মানুষের চাহিদার সম্পর্কে সচেতন। সরকারের একটাই লক্ষ্য উন্নয়ন। এই সরকার উন্নয়নের সাথে কোনও প্রকার আপোস করবে না। বর্তমান সরকার মানুষের প্রতি সংবেদনশীল, দায়িত্বশীল এবং কর্মক্ষম সরকার।

অনুষ্ঠানে পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার এবং উদ্যোগের অভাবে এই দুটি পুকুর মানুষ ব্যবহার করতে পারছিল না। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এবং আগরতলা পুরনিগমের সক্রিয় ভূমিকায় পুকুরগুলি এখন মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। সরকার আগরতলা শহর সহ সারা রাজ্যের মানুষের বিভিন্ন চাহিদা ও সমস্যাগুলিকে মূল্যায়নের মাধ্যমে নিরসনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরকম পুকুর সহ রাজ্যের সবকটি শহরকে সরকার সাজিয়ে তোলার উপর জোর দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আগরতলা পুরনিগমের কমিশনার ডি. কে. চাকমা। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ৩৩ নং ওয়ার্ডের কর্পোরেটর অভিজিৎ মল্লিক, ৪০ নং ওয়ার্ডের কর্পোরেটর সম্পা সরকার চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মেয়র মণিকা দাস দত্ত, ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের বোর্ড অব ডাইরেক্টর শ্যামল কুমার দেব প্রমুখ।
  উল্লেখ্য অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা নাগেরজলা পুকুর (ভট্ট পুকুর) এবং মিলনসংঘস্থিত পুকুরের (মন্ত্রী পুকুর) পরিদর্শন করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *