চিকিৎসকদের কথায়, এখনো পুলিশ কনস্টেবলের শারীরিক অবস্থা বিপদসীমার ঊর্ধ্বে নয়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করা হবে বহি: রাজ্যে।
।।আহত পুলিশ কনস্টেবল রাকেশ দেবনাথ।(ছবি – নিজস্ব)
বলেরোর ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে কনস্টেবল রাকেশ । রক্তক্ষরণ শুরু হয়। উপস্থিত টিএসআর জওয়ানরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমতলী থানা কর্তৃপক্ষকে অবগত করে। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় থানার আধিকারিকরা এবং তাকে নিয়ে যায় জিবি হাসপাতালে।
ডেস্ক রিপোর্টার,৬ ডিসেম্বর।। রাজধানীতে নাগরিকরা নয়, খোদ পুলিশ কর্মীদের নেই কোনো নিরাপত্তা।রাতের আধারে কর্তব্যরত এক পুলিশ কনস্টেবলকে পিষে দিয়েছে মাদক বোঝাই একটি গাড়ি। আহত পুলিশ কনস্টেবল রাকেশ দেবনাথ।সে এখন জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঘটনাস্থল আমতলী থানা এলাকার কেন্দ্রীয় বিশ্ব বিদ্যালয় সংলগ্ন জাতীয় সড়কে।ঘটনা গত ২৯ নভেম্বর রাতে।আমতলী থানার পুলিশ এখনো সন্ধান করছে গাড়িটিকে।কিন্তু পায় নি টিকির লাগল।এটাই কি রাত্রি কালীন শহরের নিরাপত্তার চিত্র? পুলিশ রহস্য জনক ভাবে চেপে গিয়েছে পুরো ঘটনা।
আমতলী থানার খবর অনুযায়ী, ঘটনার রাতে কনস্টেবল রাকেশ দেবনাথ সহ কয়েকজন টিএসআর কেন্দ্রীয় বিশ্ব বিদ্যালয় সংলগ্ন কালী মন্দিরের সামনে ডিউটিতে লাগালো হয়েছিলো। রাত ১১টা নাগাদ একটি বলেরো ট্রাক দ্রুত গতিতে আগরতলা থেকে বিশালগড়ের দিকে যাচ্ছিল। কনস্টেবল রাকেশের কাছে খবর ছিল বোলেরেতে আছে ফেনসিডিলের চালান। শহরের মহারাজগঞ্জ বাজার থেকে ফেনসিডিল বোঝাই করে গাড়িটি রওনা হয়েছিল বিশালগড়ের উদ্দেশ্যে।
।বলেরো গাড়ি (প্রতীকী ছবি)।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রাকেশ টিএসআর জওয়ানদের নিয়ে রাস্তায় এম্বুস পেতে বসে।গাড়িটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কালী মন্দিরের পাশে আসতেই রাকেশ চালককে থামার নির্দেশ দেন। কিন্তু বেপরোয়া বোলেরো ট্রাক রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা কনস্টেবল রাকেশ দেবনাথের নির্দেশ অমান্য করে তাকে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে যায় । বোলেরোর ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে কনস্টেবল রাকেশ । রক্তক্ষরণ শুরু হয়। উপস্থিত টিএসআর জওয়ানরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমতলী থানা কর্তৃপক্ষকে অবগত করে। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় থানার আধিকারিকরা এবং তাকে নিয়ে যায় জিবি হাসপাতালে।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, “পুলিশ কনস্টেবল রাকেশের মাথা ও বুকে প্রচন্ড আঘাত লেগেছে। তার ফুসফুসে জমে গিয়েছে রক্ত। জিবি হাসপাতালের করা হয়েছে তার অস্ত্রোপচার। চিকিৎসকদের কথায়, এখনো পুলিশ কনস্টেবলের শারীরিক অবস্থা বিপদসীমার ঊর্ধ্বে নয়। হয়তো বা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বহি: রাজ্যে রেফার করা হতে পারে।”
ত্রিপুরা রাজ্যে পুলিশ কর্মীদের খুন ও খুনের চেষ্টার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও বহুবার হয়েছে।
।।বিজ্ঞাপন।।
এই ঘটনার পর থেকে আমতলী থানার পুলিশ বোলেরো গাড়িটির সন্ধান শুরু করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গাড়ির টিকির নাগাল পায় নি। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা রাজ্যে পুলিশ কর্মীদের খুন ও খুনের চেষ্টার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও হয়েছে। ১৯৮৮- র জোট জামানায় আমতলীর এলাকায় খুন হয়েছিলেন পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর বাদল বিশ্বাস।
বিজ্ঞাপন(ICA/C-2726)
২০১৬ সালে বাম জামানায় আমতলী থানার তৎকালীন ওসি ইন্সপেক্টর প্রণব সেনগুপ্তকেও রাকেশের কায়দায় হত্যার চেষ্টা করেছিল মাদক কারবারিরা। মাদক বোঝাই একটি ক্রুইজার প্রণব সেনগুপ্তের উপর তুলে দিয়েছিল। তিনিও দীর্ঘ চিকিৎসার পর বেঁচে এসেছিলেন বরাত জুড়ে।
।।প্রণব সেনগুপ্ত।।
২০১৮ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর কলমচৌড়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর দুর্গাচরণ রাঙ্খলকেও গাজা বোঝাই গাড়ি চাপা দিয়ে খুন করেছিল। একই বছর মেলাঘর থানার পুলিশ কনস্টেবল সাবির আহমেদকে মাদক পাচারকারী বিজেপি নেতা প্রকাশ্যে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছিল। একটি ঘটনার পরও পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারে নি।
।।দূর্গা চরণ রাঙ্খল।।
তার ফল স্বরূপ মাদক কারবারিরা নির্ভয়ে আমতলী থানা কনস্টেবল রাকেশ দেবনাথকে গাড়ি দিয়ে চাপিয়ে চলে গেলেও পুলিশ ঘটনার ধাপা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।