হিংসার

“সাম্প্রদায়িক গুন্ডারা কেন গন্ডাছড়াকে  জতুগৃহ বানিয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর সাধারণ মানুষের কাছে  জলের মত পরিস্কার। গত ১২ জুলাই পরমেশ্বর রিয়াংয়ের মৃত্যুর খবর পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই কি সব দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়ে গিয়েছিল? না, প্রাপ্ত তথ্য বলছে অন্য কথা। “….

হিংসার
                              ।হিংসার রক্তিম আকাশ গণ্ডাছড়ায়।(ছবি – সংগৃহীত)

 

 


“হামলাকারীরা লুট করা সমস্ত জিনিস পত্র সহ গবাধি পশু গুলিকে নিয়ে রেখেছে স্থানীয় দুইটি রিয়াং শরণার্থী ক্যাম্পে। এখনো নাকি ক্যাম্প গুলিতে শোভা বর্ধন করছে বাঙালির ঘর থেকে লুট করে নেওয়া জিনিস পত্র।” 

ডেস্ক রিপোর্টার,২৪ জুলাই।।
              গন্ডাছড়াতে আক্রমণের ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এই ঘটনা পরমেশ্বর রিয়াংয়ের মৃত্যুর প্রতিশোধের স্পৃহা নয়,এটা ছিল শুধু মাত্র একটা অজুহাত।এই অজুহাতকে হাতিয়ার করেই দুষ্কৃতীরা সফল করেছে তাদের পূর্বের তৈরী করা ব্লু প্রিন্ট ।
ব্লু প্রিন্ট অনুযায়ী তারা সংঘবদ্ধ ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঙালি মহল্লায়। জনজাতি দুষ্কৃতীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি বাড়ি ঘরে লুটপাট চালানো।
সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে চিরতরে বাঙালি বিতরণের পথ সুগম করা।অন্তত সিন অফ ক্রাইম দেখে
এটাই বলছেন অপরাধ বিশ্লেষকরা।

হিংসার
                       ।।হিংসার ধ্বংসস্তূপ ।।(ছবি – নিজস্ব)

সাম্প্রদায়িক গুন্ডারা কেন গন্ডাছড়াকে  জতুগৃহ বানিয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর সাধারণ মানুষের কাছে  জলের মত পরিস্কার। গত ১২ জুলাই পরমেশ্বর রিয়াংয়ের মৃত্যুর খবর পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই কি সব দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়ে গিয়েছিল? না, প্রাপ্ত তথ্য বলছে অন্য কথা।

                                                        ।।বিজ্ঞাপন।।

পরমেশ্বর যখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তখনই এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে জনজাতিরা হামলার ছক কষে ছিলো। এবং তাদের মনে পোষে রাখা বিদ্বেষের ক্ষোভ উগলে দেওয়ার উপযুক্ত সুযোগও পেয়ে যায়।এই কারণেই গন্ডাছড়ার বাইরে থেকেও স্বজাতির লোকজনকে জড়ো করেছিলো তারা।  ঘটনার দিন সকাল থেকেই হামলাকারীদের অধিকাংশ অবস্থান করেছিলো দুইটি রিয়াং শরণার্থী ক্যাম্পে(Reang refugee camp) ।একটি ক্যাম্প অমরপুর – গন্ডাছড়া সড়কের বাবুসাই(Babusai)অঞ্চলে। অপর ক্যাম্প গন্ডাছড়া জগবন্ধু পাড়াতে(Jago Bondhu para।)  মিজোরাম থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা রিয়াংরা সংশ্লিষ্ট দুইটি ক্যাম্পের আবাসিক।অভিযোগ, এই ক্যাম্প গুলিতে বসেই আক্রমণের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছিলো হানাদার বাহিনী। তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত পাওয়া গিয়েছে ঘটনার পর পরই।

শরণার্থী ক্যাম্প
                                 ।।রিয়াং শরণার্থী ক্যাম্প।।(ফাইল ছবি)

গোটা ঘটনা পর্যবেক্ষনের পর উঠে আসা চিত্র বলছে, সাম্প্রদায়িক হামলাকারীরা প্রথমে বাঙালি মহল্লার প্রতিটি বাড়ির গেট সহ বাউন্ডারির বেড়া ভেঙ্গে দিয়েছিলো।এরপর তারা বাড়িতে প্রবেশ করে।
ঘরে থাকা আলমারি, শো-কেস, ট্র্যাংকের লকার
  ভাঙচুর করে। সংশ্লিষ্ট  আসবাব পত্রের মধ্যেই ছিলই মানুষের জামানো কষ্টার্জিত অর্থ, স্বর্ণালংকার। সহ প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র। হামলাকারীর দল প্রথমে বাঙালিদের সোনা – দানা হাতিয়ে নেয়।এরপর ঘরে থাকা দামী খাট, ফ্যান, ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিন সহ ব্যবহৃত জিনিস গুলি লুট করে নিয়ে যায়।

।।চুরমার বাড়ির গেট ও বাউন্ডারি বেড়া।।(ছবি – নিজস্ব)

আরো খবর পড়ুন

https://janatarmashal.com/tripura-news-biplab-is-in-love-with-pradyut-tripura-news-

পরের ধাপে দুষ্কৃতীরা হানা দেয় বাঙালি গৃহস্থের গোয়াল ঘর গুলিতে। গোয়ালে থাকা গরুর  গলার দড়ির খুলে ঘর থেকে বের করে দেয়।এবং লোকজন দিয়ে গরু গুলিকে নিয়ে যায় নিরাপদ জায়গাতে।একই ভাবে শুকর, ছাগল সহ হাস, মুরগিও নিয়ে যায় লুটেরার দল। ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের পর গৃহস্তের ঘরে থাকা সমস্ত শাড়ি, কাপড়, জামা,প্যান্ট জড়ো করে  আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলার ঘটনা যে পূর্বপরিকল্পিত ছিল তা প্রমাণিত হয় বাঙালির বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে।

।।প্রতীকী ছবি।।

কারণ সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতীরা বাঙালি মহল্লায় হামলা করতে আসার সময় হাতে করে নিয়ে গিয়েছিল পেট্রোল ভর্তি বোতল। হাতে থাকা পেট্রোলের বোতল থেকে পেট্রোল ছিটিয়ে বাঙালির বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলো।তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে কিছু কিছু  বাড়ির গোয়াল ঘর থেকে সব গরু বের করতে পারেনি। তখনই গোয়ালে থেকে যাওয়া অবশিষ্ট গরুগুলি তাদের দেওয়া আগুনে পুড়ে খাক হয়ে যায়।

।।গোয়াল ঘরে গো – মাতার নিথর দেহ।।(ছবি – নিজস্ব)

শেষ পর্যায়ে হামলাকারী জনজাতিদের রোষ আঁচড়ে পড়ে বাঙালিদের বাড়ি ঘরে থাকা অসহায় যানবাহন গুলির উপর। গাড়ি, বাইকের উপর পেট্রোল ছিটিয়ে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এবং মুহূর্তেই সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতিদের আস্ফালনে গোটা গন্ডাছড়া হয়ে ওঠে জতুগৃহ।

।।বিজ্ঞাপন।।

আরো খবর পড়ুন

https://x.com/janatarmashal24/status/1814656604832473572?t=gJ3bTKV1AL72GBLI7_n1Mw&s=19

তথ্য অনুযায়ী, হামলাকারীরা লুট করা সমস্ত জিনিস পত্র সহ গবাধি পশু গুলিকে নিয়ে রেখেছে স্থানীয় দুইটি রিয়াং শরণার্থী ক্যাম্পে। এখনো নাকি ক্যাম্প গুলিতে শোভা বর্ধন করছে বাঙালির ঘর থেকে লুট করে নেওয়া জিনিস পত্র।

।।হিংসার রোষ যানবাহনের উপর।।(ছবি – নিজস্ব)

অবাক করার মত ঘটনা, জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ শরণার্থী ক্যাম্প গুলিতে বসে বর্বরোচিত হামলার স্ক্রিপ্ট রচনা করলেও  ঘুনাক্ষরেও আঁচ করতে পারিনি রাজ্যের তথাকথিত নেটওয়ার্ক সমৃদ্ধ পুলিশ – গোয়েন্দা। তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীর দল কাতারে কাতারে হায়নার মতো বাঙালি বাড়ি ঘরে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
             

।।গণ্ডাছড়া থানা।।

বরং পুলিশের চোখের সামনেই একের পর এক নাশকতা মূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যায়। এটা নিঃসন্দেহে স্থানীয় পুলিশের ব্যর্থতা। পুলিশের এই ব্যর্থতার পেছনেও কি লুকিয়ে আছে আরো কোন বড় রহস্য? এই কোটি টাকার প্রশ্ন,আমজনতার। উত্তরের সন্ধান করছে “জনতার মশাল”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কি মিস করেছেন