ডেস্ক রিপোর্টার,, ১৭ মে।।
তিন বছরের শিশু কন্যাকে বিক্রি ও পাচারের অভিযোগ খোদ নরসিংগড় স্টেইট ফাউন্ডিং
হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তীর হোমের দায়িত্ব প্রাপ্ত মহিলা আধিকারিক নিবেদিতা দত্তের দিকে। নিজের কন্যা সন্তানকে ফিরে পেতে শিশুটির অসহায় মা দ্বারস্থ হয়েছে মেলাঘর থানায়। তিনি মামলা দায়ের করেছেন হোমের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির অফিসার নিবেদিতা দত্ত এবং তার স্বামী এডভোকেট অরিন্দম দেব সহ হোমের প্রাক্তন সুপার ভারতী কপালির বিরুদ্ধে।
মেলাঘর থানার অন্তর্গত বানিয়াছড়া এলাকার এক দরিদ্র মায়ের তিন কন্যা সন্তান।তাদের মধ্যে প্রথম দুইজন থাকে নরসিংগড় হোমে। অর্থিক অনটনের কারণে তৃতীয় কন্যা সন্তানটিকেও হোমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সেই মোতাবেক অসহায় মা যোগাযোগ করেন নরসিংগড় স্টেইট ফাউন্ডিং হোমের ওয়েলফেয়ার অফিসার নিবেদিতা দত্তের সঙ্গে। এই মহিলা আধিকারিকও তাতে সায় দেন। জানিয়েছেন অসহায় মা।
মহিলার কথা অনুযায়ী, নিবেদিতা দত্ত তাকে ফোন করে জানিয়ে দেন শিশু কন্যাটিকে নিয়ে আগরতলা কোর্ট চত্বরে আসার জন্য। নিবেদিতা দত্তের কথামতো মহিলা তার বাচ্চাকে নিয়ে চলে আসেন আগরতলা আদালতে। এখানে উপস্থিত ছিলেন খোদ নিবেদিতা দত্ত তার আইনজীবী স্বামী অরিন্দম দেব ও হোমের প্রাক্তন সুপার ভারতী কপালি। মহিলা জানিয়েছেন, আদালতে আসার পর নিবেদিতার দত্ত একটি কাগজ তার সামনে নিয়ে আসেন এবং তাতে স্বাক্ষর করতে বলেন। হোমের মহিলা আধিকারিকের কথার উপর আস্থা রেখে তিনি কাগজটিতে স্বাক্ষর করেন। এরপর তারা শিশুটিকে নিয়ে যায়।
মহিলার বক্তব্য অনুযায়ী কিছুদিন পর তিনি হোমে যান আদরের সন্তানকে দেখতে কিন্তু এখানে যাওয়ার পরেই তার সঙ্গে বদ আচরণ করতে শুরু করেন ঘুমের মহিলা আধিকারি নিবেদিতা দত্ত। তিনি শিশুটিকে তার মায়ের কাছে আনতে রাজি হননি। বরং অসহায় মাকে রীতিমতো ঝাঁটাপেটা করে হোম থেকে বের করে দেন। নিবেদিতা জানিয়ে দেন, ” শিশুটি আর কমে নেই। তাকে দত্তক দেওয়া হয়েছে। এ কথা শুনে অসহায় মায়ের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।” অসহায় মা চলে আসেন তার বাড়িতে।
শেষ পর্যন্ত এই ঘটনা জানতে পারেসিপাহীজলা জেলার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির লোকজন। তারা কথা বলেন মহিলার সঙ্গে। অসহায় মায়ের বক্তব্য অনুযায়ী সিপাহীজলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্যরা ছুটে আসেন নরসিংগড় হোমে। তারা শিশুটির খোঁজ করেন। কিন্তু হোমের মধ্যে শিশুর কোনো হদিশ পাওয়া যায়নি। । নরসিংগড় হোমের ওয়েলফেয়ার আধিকারিক নিবেদিতা দত্ত ও হোমের প্রাক্তন সুপার অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন।এরপরই তাদের কাছে গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। শিশু বিক্রি ও পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সিপাহীজলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির পক্ষ থেকে গোটা ঘটনা জানানো হয় প্রশাসনকে। অসহায় মা মেলাঘর থানায় লিখিত মামলা দায়ের করেন। তদন্তের স্বার্থে মেলাঘর থানা কর্তৃপক্ষ মামলাটি স্থানান্তরিত করে রাজধানীর পশ্চিম থানায়। ঘটনারও নেপথ্যে থাকার রহস্য উন্মোচনের জন্য তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট শিশু বিক্রি ও পাচারকার্যে সরাসরি জড়িয়ে যাচ্ছে সরকারি হোমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা। তারা নিজেরাই অসহায় দরিদ্র মা-বাবাদের অজ্ঞাতসারে তাদের সন্তানদের বিক্রি করে দিচ্ছে। অসহায় মা- বাবাদের ভুল বুঝিয়ে শিশুদের দত্তকও দিয়ে দিচ্ছে হোমের লোকজন। এটা কি বিনা স্বার্থে? নিশ্চয়ই না। নেপথ্যে চলে মোটা অংকের খেলা। এটা মস্ত বড় অপরাধ। এখন তদন্তকারী পুলিশ হোমের আধিকারিক নিবেদিতা দত্তের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে? পুলিশ কি পারবে অসহায় মায়ের কোলে তার শিশু কন্যাকে তুলে দিতে? এই প্রশ্ন এখন ঘটছে জনমনে।
#Tripura # Agt # Child# t@rafficking#JM
