স্বাধীন ভারতে এখনো পরাধীন প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা পর্যন্ত নেই গ্ৰামবাসীদের। এতে তারা একপ্রকার যাযাবরের মতো জীবন যাপন করছেন ।এমন চরম দূর্দশার করুন চিত্রের সন্ধান পাওয়া গেলো উত্তর ত্রিপুরার কদমতলা পূর্ব চুরাইবাড়ি পঞ্চায়েতের নেতাজী পাড়াতে ।
রেল রাস্তার উপর দিয়ে হেঁটে জল সংগ্রহ করছে মহিলারা।(ছবি – নিজস্ব)
রেল ট্র্যাক তাদের চলাফেরার একমাত্র রাস্তা হওয়াতে বছর ভর গ্রামে থাকে গবাদি পশুর মৃত্যুর মিছিল।
গ্রামবাসীরা জনিয়েছেন, রাস্তার দাবিতে স্থানীয় পঞ্চায়েত,ব্লক এমনকি সিএম হেল্প লাইনে আবেদন জানিয়েও কোনো কোনো সুরাহা পায় নি তাঁরা। সমস্যা সেই তিমিরেই।গ্রামবাসীদের কথায়, রাস্তা না থাকার কারণে জীবন ঝুঁকি নিয়ে রেল ট্র্যাকের উপর দিয়ে তাদের চলাফেরা করতে হয়। এটা নিত্য দিনের ঘটনা। হাট – বাজার থেকে স্কুল, কলেজ হাসপাতাল সহ নিত্য চলাফেরার একমাত্র পথ রেল ট্র্যাক। আক্ষেপ করে নেতাজী পাড়ার গ্রামবাসীরা বলেন, ” রেল ট্র্যাক তাদের চলাফেরার একমাত্র রাস্তা হওয়াতে বছর ভর গ্রামে থাকে গবাদি পশুর মৃত্যুর মিছিল।
।।বিজ্ঞাপন।।
নেতাজি পাড়ার দুই শতাধিক পরিবারের কপালে জুটবে পায়ে হাঁটার রাস্তা?
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, রেলের জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা তৈরিতে রয়েছে নানা জটিলতা। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে এখনও কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়।তাহলে কি নেতাজি পাড়ার দুই শতাধিক পরিবারের কপালে জুটবে পায়ে হাঁটার রাস্তা? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই হলফ করে দিতে পারবে না কেউ।
রাস্তা নির্মাণের দাবিতে গ্রামবাসীরা একাধিকবার স্হানীয় পঞ্চায়েত, ব্লক আধিকারিকদের দরজায় ধর্না দিয়েছে। তারা একই সমস্যার কথা জানিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হেল্প লাইন নম্বরেও।বাসিন্দাদের দাবি, পাশের গ্রামে রেলের জায়গা দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তাদের গ্রামের রাস্তার ক্ষেত্রে নানান জটিলতার কথা তুলে ধরছেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের দণ্ডমুন্ডের কর্তারা।
।।বিজ্ঞাপন।।
স্মৃতি রোমন্থন করে গোপাল বাবু বলেন, দু’বছর পূর্বে তিনি ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন গ্রামবাসী তাকে কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গ্ৰামের প্রবীণ নাগরিক গোপাল কৃষ্ণ দেব জনিয়েছেন , তাদের বাড়ি থেকে বেরোনোর কোনো রাস্তা নেই। গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলে কিংবা গ্রামে আগুন লাগলে রাস্তা না থাকায় গ্রামে অগ্নিনির্বাপক দফতরের গাড়ি পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে না।তাতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। স্মৃতি রোমন্থন করে গোপাল বাবু বলেন, দু’বছর পূর্বে তিনি ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন গ্রামবাসী তাকে কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
।গ্রামের মধ্যেই রেলওয়ের সীমানা।
প্রতিটি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কিন্তু তারা বঞ্চিত যাতায়াতের অধিকার থেকে।
চোখে মুখে এক রাশ আতঙ্ক নিয়ে গ্রামবাসীরা বলেন, বর্তমানে ইলেকট্রিক ট্রেন চালুর তোড়জোড় চলছে।ইলেকট্রিক ট্রেন চালু হলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। প্রীতি দেব নামে এক মহিলা গ্রামবাসীর কথায়, তারা প্রতিটি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কিন্তু তারা বঞ্চিত যাতায়াতের অধিকার থেকে। গ্রামবাসীদের দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী উদ্যোগ নিলে তাদের রাস্তার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে রাস্তা না কারণে তাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা আজও পাহাড় সমান। তাই মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমস্যার সমাধান করার জন্য গ্রামবাসীরা কাতর অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহার কাছে।