বৃদ্ধ অঞ্জন চক্রবর্তীর অভিযোগ, তার ছেলে ও ছেলের বউ যৌথভাবে তাদের উপর হামলা করে নিয়মিত। উভয়েই থাকেন নেশাগ্রস্ত অবস্থায়। প্রায় প্রতিদিন এই ঝামেলার পর বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় অভিষেক ও তার স্ত্রী। অঞ্জন চক্রবর্তীর বৃদ্ধা স্ত্রীর গলায় উঠে এলো তার পুত্র ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে থাকা অত্যাচারের উপাখ্যান।
জন্ম দাতা পিতা ও জন্ম ধাত্রী মাতা হয়ে উঠেন সংসারের বোঝা।
কৈলাসহর ডেস্ক,২১ মে।।
পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম পিতাহি পরমন্তপঃ।
পিতাহি প্রীতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্বদেবতা।
এর অর্থ হচ্ছে.-
“পিতা স্বর্গ, পিতাই ধর্ম, পিতাই পরম তপস্যা। পিতাকে খুশি করলে সকল দেবতা খুশি হন।”
কিন্তু বর্তমান সমাজে বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় সন্তানদের কাছে বৃদ্ধ পিতা ও মাতা গুরুত্বহীন। জন্ম দাতা পিতা ও জন্ম ধাত্রী মাতা হয়ে উঠেন সংসারের বোঝা। বর্তমান সমাজের ক্যানভাসে ভেসে উঠা এই কুৎসিত ছবিটার বাস্তবরূপ খুঁজে পাওয়া গেলো কৈলাসহরের পাইতুর বাজারে।

পাইতুর বাজার এলাকায় প্রবীণ বাসিন্দা অঞ্জন চক্রবর্তী। সঙ্গে আছেন তার বৃদ্ধা স্ত্রী।তাদের একমাত্র আদরের পুত্র অভিষেক চক্রবর্তী। কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি অভিষেক চক্রবর্তীর কাছে আজ তার পিতা-মাতা হয়ে উঠেছেন বোঝা। তা বললেও বোধ হয় ভুল হবে, কারণ অভিষেক তার পিতামাতার সঙ্গে যে সমস্ত আচরণ করছেন তা একজন শত্রুও তার প্রতিপক্ষ শত্রুর সঙ্গে করেন না। গোটা সংসারে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছেন চক্রবর্তী দম্পতির পুত্রবধূ।

অঞ্জন চক্রবর্তী পুত্রবধূ অবশ্যই নিজেকে দিয়েছেন দারাজ সার্টিফিকেট ।তিনি বলছেন,বিয়ের পর থেকেই দেখছেন তার স্বামী ও শ্বশুরের মধ্যে ঝামেলা। এখনো তা অব্যাহত। পারিবারিক ঝামেলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। পুত্রবধূর পাল্টা অভিযোগ, শ্বশুর – শাশুড়ি তাকে মারধর করেন।
প্রতিবেশীদের অভিযোগের আঙ্গুল অভিষেক চক্রবর্তী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেই।

প্রতিবেশী এক যুবক সরাসরি অভিযোগ তোলেন অঞ্জন চক্রবর্তীর ছেলে অভিষেক চক্রবর্তী ও তার স্ত্রীর দিকে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, অভিষেক ও তার স্ত্রী নিয়ম করেই পিতা-মাতার সঙ্গে অশান্তি করেন। প্রায় সময়ই তাদেরকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন ।এই নিয়ে বহুবার বিচারও হয়েছে। কিন্তু কিছুই হয়নি।
আসলে সন্তানের সমস্ত অত্যাচারও যেন মুখ বুঝে সহ্য করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন অভাগা – অভাগী মা – বাবারা।
শেষ পর্যন্ত পাইতুর বাজার অঞ্চলের লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে কৈলাসহর থানা পুলিশকে তলব করেন তারা পুলিশের হাতে তুলে দেন অভিযুক্ত পুত্র অভিষেক চক্রবর্তীকে। অভিষেক চক্রবর্তীকে আইনের কাঠগড়ায় টেনে নিতে পুলিশের কাছে অনেক বিধান রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশ কি পারবে? কারণ কখনো কখনো মা-বাবা অপত্য স্নেহের কারণে পাষণ্ড ছেলেদের আইনের রাডার থেকে নিয়ে আসেন নিজেরাই, তাও আবার মুচলেখা দিয়ে। আসলে সন্তানের সমস্ত অত্যাচারও যেন মুখ বুঝে সহ্য করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন অভাগা – অভাগী মা – বাবারা। এটাই আদরের সন্তানের সঙ্গে মা – বাবার নাড়ির টান।
#tripura #kls # father # mother #torture #police#JanatarMashal।।।।