চুরাইবাড়ি ডেস্ক,৭,জুলাই।।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে অত্যাচারিত হয়ে থাকেন। কিন্তু ব্যতিক্রমও রয়েছে। নারী স্বাধীনতার যাঁতাকলে পড়ে অথৈ জলে হাবুডাবু করে পুরুষও। গোটা রাজ্য জুড়ে এমন ঘটনার বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে। অর্থাৎ পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী দ্বারা পুরুষও অত্যাচারিত হয়ে থাকে। এর জ্বলন্ত দৃষ্টান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে উত্তর জেলার কদমতলাতে। মামলার জল গড়িয়েছে থানা থেকে আদালত পর্যন্ত। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, কবে আনুষ্ঠানিকভাবে হবে বিবাহ বিচ্ছেদ?
উত্তর জেলার কদমতলা পঞ্চায়েতের ৬নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমিতাভ নাথের সঙ্গে তার পাশের ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুভাষ নাথের মেয়ে পারমিতা নাথের ভালবাসার সম্পর্ক ছিলো। শেষে ২০২১ সালের ৫ মার্চ হিন্দু রীতি মেনে দুইজনে বিয়ে করেন। স্বামী অমিতাভ নাথ জানিয়েছেন, বিয়ের প্রথম বছর স্ত্রীকে নিয়ে সুখের শান্তিতেই সংসার করেন। তার উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী পারমিতা নাথ ফিজিওথেরাপিস্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকেন। স্ত্রী পারমিতা তার অধরা স্বপ্নের কথা জানান স্বামীকে। স্ত্রীর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে রাজী হন অমিতাভ। সেই মোতাবেক পারমিতাকে ফিজিওথেরাপিস্ট বানানোর জন্য আগরতলার একটি কলেজে ভর্তি করিয়ে দেন। কোর্স শেষে ইন্টারসিপ করার জন্য অমিতাভ ও তার স্ত্রীকে পাঠিয়ে দেন কলকাতায়। ইন্টারসিপ শেষ করে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চাকরিও বাগিয়ে নেন পারমিতা। তারপরেই নাকি বাঁধে অমিতাভ’র সংসারে বিপত্তি।
অমিতাভের অভিযোগ, কলকাতার বেসরকারি নার্সিংহোমে চাকরি পাওয়ার পর পারমিতা আর বাড়িতে ফিরে আসতে চান নি। স্বামীর সঙ্গে সমস্ত রকমের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। বাধ্য হয়ে স্ত্রীর জন্য কলকাতায় ছুটে যান অমিতাভ। সেখানে গিয়েও তিনি প্রত্যাখিত হন স্ত্রীর ভালোবাসা থেকে। অমিতাভের কথায়, স্ত্রী পারমিতা সরাসরি তাকে বিবাহ বিচ্ছেদের অফার দেয়। প্রাথমিকভাবে অমিতাভ তা মানতে রাজি হয়নি। অবশ্যই শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর কথাতেই মাথা নত করতে বাধ্য হন। সংসার টিকিয়ে রাখতে সামাজিক ভাবেও বহু মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরেছেন অমিতাভ। কিন্তু কোথায় তিনি সুবিচার পাননি। কারণ স্ত্রী পারমিতা ও তার মা-বাবা ছিলেন নাছুর বাধা। তারাও নাকি চাইছেন মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ।
অবশেষে আদালতে ফাইল হয় বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা। ইতিমধ্যেই মামলার তিনটি শুনানি শেষ হয়।গত ৪ জুলাই আদালত থেকে ফিরে এসে সন্ধ্যায় পারমিতা নাথ তার স্বামী অমিতাভের বিরুদ্ধে থানায় শারীরিক নির্যাতনের মামলা দায়ের করে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে মুখ দেখাদেখিও নেই পারমিতার। তারপরও কেন এই মামলা? প্রশ্ন তুলছেন নির্যাতিত স্বামী অমিতাভ। অবশ্যই একদিন পর কদমতলা থানায় অমিতাভ তার স্ত্রী পারমিতা নাথ ও শ্বশুর সুভাষ নাথের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেন।
অমিতাভের শ্বশুর সুভাষ নাথ শাসক দলের একজন নেতা। কদমতলা মন্ডলের ওবিসি মোর্চার সভাপতি। সুভাষ নাথের ঘরে এটাই কি নারীর “স্বশক্তিকরণ”- র নিদর্শন। প্রশ্ন তুলছেন মানুষ।
