রাজ্য রাজনীতির ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় দেড় – দুই দশক পর পরেই জনজাতি নেতৃত্ব বিধানসভায় তাদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার দাবিকে সামনে নিয়ে আসেন।
।।ত্রিপুরার মাটিতে একেই বৃন্তের তিনটি ফুল।।
“কেন্দ্রীয় সরকার যদি রাজ্য বিধানসভায় জনজাতিদের জন্য আরো কিছু আসন বৃদ্ধি করে তাহলে এটা হবে মোদী – অমিত শাহের ঐতিহাসিক ভুল। তখন রাজ্যের বাঙালি সমাজ বিজেপিকেও ছুড়ে ফেলে দেবে। তাতে অবশ্যই খুশি হবে রাজ্যে রাজনীতির দুই মিত্র শক্তি কংগ্রেস – সিপিআইএম। কিন্তু, না। তাদেরও বিশেষ কোনো লাভ হবে না।”
ডেস্ক রিপোর্টার, ১১ নভেম্বর।। অতি সম্প্রতি প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন তার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ” চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তার বৈঠক।” এই বৈঠকে তিনি রাজ্য বিধানসভার ২৫টি আসন জনজাতিদের জন্য বরাদ্দ করার দাবি জানাবেন। এবং এই সমস্ত দাবির বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও দিয়েছেন। প্রদ্যুৎ কিশোর আত্ম বিশ্বাসী কেন্দ্রীয় সরকার তার দাবিকে মান্যতা দেবে।
শাসক দল বিজেপি সহ দুই বিরোধী দল কংগ্রেস – সিপিআইএম উভয়েই প্রদ্যুৎ তোয়াজে ব্যস্ত ।
রাজ্য রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে রাজনীতিকরা বলছেন, যদি কেন্দ্রীয় সরকার প্রদ্যুৎ কিশোরের দাবিকে মান্যতা দেয়,তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। হয়তো বা ২৫- র পরিবর্তে ২২-২৩ হতে পারে।কারণ রাজ্য রাজনীতির ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় দেড় – দুই দশক পর পরেই জনজাতি নেতৃত্ব বিধানসভায় তাদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার দাবিকে সামনে নিয়ে এসেছিলেন। প্রতি বারই তারা সফল হয়েছেন। শ্যামা চরন থেকে বিজয় রাঙ্খল তারা প্রত্যেকেই এই কাজ করেছেন। আর এখন প্রদ্যুৎ কিশোর। রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রদ্যুৎ এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। শাসক দল বিজেপি সহ দুই বিরোধী দল কংগ্রেস – সিপিআইএম উভয়েই প্রদ্যুৎ তোয়াজে ব্যস্ত ।
।।কোথায় যাবেন বাঙালিরা।।
সাব্রুম থেকে ধর্মনগর সর্বত্র আন্দোলনের সলতে পাকাচ্ছে বাঙালি সমাজ!
প্রদ্যুৎ কিশোরের এই দাবি সামনে আসার পর রাজ্যের বৃহত্তর জন গোষ্ঠী বাঙালিদের মধ্যেও বয়ে চলছে চোরা স্রোত। বাঙালি সমাজের বক্তব্য, জনজাতিদের আসন বৃদ্ধি মানেই বাঙালি সম্প্রদায়ের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এটা কেন মানবে বাঙালিরা? সাব্রুম থেকে ধর্মনগর সর্বত্র আন্দোলনের সলতে পাকাচ্ছে বাঙালি সমাজ। তবে গকুলে।
বামেদের মতো বিজেপিও যদি ভুল করে বাঙালিদের বিরুদ্ধে তাদের প্রশাসনিক অস্ত্রকে লেলিয়ে দেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হতে পারে!
রাজনীতিকদের কথায়, বাঙালি সম্প্রদায় গর্ত থেকে বেরিয়ে আসলে এটা কোনো ভাবেই শাসক দল বিজেপির জন্য মঙ্গল দায়ক হবে না। গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তারাও আন্দোলিত করে তুলবে গোটা রাজ্যকে। তখন বিজেপির পক্ষে সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠবে। এই পরিস্থিতিতে বামেদের মতো বিজেপিও যদি ভুল করে বাঙালিদের বিরুদ্ধে তাদের প্রশাসনিক অস্ত্রকে লেলিয়ে দেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হতে পারে।কারণ বিজেপিকে ক্ষমতায় রেখেছে বাঙালিরা।পরিষ্কার করে বললে,সনাতনী বাঙালিরা। তখন তারাও ছেড়ে কথা বলবে না।
।এই সনাতনী বাঙালিরাই বিজেপিকে ক্ষমতায় রেখেছে।।
রাজনীতির প্রাজ্ঞরা হলফ করেই বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি রাজ্য বিধানসভায় জনজাতিদের জন্য আরো কিছু আসন বৃদ্ধি করে তাহলে এটা হবে মোদী – অমিত শাহের ঐতিহাসিক ভুল। তখন রাজ্যের বাঙালি সমাজ বিজেপিকেও ছুড়ে ফেলে দেবে। তাতে অবশ্যই খুশি হবে রাজ্যে রাজনীতির দুই মিত্র শক্তি কংগ্রেস – সিপিআইএম। কিন্তু, না। তাদেরও বিশেষ কোনো লাভ হবে না।
বাঙালি ভোট সরে গেলে কংগ্রেস – সিপিআইএম রাজনৈতিক ভাবে পরনের নেংটিও খুঁজে পাবেন না।
বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের যুক্তি, জনজাতিদের আসন বৃদ্ধি যেন না হয়, তা নিয়ে আজ পর্যন্ত মুখ খোলেন নি বাম – কংগ্রেস নেতৃত্ব। তারাও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আজও জনজাতি ভোটের মোহে আচ্ছন্ন। বাঙালিদের আজকের দিনে করুন দশার জন্য কোনো ভাবেই দায় এড়াতে পারবেন না কংগ্রেস- সিপিআইএমের ধান্দাবাজ নেতৃত্ব। হয়তো বা নির্লজ্জের মতো সুদীপ রায় বর্মন ও মানিক সরকার – জিতেন্দ্র চৌধুরীরা ভুলেই গেছেন বাঙালিদের সৌজন্যেই ভোট ময়দানে তাদের পরনে রাজনীতির গামছাটা আজও আছে।এটাকে তারা আচ্ছাদন হিসাবে ব্যবহার করছেন।বাঙালি ভোট সরে গেলে কংগ্রেস – সিপিআইএম রাজনৈতিক ভাবে পরনের নেংটিও খুঁজে পাবেন না।
বাঙালিরাও বিধানসভায় চাইছেন নিজেদের প্রতিনিধি।জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের আর তারা বিশ্বাস করছেন না।
পরিশেষে বলা যায়,রাজ্যের বাঙালি সম্প্রদায়ের জন্য কথা বলার কোনো রাজনৈতিক দল নেই। বাঙালিদের চোখে বিজেপি – কংগ্রেস ও সিপিআইএম সবাই একেই বৃন্তের তিনটি ফুল।তাহলে বাঙালিরা বিজেপির বিকল্প ভেবে কংগ্রেস বা সিপিআইএমকে ভোট দেবেন কেন? তারাও চাইবেন বিধানসভায় নিজেদের প্রতিনিধি। এটাই স্বাভাবিক।রাজ্য বিধানসভায় উপজাতি সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে প্রদ্যুৎ কোন পথে হাঁটতে চাইছেন? সেটা কিন্তু বাঙালিদের কাছেও দিনের আলো মতো পরিষ্কার।