Insurgency।Bangladesh।TNV।NLFT।ATTF।Janatar Mashal।

।।সাংবাদিক বৈঠকে জঙ্গি নেতৃত্ব।।




শাণিত অস্ত্র দিয়ে তারা ঝরিয়ে ছিলো রক্ত।দশকের পর দশক রাজ্যের বুকে রক্তের হোলি খেলেছিলো জনজাতি যুবকরা। তাদের উদ্দেশ্য একই ছিলো।

৮০ সালের জুনের দাঙ্গায় টিএনভি বাঙালি নিধন যজ্ঞে বড় ভূমিকা পালন করেছিলো। অন্তত ইতিহাসের তথ্য সেই দিকেই ইঙ্গিত করে। দীর্ঘ ১০ বছর বিজয় রাঙ্খল জঙ্গিপনার নামে বাঙালির রক্তে খেলেছিলেন হোলি।

ডেস্ক রিপোর্টার, ১৬ সেপ্টেম্বর।।
                  স্বাধীন দেশ, স্বাধীন ত্রিপুরা, পৃথক রাজ্য, তিপ্রাল্যান্ড ও গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড। সব এখন বিষবাঁও জলে। স্বপ্নের ফেরিওয়ালারা আছেন রাজনীতির বৃত্তে।
                স্বাধীন দেশ – স্বাধীন ত্রিপুরার স্বপ্নে বিভোর হয়ে বছরের পর বছর জনজাতি সম্প্রদায়ের যুবকরা হাতে তুলে নিয়েছিল অস্ত্র। শাণিত অস্ত্র দিয়ে তারা ঝরিয়ে ছিলো রক্ত।দশকের পর দশক রাজ্যের বুকে রক্তের হোলি খেলেছিলো জনজাতি যুবকরা। তাদের উদ্দেশ্য একই ছিলো। অপরাধের ধরণও এক। শুধু চেহারা ভিন্ন। তফাৎ বলতে এই টুকু।

বিজয় রাঙ্খল

ত্রিপুরা ন্যাশনাল ভলেন্টিয়ারস 

__________________________

  ১৯৭৮ সালে প্রাক্তন জঙ্গি নেতা তথা হালের তিপ্রামথার সভাপতি বিজয় রাঙ্খলের হাত ধরে রাজ্যের বুকে জন্ম জঙ্গি সংগঠন ত্রিপুরা ন্যাশনাল ভলেন্টিয়ারস। সংক্ষেপে যার নাম টিএনভি। স্বাধীন ত্রিপুরার স্বপ্ন দেখিয়ে বিজয় রাঙ্খল প্রচুর যুবকদের নিয়ে গিয়েছিলেন জঙ্গলে। ৮০ সালের জুনের দাঙ্গায় টিএনভি বাঙালি নিধন যজ্ঞে বড় ভূমিকা পালন করেছিলো। অন্তত ইতিহাসের তথ্য সেই দিকেই ইঙ্গিত করে। দীর্ঘ ১০ বছর বিজয় রাঙ্খল জঙ্গিপনার নামে বাঙালির রক্তে খেলেছিলেন হোলি। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৮ সালে তৎকালীন ভারতের প্রধান মন্ত্রী রাজীব গান্ধীর সঙ্গে বিজয় রাঙ্খল অস্ত্র বিরতি ঘোষণা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। শেষ হয় ত্রিপুরা ন্যাশনাল ভলেন্টিয়ারস(টিএনভি)- র বাঙালি বিতরণের উপাখ্যান।

রাজ্যের মানুষ ও প্রশাসন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো টিএনভি- র অস্ত্র বিরতির পর।কিন্তু না, মানুষের স্বস্তির নিঃশ্বাস স্থায়ী হয় নি। কারণ জঙ্গি বাণিজ্যের মতো লাভ জনক ব্যবসা কি হাত ছাড়া করা যায়? কোনো ভাবেই না।রাজ্যে জঙ্গিপনা জিইয়ে রাখলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নেতাদের  ব্যবসা – বাণিজ্য তুঙ্গে থাকে। এই কায়েমী স্বার্থের জন্য প্রয়োজন হয় আরো একটি জঙ্গি দলের।

ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা

_________________________________’

বিজয় রাঙ্খলের অবসর গ্রহণের পর জঙ্গি ব্যবসার ব্যাটন হাতে তুলে নেন বিশ্বমোহন দেববর্মা। অর্থাৎ পুরনো জিনিস নতুন পাত্রে রাখলে যা হয়। বিজয় রাঙ্খল যেখানে শেষ করেছিলেন, ঠিক সেখান থেকে শুরু করেছিলেন বিশ্বমোহন দেববর্মা। বিজয় রাঙ্খলের টিএনভি’ র অস্ত্র বিরতির এক বছরের মধ্যেই বিশ্বমোহনের হাত ধরে জন্ম নেয় ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা অর্থাৎ এনএলএফটি।১৯৮৯ সালে এনএলএফটি’ র জন্ম দিয়ে ফের গোটা রাজ্যে ত্রাস সৃষ্টি করে বিশ্ব মোহন গোষ্ঠী।

।।বিশ্বমোহন দেববর্মা।।

গোটা রাজ্যকে রক্তস্নাত করেছিল বিশ্বমোহন।

গোটা রাজ্যকে রক্তস্নাত করেছিল বিশ্বমোহন। বিজয়  রাঙ্খলের কায়দায় স্বাধীন ত্রিপুরার স্বপ্ন দেখিয়ে সহজ সরল জনজাতি যুবকদের নিজের দলের সামিল করেছিল বিশ্ব মোহন। বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ঘাঁটি গেড়ে ত্রিপুরায় একের পর এক হামলা সংঘটিত করেছিল এনএলএফটি। তাদের বন্দুকের নলের মুখে ছিলো বাঙালি হত্যার বীজ। টানা ৩৫ বছর ধরে বিশ্বমোহন রক্ত ঝরিয়েছে রাজ্যে। খুন,অপহরণ, তোলাবাজি ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। সম্প্রতি বিশ্বমোহন দেববর্মা তার গ্রুপের সদস্যদের নিয়ে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে অস্ত্র বিরতি ঘোষণা করে।

আরো খবর পড়ুন।https://janatarmashal.com/tripura-news-crime-branch-investigating-the-case-of-12-july-incident-in-gandachhara-tripura-news

*অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স

___________________________

            রাজ্যের জঙ্গলমহলে বিশ্ব মোহন যখন মধ্য গগনে ঠিক তখনই আরো এক যুবক স্বাধীন ত্রিপুরার স্বপ্নে বিভোর হয়ে গঠন করেছিলেন আরো একটি নতুন জঙ্গি দল । যার নাম হল অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স (এটিটিফ )।  এই দলের সুপ্রিমো ছিলেন রঞ্জিত দেববর্মা। যিনি বর্তমানে  তিপ্রামথার বিধায়ক। ১৯৯০- র ১১জুলাই রঞ্জিত দেববর্মা হল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্সের জন্ম দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক মহলে কথিত, রঞ্জিত দেববর্মাকে দিয়ে এটিটিএফ তৈরীর পেছনে বামেদের হাত রয়েছে।

।।রঞ্জিত দেববর্মা।।

তৎকালীন সময়ে বিশ্বমোহন ছিলেন কংগ্রেসের পৃষ্ঠপোষক। রাজনৈতিকভাবে এনএলএফটিকে জব্দ করতেই নাকি বামেরা এটিটিএফের জন্ম দিয়েছিল।

তৎকালীন সময়ে বিশ্বমোহন ছিলেন কংগ্রেসের পৃষ্ঠপোষক। রাজনৈতিকভাবে এনএলএফটিকে জব্দ করতেই নাকি বামেরা এটিটিএফের জন্ম দিয়েছিল। এই অভিযোগ তুলে থাকেন রাজনীতিকরা।২৩- র বিধানসভা নির্বাচনে প্রাকলগ্নে এই অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। রঞ্জিত দেববর্মা বছর আগেই সীমান্ত টপকিয়ে এপারে চলে এসেছিলেন ।তাকে গ্রেফতার করেছিল বিএসএফ ।পরবর্তী সময়ে বেশ কিছুদিন জেলে থাকার পর তিনি মুক্তি পান। এরপর যোগ দিয়েছিলেন তিপ্রামথাতে। বর্তমানে তিনি মথার বিধায়ক।

।।বিজ্ঞাপন।।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চুক্তি স্বাক্ষর করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে এন এল এফ টির সুপ্রিমো বিশ্ব মোহন দেববর্মা সহ এটিটিএফের অন্যান্য জঙ্গি নেতারা। তাদের জন্য আড়াইশ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নিঃসন্দেহে জঙ্গিদের অস্ত্র বিরতি সরকার এবং রাজ্যের মানুষের জন্য বড় প্রাপ্তি। বৈরীরা তাদের ভুল সংশোধন করে ফিরে এসেছেন স্বাভাবিক জীবনে।  কিন্তু টিএনভি পর এন এল এফ টি এবং এটিটিএফের মতো ফের নতুন করে কি বৈরী দল আবার জন্ম নেবে? একথা কেউ হলফ করে বলতে পারছে না।


আরো খবর পড়ুন

https://x.com/janatarmashal24/status/1834846775607427197?t=9i135ji0GQl0R-lb5Yr8ag&s=19

এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আছে ভারত বিরোধী ইউনুস সরকার। সঙ্গে আছে পাকিস্তান ও চীনের মত আন্তর্জাতিক শক্তি। তারা বরাবর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অশান্তি টিকিয়ে রাখতে চাইছে। কেন্দ্রীয় সরকারের আড়াইশো কোটি টাকার প্যাকেজের কিছু অংশ ব্যয় করে ফের কি আবারো এক নতুন জঙ্গি দল মাথাচাড়া দেবে রাজ্যের জঙ্গল মহলে?এই প্রশ্নের উত্তর কি দিতে পারবেন রাজ্যের স্বঘোষিত মহারাজা প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ ।

।।বিজ্ঞাপন।।

অভিযোগ, যিনি আপাদমস্তক সাম্প্রদায়িক। বাঙালি বিরোধী। অবশ্যই প্রদ্যুৎ বলবেন তিনি অসাম্প্রদায়িক।কিন্তু না, প্রদ্যুৎ কিশোরের বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বাঙালি বিদ্বেষ মূলক বক্তব্য প্রমাণ করে তিনি সাম্প্রদায়িক না অসাম্প্রদায়িক? বিশ্ব মোহনরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পরও জঙ্গি ব্যবসা যে চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না ।তাই ত্রিপুরার আকাশে আবারো এক কালো মেঘের ঘনঘাটা প্রকট হওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা । বলছেন রাজনীতির প্রাজ্ঞ লোকজন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কি মিস করেছেন