আগরতলা,২১ জুন।।
সমগ্র বিশ্বে আজ পালিত হলো ১১তম আন্তর্জাতিক যোগা দিবস। রাজ্যেও যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে এবং রাজ্য আয়ুষ মিশনের সহযোগিতায় উদযাপন করা হয় যোগা দিবসের রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠান। হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের প্রদর্শনী হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ সকল অতিথিগণ, বিভিন্ন দপ্তরের সচিব, অধিকর্তা, শিক্ষক শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীগণ যোগব্যায়ামে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে যোগা দিবস পালনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, যোগব্যায়াম ভারতবর্ষের সভ্যতার এক অভিন্ন অংশ। প্রাচীন ভারতের মুনিঋষিদের সৃষ্ট এই যোগব্যায়াম আজও মানব জীবনকে সুস্থ, সুন্দর, ইতিবাচক মানসিকতায় গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা নেয়। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সমগ্র বিশ্বে যোগা দিবস পালন করার প্রস্তাব রাখেন। সে সময় ১৭৭টি দেশ এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে। তাই ২০১৫ সাল থেকে আজকের এই দিন ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে আসছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যোগব্যায়াম নিজেকে নিজের সাথে পরিচিত হওয়ার সর্বোচ্চ পথ। এরমাধ্যমে সৃষ্ট সুস্থ দেহ ও মন, উৎকৃষ্ট মানব জীবন গঠনে সহায়ক। নিয়মিত যোগ অভ্যাস শরীর ও মনের সমস্ত ধরণের ক্লান্তি, অবসাদ দূর করতে মুখ্য ভূমিকা নিতে পারে। আজ সমগ্র বিশ্ব বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতবর্ষকে অনুসরণ করেছে। আমেরিকা, চীনের মতো দেশেও আজ যোগব্যায়াম শিক্ষা প্রদান কেন্দ্র রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এইচ.আই.ভি. এইডস রোগ বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। উল্লেখ্য, এবারকার যোগা দিবসের মূল ভাবনা হলো ‘যোগা ফর ওয়ান আর্থ, ওয়ান হেলথ’।
মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমানে মোবাইল আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কিন্তু নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে হলে অবশ্যই সময় করে যোগব্যায়াম চর্চা করা উচিত। এরফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, আজ প্রতিটি জেলা ও মহকুমা সদর সহ ব্লক পর্যায়েও আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালন করা হচ্ছে। আইকনিক সেন্টার হিসেবে শৈবতীর্থ ঊনকোটি এবং নীরমহলে যোগা দিবস পালনের কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, যোগব্যায়াম হলো ভারতবর্ষের প্রাচীন ঐতিহ্যের উপহার। যা মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। রাজ্যে যোগব্যায়াম চর্চাকে আরও ত্বরান্বিত করতে যোগা পার্ক স্থাপন করা হবে। এক্ষেত্রে বাধারঘাটস্থিত রাইমা সুইমিং পুল প্রাঙ্গণকে কেন্দ্র করে রাজ্যভিত্তিক যোগা কেন্দ্র গড়া হবে। এখানে প্রতিদিন নিয়ম করে যোগব্যায়াম শেখানো হবে।
ক্রীড়ামন্ত্রী আরও বলেন, আজকের এই দিনটি উপলক্ষ্যে যোগব্যায়াম ছাড়াও এক সপ্তাহব্যাপী স্বচ্ছতা অভিযান, রক্তদান শিবির, বৃক্ষরোপণের মতো কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ যোগব্যায়াম বিভাগে জাতীয়ন্তরে পুরস্কার প্রাপক ৬ জনকে সংবর্ধিত করেন। এছাড়াও অতিথিগণ অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে আয়োজিত রক্তদান শিবির পরিদর্শন করে রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন। উল্লেখ্য, রক্তদান শিবিরে মোট ৬৫ জন রক্তদান করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, বিধায়ক মিনারাণী সরকার, মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা, পুলিশ মহানির্দেশক অনুরাগ, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী ও অধিকর্তা এস. বি. নাথ এবং পদ্মশ্রী ড. দীপা কর্মকার।
