ডেস্ক রিপোর্টার,আগরতলা।।
                    মনুবাজার থানার পুলিশের নির্যাতনে
  যুবকের মৃত্যু। নাম বাদল ত্রিপুরা। এই মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দিনভর তপ্ত ছিল মনুবাজার। প্রথমে উত্তেজিত জনতা থানা ঘেরাও করে। পরে করে জাতীয় সড়ক অবরোধ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচ আরক্ষা কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে মনু বাজার থানার পুলিশ। এবং তাদেরকে গ্রেফতারও করেছে। ধৃতরা হলো সাব- ইন্সপেক্টর প্রেমজিত রায়, পুলিশ কনস্টেবল রাজ কুমার ত্রিপুরা, এসপিও জওয়ান শ্যামল দাস, থৈলাসা মগ, রেঙ্গু মগ। একই সঙ্গে তাদেরকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। আহত অবস্থায় বুধবার বাড়ীতেই মৃত্যু হয়েছে বাদল ত্রিপুরার।
     তদন্তকারী পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৫ অক্টোবর মনু বাজার থানার এক পুলিশ কর্মীর বাড়িতে রাবার সিট চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল বাদল ত্রিপুরা ও প্রসেনজিৎ ত্রিপুরা নামে দুই যুবক। এই ঘটনার পর পুলিশ কর্মী অভিযুক্ত বাদল ও প্রসেনজিৎ’কে উত্তম মধ্যম দিয়ে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

।।বিজ্ঞাপন।।

সাব্রুমের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, গত ১৫ অক্টোবর চুরির ঘটনার পর ধৃত বাদল ত্রিপুরা ও প্রসেনজিৎ ত্রিপুরার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে চান নি রাবার সিটের মালিক (তিনি একজন পুলিশ কনস্টেবল)। ঘটনার সময় বাদল ও প্রসেনজিৎ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল এই কারণে থানা পুলিশ তাদেরকে নেশা করার অপরাধে থানায় আটক করে রেখেছিল। পরের দিন সকালে বাদল ত্রিপুরার মামা থানায় এসে তাদেরকে জামিনে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। বাড়িতে নেওয়ার পর বাদল ত্রিপুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে ভর্তি করানো হয় স্থানীয় হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় বাদলকে ভর্তি করানো হয়েছিল শান্তিরবাজার হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে। বুধবার বাড়িতেই মৃত্যু হয় বাদল ত্রিপুরার।

।বিজ্ঞাপন।

মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কথায় বাদল ত্রিপুরার মৃত্যুর আগের দিন তার পরিবারের লোকজন ৫ আরক্ষা কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় খুনের মামলা দায়ের করেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, থানার মধ্যে পুলিশ কর্মীরা বাদল ত্রিপুরাকে মারধর করেছে। তার মাথায়, চোখের নিচে, পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ কর্মীরা বাদলকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ তুলে তার পরিবারের লোকজন।

।।বিজ্ঞাপন।।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় উত্তেজিত জনতা বাদল ত্রিপুরার মৃতদেহ নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে এবং ঘেরাও করে  থানা। চাপে পড়ে যায় পুলিশও। অবশেষে উত্তেজিত জনতার চাপের মুখে পুলিশ গ্রেপ্তার করে পাস অভিযুক্ত আরক্ষা কর্মীকে। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, পুলিশ গ্রেফতারের আগেই বাদল ত্রিপুরার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল ।শেষ তারা খতিয়ে দেখেছেন সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। সেখানে তেমন কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।


মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কথায়, তা সত্ত্বেও অভিযোগ মূলে পাঁচ আরক্ষা কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। করা হয়েছে  চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত আরক্ষা কর্মীদের বিরুদ্ধে শুরু হবে ডিপার্টমেন্টাল প্রসিডিং।
            


এই ঘটনা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা। বাদল ত্রিপুরার মৃত্যুর রহস্য উম্মোচন করতে পুলিশকে সমস্ত রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
        

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *