মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দিব্যাঙ্গ হওয়া কোন বাধা নয়। শুধু চাই দৃঢ়চেতা মানসিকতা, অবিচল লক্ষ্য এবং একাগ্রতা। নিয়মিত অনুশীলন একজন ক্রীড়াবিদকে তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছতে সহায়তা করে। ক্রীড়ার কোন জাত নেই, ধর্ম নেই, বর্ণ নেই। ক্রীড়া আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে তোলার অন্যতম মাধ্যম।

আগরতলা, ১৫ ডিসেম্বর।।
      দিব্যাঙ্গজন ক্রীড়াবিদরা সমাজের কাছে সাহস, আত্মবিশ্বাস ও অদম্য মানসিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শারীরিক সীমাবদ্ধতা কখনো প্রতিভা বা সাফল্যের অন্তরায় হতে পারে না। প্যারা ক্রীড়াবিদদের সাফল্যই জীবন্ত প্রমাণ। আজ বাধারঘাট দশরথ দেব স্পোর্টস কমপ্লেক্সে দিব্যাঙ্গদের নিয়ে খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস-২০২৫ উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দিব্যাঙ্গ হওয়া কোন বাধা নয়। শুধু চাই দৃঢ়চেতা মানসিকতা, অবিচল লক্ষ্য এবং একাগ্রতা। নিয়মিত অনুশীলন একজন ক্রীড়াবিদকে তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছতে সহায়তা করে। ক্রীড়ার কোন জাত নেই, ধর্ম নেই, বর্ণ নেই। ক্রীড়া আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে তোলার অন্যতম মাধ্যম। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা কেবল শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে না, এটি মানসিক শক্তি, শৃঙ্খলা ও আত্মসম্মানবোধ গড়ে তুলে। প্যারা ক্রীড়াবিদদের এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সমাজে অন্তর্ভুক্তিমূলক মানসিকতা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষিত ‘খেলো ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘খেলো ত্রিপুরা’ কর্মসূচির মাধ্যমে ক্রীড়াক্ষেত্রকে সার্বজনীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলতে বদ্ধপরিকর। প্যারা ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, উপযুক্ত ক্রীড়া পরিকাঠামো, আধুনিক সরঞ্জাম এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানে রাজ্য সরকার বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই প্যারা গেমস প্রতিবছর এর সফলতার সিড়ি অতিক্রম করছে। রাজ্যের মানুষ তা উপলব্ধি করতে পারছেন। বর্তমান ত্রিপুরার ক্রীড়া জগৎ-এ রাজনীতির কোন স্থান নেই। মেধাই সর্বোত্তম প্রাধান্য। বিগত দিনে যা লক্ষ্য করা যায়নি। বর্তমান সরকার ক্রীড়ার মূল্য দিতে জানে। ক্রীড়াবিদদের সম্মান করতে জানে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবার জীবনেই সঙ্কটময় পরিস্থিতি আসে। সেই পরিস্থিতিকে কাটিয়ে উঠে সামনের দিকে এগিয়ে চলাই মূল বিষয়। তাই শারিরীক সীমাবদ্ধতা কোন সমস্যা নয়। মানসিক সক্ষমতাই আসল বিষয়। ত্রিপুরা এখন অনেক অগ্রণী। বিগত দিনে ত্রিপুরার পরিচয় ছিল খুবই ক্ষীণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হীরা মডেল, অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি, অষ্টলক্ষ্মী দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা ত্রিপুরার উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান। মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ক্রীড়াবিদ এবং অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান রাখেন ‘আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য’। তিনি বলেন, আত্মবিশ্বাস এবং খেলার প্রতি একাগ্রতা সফলতা নিয়ে আসে। তিনি বলেন, খেলা শুধু ক্রীড়াবিদদের শারীরিক বা মানসিক সক্ষমতা দেয়না, বরং নেশার কবল থেকেও দূরে রাখতে সহায়তা করে। তিনি এই প্যারা গেমসের সার্বিক সফলতা কামনা করেন।
    


অনুষ্ঠানে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, ২০২৩ সালে এই খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস-এর সূচনা হয়। বর্তমানে দিব্যাঙ্গজনদের মধ্যে সামাজিক পেনশন দেওয়ার জন্য ইউডি আইডি কার্ড প্রদান করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজারের উপর ইউডি আইডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে। শতাংশের নিরীখে প্রায় ৯৫ শতাংশ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দিব্যাঙ্গজনদের সার্বিক উন্নয়নে খুবই আন্তরিক।
       এই অনুষ্ঠানে প্রতিকীরূপে মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিকে দিব্যাঙ্গ মেধাবী ছাত্রছাত্রী এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দিব্যাঙ্গদের সম্মান জানানো হয়। এছাড়াও প্রতিকীস্বরূপ ম্যারেজ গ্র্যান্ট, নির্মলা হেলথ ইন্সুরেন্স কার্ড, সিকিউরিটি পেনশন ও চলন সামগ্রী দিব্যাঙ্গদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী সহ উপস্থিত অতিথিগণ তুলে দেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *