Tripura। Insurgency।RSS। BJP। NLFT।Janatar Mashal।

আরএসএস – র প্রচারকদের খুনিদের তোয়াজ করে তাদের হাতে উপহার স্বরূপ আড়াইশো কোটি টাকার প্যাকেজ তুলে দেওয়া কি যুক্তি সঙ্গত?


                                                            ছবি – ইন্টারনেট

কল্যাণ আশ্রমের ছাত্রাবাস থেকে বন্দুকের মুখে আর এস এস – র চার বাঙালি প্রচারক অপহরণের নেতৃত্বে ছিলো এনএলএফটির জঙ্গি নেতা যশোয়া ওরফে যোগেন্দ্র দেববর্মা। এনএলএফটির কাছে জশুয়া বুবাগ্রা নামেও পরিচিত ছিলো। গোটা ঘটনার মাস্টার মাইন্ড ছিলো এনএলএফটির সুপ্রিমো বিশ্বমোহন।রাজ্যের ইতিহাসে এটা নিঃসন্দেহে একটা হৃদয় বিদারক ঘটনা।

ডেস্ক রিপোর্টার, ২৫ সেপ্টেম্বর।।

Table of Contents

সাল – ১৯৯৯

তারিখ – ৬ আগস্ট

জেলা: ধলাই

স্থান: কল্যাণ আশ্রম,কাঞ্চনছড়া

অপরাধের ধরন: অপহরণ ও খুন

অপরাধী: ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা(এনএলএফটি)

ষড়যন্ত্রকারী:খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারক ও ব্যাপটিস্ট চার্চ।

ধলাই জেলার কাঞ্চনছড়া বনবাসী কল্যাণ আশ্রম থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের চার প্রচারককে অপহরণ করেছিলো এনএলএফটির বিশ্বমোহন গোষ্ঠী। পরে তাদের খুন করা হয়। আজও আরএসএস- র চার বাঙালি প্রচারকের লাশ বা তাদের হাড়-গুড় কিছুই পাওয়া যায় নি। গোটা ঘটনার নেপথ্যে ছিলো খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারকদের ষড়যন্ত্র ও ব্যাপটিস্ট চার্চ। তৎকালীন সময়ে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছিলো এই তথ্য।

।।এল কে আদবানীর বইয়ের প্রচ্ছদ।।

      

দেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এল কে আদবানী তাঁর  “My country My life”  নামক বইয়ের ৭২৯ থেকে ৭৩০ পৃষ্ঠার মধ্যে লিখে ছিলেন,  “ত্রিপুরার চারজন আরএসএস প্রচারকের অপহরণের পর আমি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের নিয়ে একটি সভা ডেকেছিলাম, যেখানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও উপস্থিত ছিলেন। সভায় আমাকে বলেছিলেন,  ত্রিপুরায় ব্যাপ্টিস্ট চার্চ যে  এনএলএফটি-কে সব রকমের সাহায্য করছে এই সংক্রান্ত সব তথ্য প্রমাণ রয়েছে তাঁর সরকারের কাছে। “


এল কে আদবানীর এই বইয়ে থাকা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট এনএলএফটির ব্যাপ্টিস্ট চার্চের নিবিড় সম্পর্কের বিষয়টি।

।।বিজ্ঞাপন।।

কল্যাণ আশ্রমের ছাত্রাবাস থেকে বন্দুকের মুখে আর এস এস – র চার বাঙালি প্রচারক অপহরণের নেতৃত্বে ছিলো এনএলএফটির জঙ্গি নেতা যশোয়া ওরফে যোগেন্দ্র দেববর্মা। এনএলএফটির কাছে জশুয়া বুবাগ্রা নামেও পরিচিত ছিলো। রাজ্যের ইতিহাসে এটা নিঃসন্দেহে একটা হৃদয় বিদারক ঘটনা।

।। প্রচারকদের অপহরণ ও খুনের নেতৃত্বে জঙ্গি যশোর।।

গত ৪ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে রাজ্যের দুই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন এনএলএফটি ও এটিটিএফ শান্তি চুক্তির মাধ্যমে অস্ত্র বিরতি ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার ৩২৮ জন আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিদের পুনর্বাসনের জন্য আড়াইশো কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘোষণা দিয়েছেন দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জঙ্গিদের অস্ত্র বিরতি  ও কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার পর রাজ্যের সাধারণ মানুষ, বিজেপি ও আরএসএস – র কর্মীদের মধ্যে নানান প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে।  ১৯৯৯ সালের ৬ আগস্ট কল্যাণ আশ্রম থেকে চার আরএসএস প্রচারককে অপহরণ ও খুনের মূল মাস্টার মাইন্ড কে ছিলো?তিনি রক্ত পিপাসু জঙ্গি সংগঠন এনএলএফটি’র মহামান্য সুপ্রিমো বিশ্বমোহন দেববর্মা।


চার বাঙালি প্রচারক শ্যামল কান্তি সেনগুপ্ত, দিনেন্দ্র নাথ দে, সুধাময় দত্ত ও শুভঙ্কর চক্রবর্তীর খুনিদের হাতের সামনে পেয়েও ছেড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ?

অর্থাৎ পরিষ্কার ভাবে বললে বিশ্বমোহনই  আরএসএস- র চার প্রচারকের খুনি। আরএসএস – র প্রচারকদের খুনিদের তোয়াজ করে তাদের হাতে উপহার স্বরূপ আড়াইশো কোটি টাকার প্যাকেজ তুলে দেওয়া কি যুক্তি সঙ্গত? তাহলে কি বলা যায় না, চার বাঙালি প্রচারক শ্যামল কান্তি সেনগুপ্ত, দিনেন্দ্র নাথ দে, সুধাময় দত্ত ও শুভঙ্কর চক্রবর্তীর খুনিদের হাতের সামনে পেয়েও ছেড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ?

।।বিজ্ঞাপন।।

আরএসএসের চার প্রচারকের পরিবার আজও বিচার পায় নি। তাদের বিচারের বাণী কাঁদছে নীরবে নিভৃতে। অদৃশ্য থেকে চার প্রচারকের আত্মও যন্ত্রণায় কাতর হয়ে উঠেছে। কেন না দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তাদের খুনিদের হাতের সামনে পেয়েও ছেড়ে দিলেন?কোনো শাস্তি দিলেন না।বরং ফুল , বেলপাতা  দিয়ে পুজো করে খুনিদের হাতে তুলে দিলেন পুরষ্কার। এই দিন দেখার জন্যই কি চার প্রচারক শ্যামল কান্তি সেনগুপ্ত, দিনেন্দ্র নাথ দে, সুধাময় দত্ত ও শুভঙ্কর চক্রবর্তীরা নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন?

চার প্রচারক বাঙালি বলেই হিন্দি বলয়ের গুজরাটি তাবেদাররা তাদের আত্ম বলিদানকে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছেন?

বর্তমান আরএসএস নেতৃত্ব ও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কি চার প্রচারকের সঙ্গে সঠিক বিচার করেছেন? নাকি এই চার প্রচারক বাঙালি বলেই হিন্দি বলয়ের গুজরাটি তাবেদাররা তাদের আত্ম বলিদানকে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছেন? এই প্রশ্ন তুলছেন রাজ্যের মানুষ।  অবশ্যই গোটা বিষয় নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন রাজ্য বিজেপির তাবর নেতৃত্ব।সঙ্গে দেশের  আরএসএস মোহন ভাগবত ও রাজ্যের আরএসএস প্রধান বি কে রায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কর্নকুহরে কি তারা রাজ্যের বাঙালি ভাবাবেগে আঘাত লাগার বিষয়টি  দিতে পারেন নি?

মোহন ভাগবত ও বিকে রায় (লাল তীর চিহ্ন)

তাহলে কি বিজেপিও রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদের মতাদর্শকে ভুলে গিয়ে নিজের ভাইয়ের ভিন জাতির খুনিদের সঙ্গেও এক টেবিলে আলোচনায় বসতে পারে?

।।বিজ্ঞাপন।।

ধর্ম নিয়ে রাজনীতি ভারতীয় জনতা পার্টির মূল এজেন্ডা। হিন্দুর দোহায় দিয়েই তারা রাজনীতির সলতে পাকিয়ে থাকে। দলের এই মতাদর্শকে বিসর্জন দিয়ে চার প্রচারকের হত্যাকারী খ্রিষ্টান ধর্মম্বলী খুনিদের সঙ্গে এতো মাখো মাখো ভাব কেন? তাহলে কি বিজেপিও রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদের মতাদর্শকে ভুলে গিয়ে নিজের ভাইয়ের ভিন জাতির খুনিদের সঙ্গেও এক টেবিলে আলোচনায় বসতে পারে? রাজ্যের আরএসএস ও বিজেপির কর্মীদের মধ্যে এখন এই কোটি টাকার প্রশ্ন জাবর কাটতে শুরু করেছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *