ত্রিপুরা স্পেস অ্যাপ্লিকেশনস সেন্টারে ( টিএসএসি) বস্তু ঘুঘুর বাসা। চলছে সীমাহীন দুর্নীতি।প্রতিদিন নিলামে উঠছে দপ্তরের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মার নাম। অভিযোগ, নেপথ্যে রয়েছেন টিএসএসির ইনচার্জ অভিষেক দাসগুপ্ত। নানান দুর্নীতির কারণে বিষিয়ে উঠছে টিএসএসি’র পরিবেশ।কর্মীরাও দপ্তরে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না। সব মিলিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে দপ্তরে কর্মরত মহিলারাও।
ত্রিপুরা স্পেস অ্যাপ্লিকেশনস সেন্টারে কর্মরত কর্মীদের বক্তব্য, ইনচার্জ অভিষেক দাসগুপ্ত রীতিমতো নিজস্ব শাসন কায়েম করেছেন। গোটা দপ্তরে ভয়ের জাল বিস্তার করে রেখেছেন অতীতের এই বাম ক্যাডার। যদিও হালে তিনি স্ব-ঘোষিত শাসক দলের নেতা। অভিযোগ, ইনচার্জ অভিষেক দাসগুপ্ত গোটা দপ্তরে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন,তিনি হলেন মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মার ঘনিষ্ঠ। মন্ত্রীর নামে জয় ধ্বনি দিয়েই গোটা দপ্তরকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন অভিষেক। কর্মীদের মুখে শোনা যায়, “মন্ত্রী” নামের আতঙ্কের কারণেই ডিডিও ও এইচওও ইনচার্জ অভিষেকের ইশারায় কাজ করে থাকেন। শুধু তাই নয় দপ্তরের মেম্বার সেক্রেটারি পর্যন্ত অভিষেকের আতঙ্কে মুখে কুলুপ এঁটে রাখেন। ঘুরিয়ে বললে অভিষেকের সব অনৈতিক কার্যকলাপ গুলিকে সীলমোহর দিচ্ছেন তারা।
দপ্তরের কন্ট্রাক্ট দুর্নীতি থেকে গোপন নথি চুরি,পদোন্নতির জন্য ব্ল্যাকমেইল থেকে শুরু করে দপ্তরে কর্মরত নারীদের অপমান করা। সবকয়টি কাজই নাকি করে থাকেন ইনচার্জ অভিষেক দাসগুপ্ত। দপ্তরের কর্মীরা সরাসরি এই সংক্রান্ত বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
অফিস বন্ধের দিন এই স্বঘোষিত বিপ্লবী মন্ত্রীঘনিষ্ট নেতা অন্য কর্মচারীদের কম্পিউটার খুলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করেন।
## কন্ট্রাক্ট দুর্নীতি:
অফিসের নানান কাজকর্মের জন্য বিশেষ কোনো টেন্ডার হয় না। হলেও চুপিসারে।অফিসের সব কাজের বরাত পেয়ে থাকে টগর দাস নামে একজন ঠিকাদার। অভিযোগ, ঠিকাদার টগর দাসের সঙ্গে অভিষেক দাশগুপ্তের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ! দপ্তরে গুঞ্জন, ঠিকাদার টগর দাস কাজ পেলেই অভিষেককে দিয়ে থাকেন জিজিয়া কর। তাতেই পকেটও হয় ভারি।
##গোপন নথি চুরি! :
দপ্তরে কান পাতলেই শোনা যায়, অফিস বন্ধের দিন এই স্বঘোষিত বিপ্লবী মন্ত্রীঘনিষ্ট নেতা অন্য কর্মচারীদের কম্পিউটার খুলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন। কেউ পাসওয়ার্ড দিতে অস্বীকার করলে, লোক আনিয়ে পাসওয়ার্ড ভাঙেন! আর যদি কেউ পাসওয়ার্ড ভাঙ্গতে একেবারেই রাজি না হন, তাহলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় -“ভবিষ্যতে অফিসে আর কাজ পাবেন না!”। প্রশ্ন হচ্ছে, এই কাজ কি কর্মচারী আচরণবিধির পরিপন্থী নয়?
##পদোন্নতির জন্য ব্ল্যাকমেইল:
অফিসের এক গ্রুপ – ডি’ র কর্মচারীর স্ত্রী রাজ্যের একটি বেসরকারি স্কুলের উচ্চ পদে কর্মরত। গ্রুপ কর্মচারীর যথাযথ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁর পদোন্নতি আটকে রেখে দেয় অভিষেক। তার দাবী ছিলো, স্ত্রীকে স্কুলে চাকরী দিলেই গ্রুপ ডি’ র কর্মীকে পদোন্নতি দেওয়া হবে।অবাক করার মতো ঘটনা অভিষেক বাবুর স্ত্রীকে নাকি সেই স্কুলে চাকরি দেওয়া হয়। কিন্তু গ্রুপ ডি – র পদোন্নতি হয় নি।
##নারীদের অসন্মান:
এই দপ্তরে কর্মরত মহিলা কর্মীরা ভুগছেন নিরাপত্তা হীনতায়। অভিযোগ, অভিষেক অনেক মহিলা কর্মীকেই অপমান করেন তার কর্মস্থলে। এই নিয়ে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগও রয়েছে।দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো সুবিচার পায় নি অপমানিত মহিলা কর্মচারীরা।ত্রিপুরা স্পেস অ্যাপ্লিকেশনস সেন্টারের চেয়ারম্যান খোদ মুখ্যমন্ত্রী।রয়েছেন দপ্তরের মন্ত্রী। তারপরও টিএসএসিতে এতো দুর্নীতি? কোন শক্তির জোরে এই গোটা দপ্তরকে হাতের তালুতে নিয়ে দুর্নীতির মৌসূরী পাট্টা বানিয়ে রেখেছে? এই প্রশ্ন দপ্তরের কর্মীদের।ঊঠছে।