ডেস্ক রিপোর্টার, ৩রা জুলাই।।
আসাম পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত্যু হল দুই দাগি অপরাধীর। ঘটনা আসাম – মেঘালয় সীমান্তে। নিহত দাগি অপরাধীরা হল কামরুল ইসলাম(৩৫) ও আব্দুল হোসেন(২৬)। তাদের সঙ্গে থাকা অপর অপরাধী অবশ্যই পুলিশের হেফাজতে। তার নাম আনোয়ার হোসেন লস্কর(২৩)। তিনজনেরই বাড়ি আসামের কাছাড় জেলার শিলচর থানা এলাকায়। শনিবার রাতে এই ঘটনা কেন্দ্র করে গোটা কাছাড় জুড়ে অপরাধীদের কম্পন শুরু হয়েছে।
কাছাড় জেলার পুলিশ সুপার রমনদ্বীপ কৌর জানিয়েছেন, কামরুল ইসলাম , আব্দুল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন লস্করকে জেলার জোড়াবাট থানার পুলিশ আটক করেছিল। সেখান থেকে শিলচর থানায় আনার সময় কামরুল ও আব্দুল পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।তখনই পুলিশ তাদের থামতে বলে।কিন্তু তারা পুলিশের কথা কর্নপাত করেনি। গতি বাড়িয়ে দৌঁড় শুরু করে। বাধ্য হয়ে পুলিশ তাদের পা লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে।কিন্তু বুলেটের শব্দ শুনে তারা বসে যায়।তাতেই তাদের বুলেট আঘাত করে তাদের বুকে – পিঠে। এবং তাদের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জন আব্দুল হোসেনের বিরূদ্ধে কাছাড়ের রাঙ্গিখড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে একটি মামলা দায়ের হয়।
মামলার উপপাদ্য বিষয় ছিলো, একটি জমি সংক্রান্ত বিবাদের জের ধরে আব্দুল গুলি ছুঁড়েছিলো।এই ঘটনার পর আব্দুল হোসেন মেঘালয়ে চলে যায় গাড়ি করে।প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে পুলিশ মেঘালয় থেকে তার পিছু নেয়।কিন্তু তক্কে তক্কে থাকা পুলিশ তাকে মেঘালয়ে আটক করতে পারেনি।শেষে আব্দুল আসাম – মেঘালয় বর্ডারের আসামের জোড়াবাট থানার পুলিশ তার গাড়ি আটক করতে সক্ষম হয়। তখন আব্দুলের সঙ্গে গাড়িতে আরো দুই জনকে পাওয়া যায়।একজন কামরুল ইসলাম ও অপর জন নজরুল ইসলাম লস্কর।
আব্দুল হোসেন বড়ভূঁইঞাকে আটক করার খবর পেয়ে জোড়াবাট থানায় ছুটে যায় শিলচর থানার পুলিশ। সেখানে গিয়ে শিলচরের পুলিশের চোখ চড়ক গাছ হয়ে যায়। কারণ তারা আব্দুলের সঙ্গে পেয়ে যায় “মোস্ট ওয়ান্টেড” অপরাধী কামরুল ইসলাম ওরফে লকইকে। তার বিরূদ্ধে আসাম পুলিশের খাতায় বহু অপরাধ জনিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে কামরুল পলাতক ছিলো।একেবারে যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি।
কাছাড় জেলার পুলিশ সুপার রমন দ্বীপ কৌর জানিয়েছেন, পুলিশ এক গাড়িতে আনোয়ার ও অপর একটি গাড়িতে কামরুল ও আব্দুলকে শিলচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। আসাম – মেঘালয় সীমান্তে সড়কের অবস্থা ভালো না থাকার কারণে গাড়ি গতি কমিয়ে আস্তে আস্তে চলতে থাকে। রাস্তায় ছিলো যানজট।
আনোয়ারকে নিয়ে প্রথম গাড়িটি করে পুলিশ বেরিয়ে যায়।কিন্তু দ্বিতীয় গাড়িটি আটকে পড়ে।চলন্ত অবস্থায় গাড়িটি একটি অন্ধকারময় জায়গাতে পৌঁছতেই দাগি অপরাধী কামরুল ইসলাম ওরফে লকই ও আব্দুল পুলিশের গাড়িতে দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।এবং দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ থামতে বললেও তারা কর্নপাত করেনি। বরং পুলিশকে লক্ষ্য করে ইপাটকেল ছুঁড়ে মারে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি ছুঁড়ে। পুলিশ টার্গেটে ছিলো তাদের পা। কিন্তু বুলেটের শব্দ শুনে দুই অপরাধী বসে যায়।ফলে গুলি লাগে তাদের পেটে- পিঠে।
সঙ্গে সঙ্গে তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালাইন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাদের নিয়ে পুলিশ রওয়ানা হয় শিলচর মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশ্যে।কিন্তু রাস্তায় তাদের মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *