ডেস্ক রিপোর্টার,১৭জানুয়ারি।।
হাসপাতালে কর্তব্যরত এক চিকিৎসককে খুনের চেষ্টার অভিযোগ তিপ্রামথার এক বিজিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে। আহত চিকিৎসকের নাম সপ্তদ্বীপ দাস। তিনি গর্জি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত। অভিযুক্তের নাম বীরলাল নোয়াতিয়া। ২৩- র বিধানসভা নির্বাচনে বীরলাল ৩২- মাতা বাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে তিপ্রামথার প্রার্থী ছিলেন। ঘটনা মঙ্গলবার রাতে। বর্তমানে আহত চিকিৎসকের চিকিৎসা চলছে গোমতী জেলা হাসপাতালে। এই ঘটনার পর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ ডা: ঋতুপর্ণ বিশ্বাস গর্জি ফাঁড়িতে বীর লালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ অভিযুক্ত বীরলালকে গ্রেফতার করে নি।পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে ছি: ছি: রব উঠেছে সর্বত্র।
ঘটনার খবর পেয়ে গোমতী জেলা হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন মন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায়, মাতা বাড়ি কেন্দ্রের বিধায়ক অভিষেক দেবরায়। তারপরও তিপ্রামথার বিজিত প্রার্থী বীরলালের বিরুদ্ধে কোনও এক রহস্য জনক কারণে পুলিশ নিশ্চুপ। মন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায়ের অফিস থেকেও বিষয়টি গোমতী জেলার পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। এবং অভিযুক্ত বীর লালের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ মন্ত্রীর অফিসের বার্তাকে কোনও গুরুত্বই দেয় নি।
গর্জি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতে মদমত্ত একজন রোগীকে নিয়ে যায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সঙ্গে সঙ্গেই কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসা শুরু করেন। তখনই মাতাল বীরলাল চিকিৎসকের চেয়ার টেনে এনে নিজে বসে যান।এবং চিকিৎসককে চোখ লাল করে বলেন,”তাকে কেন বসার জন্য চেয়ার দেওয়া হলো না।সে একজন বিধায়ক সমতুল্য।” চিকিৎসক সপ্তদ্বীপ তখন তিপ্রামথার মাতাল প্রার্থীকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।তখনই প্রদ্যুৎ কিশোরের আলালের ঘরের দুলাল “প্রার্থী” বীর লাল তার হাতে থাকা মোটর বাইকের চাবি দিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক সপ্তদ্বীপ দাসের গলায় মারাত্বক ভাবে আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই চিকিৎসক সপ্তদ্বীপ হাসপাতালের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরা ছুটে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে মাতাল বীরলাল স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বর থেকে বেরিয়ে যায়।
রক্তাক্ত অবস্থায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর ডা: সপ্তদ্বীপকে জরুরী অবস্থায় গোমতী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার পর জেলার চিকিৎসকরা তীব্র প্রতিবাদ জানায়। প্রাথমিক ভাবে তারা গর্জি পুলিশ ফাঁড়িতে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ বীর লাল নোয়াতিয়া ও তার অনুগামী বিকাশ নোয়াতিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা রুজু করে।কিন্তু ফাঁড়ি পুলিশের উপর আস্থা হারিয়ে চিকিৎসকরা পুনরায় বুধবার রাধা কিশোর পুর থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বীরপুঙ্গব পুলিশ চুপ কেন? কিসের ভয় কাজ করছে রাষ্ট্রপতি কালার্স পদক প্রাপক রাজ্য পুলিশের? চিকিৎসকরা জাতপাত,রাজনীতির ঊর্ধ্বে। তারপরও কেন তিপ্রামথার মাতাল নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের হাতে কম্পন হচ্ছে?
এই ঘটনার পর রাজ্যের চিকিৎসক সমাজ কেন নিশ্চুপ? অন্যান্য ঘটনার পর রাজ্যের চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদে সরব হয়। তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে আন্দোলনে। ডাক দিতেন কর্ম বিরতির। তবে গর্জি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক সপ্তদ্বীপ দাসের ঘটনায় কেন মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন রাজ্যের চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব?