ডেস্ক রিপোর্টার, আগরতলা।।
বাম শাসনের পুনরাবৃত্তি রাম শাসনেও। গ্যাং ওয়ারের বুলেটে ঝাঝরা ঊষা বাজার ভারত রত্ন সংঘের সম্পাদক। তার নাম দূর্গা প্রসন্ন দেব। বাড়ি ঊষা বাজারেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতে তাকে শালবাগানস্থিত নির্জন অঞ্চলে গুলি করে খুন করা হয়েছে। দুর্গা প্রসন্ন দেবের স্ত্রীর অভিযোগ, বিমান দাস, রাজু বর্মন, রাকেশ বর্মন দেবব্রত বর্মন ও দেবদাসরা পরিকল্পিত ভাবে ডেকে নিয়ে তার স্বামীকে খুন করেছে। পুলিশের দাবি, দূর্গা প্রসন্ন হত্যা কান্ডের পেছনে রয়েছে মধুর ভান্ড “সিপিডব্লিউডি”- র দখলদারী। রাজ্যের জনপ্রিয় ওয়েব পোর্টাল “জনতার মশাল ” – ধারাবাহিক ভাবে সিপিডব্লিউডির নিগোসিয়েশিন বানিজ্য নিয়ে খবর প্রকাশ করেছিল। এবং বারবার গ্যাং ওয়ারের আগাম আভাস দিয়েছিলো।কিন্তু এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ ছিলো ঠুঁটো জগন্নাথ। তারা গ্যাং ওয়ার আটকানোর কোনো চেষ্টায় করে নি।এর খেসারত দিয়ে হয়েছে ক্লাব সম্পাদক দূর্গা প্রসন্ন দেব ওরফে ভিকিকে।
খুন হওয়া দূর্গ প্রসন্ন দেবের স্ত্রীর কথায়, সম্প্রতি দূর্গা প্রসন্ন ভারত রত্ন সংঘের সম্পাদকের দায়িত্ত্ব নিয়েছিলেন। তার আগে এই দায়িত্বে ছিলো স্থানীয় সমাজদ্রোহী রাজু বর্মন। তাই রাজু দূর্গা প্রসন্নকে খুন করেছে। দূর্গ প্রসন্ন দেবের স্ত্রীর অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বামুটিয়ার বিমান দাস তার স্বামীকে গাড়ি পাঠিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। দুর্গা প্রসন্ন ফোন করে তার স্ত্রীকে একথা জানিয়েছিল। দুর্গা প্রসন্নের স্ত্রীর বক্তব্য বাড়ি থেকে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি স্বামীর মোবাইলে ফোন করেছিলেন কিন্তু তার মোবাইল তখন সুইচ অফ ছিল কিছুক্ষণ পর তিনি আবার ফোন করেন তখন মোবাইলের অপরপ্রান্তে থাকা এক যুবক ভিকির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিন সন্ধ্যায় শালবাগানস্থিত নির্জন রাস্তায় দুর্গাপ্রসন্নকে গুলি করে হত্যা করে আততায়ীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ।রক্তাক্ত অবস্থায় দুর্গাপ্রসন্নকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে আই এল এস হাসপাতাল। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে রাজু বর্মন, বিমান দাস, রাকেশ বর্মন, দেবব্রত বর্মন সহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তবে খবর লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি বা খুনের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ও উদ্ধার করতে পারিনি।
ভারতরত্ন সংঘের ক্লাব সম্পাদক দুর্গা প্রসন্ন দেবের খুনের ঘটনা কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে সংশ্লিষ্ট এলাকায় । তবে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল কারণ সিপিডব্লিউডি নিগোসিয়েশন কারবার। সম্প্রতি দুর্গাপ্রসন্ন ক্লাব সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে রাজু বর্মনকে সিপিডব্লিউডির নিগোসিয়েশন কারবার থেকেও সরিয়ে দেওয়ার ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করেছিল। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নিগোসিয়েশনের নতুন কমিটি হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই দূর্গা প্রসন্নকে যমদূতরা খালাস করে দেয়। এদিন রাতে ক্লাব সম্পাদকের লাশ আইএলএস হাসপাতাল থেকে জিবিতে নিয়ে রাখা হয়েছে। বুধবার ময়না তদন্তের পর পুলিশ দূর্গা প্রসন্ন’র পরিবারের হাতে তুলে দেবে তার লাশ।