।।জাতীয় সড়ক অবরোধে ব্রু লোকজন।।

কাঞ্চনপুর ডেস্ক, ৩০জুন।।
এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে ফের সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে উত্তপ্ত  কাঞ্চনপুর। বৃহস্পতিবার দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ , প্রশাসনিক তৎপরতায় রক্ষা পেলেও দুই পক্ষের সাতজন আহত হয়েছেন । আহাদতের মধ্যে এক যানচালক সহ তিনজনের অবস্থা আশঙ্কা জনক। তাদেরকে  রেফার করা হয়েছে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে।
এই ঘটনা কেন্দ্র করে সমগ্র কাঞ্চনপুর মহকুমার জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সমগ্র মহকুমায় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ, টিএসআরের পাশাপাশি সিআরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছে ।


ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। মিজো কনভেনশনের সদস্যরা বনদপ্তরের অনুমতিক্রমে কাঞ্চনপুর জম্পুই সড়কের নয় কিলোমিটার এলাকায় বৃক্ষ রোপণ শুরু করে।বৃক্ষ রোপনের খবর পৌঁছে যায় কাঞ্চনপুরের লাগোয়া ব্রু পাড়াতে। সঙ্গে সঙ্গে  ইয়ং ব্রু অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ওই এলাকাগুলি তাদের দাবি করে। এবং অবরোধ করে কাঞ্চনপুর -জম্পুই জাতীয় সড়ক(এন এইচ -৪৪-এ)। এই খবর পেয়ে কাঞ্চনপুরের এসডিপিও বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। আলোচনায় বসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে।

।।অবরোধকারীদের বুঝানোর চেষ্টা করছেন এসডিপিও।।

দীর্ঘ তিন ঘণ্টা যাবৎ কাঞ্চনপুর জম্পুইয়ের ব্যস্থতম সড়ক অবরোধের ফলে সড়কের দুদিকেই শত শত গাড়ি আটকে পড়ে।আচমকা অবরোধের ফলে দূর দূরান্ত থেকে জম্পুইয়ে ঘুরতে আসা পর্যটকরা সমস্যায় পড়েন।


এদিকে অবরোধ চলা অবস্থায় দুই মিজো যুবক অকুস্থলে পৌঁছা মাত্রই  আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়।এখানে ব্রু যুবকরা দুই মিজো যুবককে শারীরিকভাবে আঘাত করে বলে অভিযোগ। এই খবর জম্পুই হিলে পৌঁছা মাত্র  উত্তেজিত ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশনের শতাধিক সদস্য অবরোধ স্থলে আসার জন্য উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পুলিশ বিচক্ষণতার সঙ্গে মিজো যুবা বাহিনীকে পাহাড়েই আটকে দেয়। তারা আসতে পারেনি ব্রুদের পথ অবরোধ স্থলে।

।।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা পুলিশের।।

এই তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই জম্পুই থেকে কাঞ্চনপুর আসার পথে এক বুলেরো গাড়ি  নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহি টমটমকে ধাক্কা দেয়। এই দুর্ঘটনায় টমটমে থাকা পাঁচ যাত্রী জখম হয়। তারা সবাই রিয়াং সম্প্রদায়ের। স্বাভাবিক ভাবে অবরোধস্থলের উত্তেজিত যুবকরা
বুলেরোর চালককে প্রচন্ড মারধর করে। সে বাঙালি সম্প্রদায়ের। তাকে সহ টমটমে থাকা আহত যাত্রীদের পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।


মুহূর্তেই এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ে গোটা কাঞ্চনপুর মহকুমায়।  বিভিন্ন প্রান্তে থেকে রিয়াং সম্প্রদায়ের যুবকরা ছুটে আসে জাতীয় সড়কের অবরোধস্থলে। বাড়তে থাকে ভীড়। অন্যদিকে
জম্পুই হিলের মিজো যুবকরাও জড়ো হয়। উভয় পক্ষ আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণের জন্য পরিকল্পনা নেয়।


তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রাথমিকভাবে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে কাঞ্চনপুর।
তথাপি সমগ্র কাঞ্চনপুর মহকুমায় মিজো- রিয়াং  ও বাঙ্গালীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। একই সাথে মহকুমার একটি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব আগুনে ঘী ঢালার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ উঠছে। যে কোন সময় রিয়াং ও মিজো সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে বিগড়ে যেতে পারে কাঞ্চনপুরের পরিস্থিতি। আশঙ্কা স্থানীয় লোকজনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *