ডেস্ক রিপোর্টার, ২০আগষ্ট।।
সুবল ভৌমিককে তৃণমূল কংগ্রেস আর ধরে রাখতে পারবে না। তিনি চলে যাবেন গেরুয়া শিবিরে। সুবল ভৌমিকের বর্তমান এই সিদ্ধান্তের কথা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছে তৃণমূলের বঙ্গ নেতৃত্ব। তাই সুস্মিতা দেবকে রাজ্য তৃণমূলের সভানেত্রী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এমনই খবর রাজধানীর চিত্তরঞ্জন রোডস্থিত সবুজ বাড়ির অন্দর মহলে।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, সম্ভবত চলতি মাসেই জেপি নাড্ডার রাজ্য সফরে তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুবল ভৌমিক যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে।সুবল বিজেপিতে যোগ দিলে প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদ শূন্য হয়ে যাবে। তাহলে কাকে বসানো হবে সুবলের চেয়ারে? এই প্রশ্ন যখন ঘাসফুল শিবিরে ঘুরপাক খাচ্ছে, তখনই দলের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সুস্মিতা দেবকে ত্রিপুরা প্রদেশের সভানেত্রী করার সিদ্ধান্ত নেন।
খবর অনুযায়ী তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভার সংসদ সুস্মিতা দেব রাজধানীর ভগবান ঠাকুর চৌমুনীতে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। আর্কিটেক্ট দিয়ে এই ফ্ল্যাট সাজানোর কাজ চলছে। এই মুহূর্তে ফ্ল্যাটে চলছে শেষ তুলির টান। প্রতি মাসে ফ্ল্যাট ভাড়া মোট ৬০ হাজার টাকা। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই সুস্মিতা দেব ভগবান ঠাকুর চৌমুহনীস্থিত তার ফ্ল্যাটে শুভ উদ্বোধন করবেন। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই সুস্মিতা দেবকে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী হিসেবে ঘোষণা দেবে বঙ্গ নেতৃত্ব। তার আগে অবশ্যই তৃণমূল কংগ্রেসকে আলবিদা জানিয়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন সুবল ভৌমিক। তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেই এই সংক্রান্ত তথ্য জানা যায়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সুস্মিতা,রাজীব জুটি ত্রিপুরাতে ফের তৃণমূল কংগ্রেসকে সাজানোর চেষ্টা করবেন। এবং বিধানসভায নির্বাচনে করবে লড়াই। এই জন্যই সুবলকে বাদ দিয়েই দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের রাজ্য কমিটি ঘোষণা দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের পুরনো কর্মীদের ফের ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এই মুহূর্তে রাজ্যে অবস্থান করছেন বঙ্গ তৃণমূলের ওবিসি ছেলের নেতা শ্যামল নাথ। তিনি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। তাদের কাছ থেকে বোঝার চেষ্টা করছেন সমস্যা। বঙ্গ তৃণমূলের ওবিসি ছেলের নেতা শ্যামল নাথ সাক্ষাৎ করেছেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল ত্যাগী নেতা আশীষ দাসের সঙ্গেও। তিনি ফোনে যোগাযোগ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য আশিস লাল সিংয়ের সঙ্গেও। এছাড়া অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও যোগসূত্র গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন।তবে এটাও বাস্তব, কুনাল – শান্তনুদের মতো প্রথম সারির নেতাকে বাদ দিয়ে সংগঠন করার জন্য তৃণমূলের ৫নম্বর সারির নেতাকে রাজ্যে পাঠিয়ে সংগঠনকে কতটা শক্তিশালী করতে পারবে তা নিয়ে উঠছে নানান প্রশ্ন।
তৃণমূলের খবর অনুযায়ী, রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেবকে প্রদেশ তৃণমূলের সভানেত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে। যদি তাই হয়,তাহলে সুস্মিতা দেব এই রাজ্যে তৃণমূলকে কতটা সাফল্য এনে দিতে পারবেন? তা নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক বিশারদরা।কেননা অসমের তৃণমূল রাজনীতিতেই গুরুত্বহীন সুস্মিতা দেব। তার জায়গা শিলচরেও সুস্মিতাকে অন্যান্য তৃণমূল নেতারা পাত্তা দিতে নারাজ। স্বাভাবিক ভাবেই নিজের রাজ্য অসমে স্থায়ী জায়গা না পেয়ে ত্রিপুরাতে এসে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করার কাজ শুরু করেছেন সুস্মিতা দেব। কিন্তু তার পিতা প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মোহন দেবের নানান কীর্তিকাহিনী প্রকাশ্যে এলে সুস্মিতার পক্ষে রাজ্য রাজনীতিতে নিজেকে তুলে ধরা অসম্ভব হয়ে উঠবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
