
ডেস্ক রিপোর্টার, ১ফেব্রুয়ারি।।
সম্প্রতি সামনে মেলাঘর থানার বড়সড় ঘোটালার উপাখ্যান। পুলিশ আটককৃত ৩oটি স্বর্ণের বিস্কুট হাফিজ করে নিয়েছে। বিনিময় মূল্য ৩২ লক্ষ টাকা। মেলাঘর থানায় কান পাতলেই এই তথ্য উগলে দিচ্ছেন খোদ থানায় কর্মরত পুলিশ কর্মীরাই। গোটা ঘটনা গুনাক্ষরে জানতে পারেন নি সিপাহীজলার এসপি। “এডিশনাল এসপি থেকে ওসি”- এই রেকেটের মধ্যেই নিঃশেষ শেষ হয়ে যায় আটককৃত স্বর্ণের বিস্কুটগুলি। কোথায় আছেন রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন ও খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? পুলিশ এখন ফ্রী হ্যান্ড পেয়ে নিজের আখের গোছানোর কাজেই ব্যস্ত।

মেলাঘর থানার অন্দর মহলের খবর অনুযায়ী, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চলতি মাসের প্রথম দিকে সীমান্ত এলাকার এক বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়েছিলো।নেতৃত্বে ছিলেন থানার ওসি দেবাশিষ সাহা।পুলিশ এই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩০টি স্বর্ণের বিস্কুট উদ্ধার করে। নিয়ম মতো পুলিশ স্বর্ণের বিস্কুট সহ এই বাড়ির মালিক অর্থাৎ পাচারকারীকে থানায় তুলে নিয়ে আসে। এরপরই শুরু হয় পুলিশি নাটক।

থানায় কর্মরত পুলিশ কস্টেবলদের কথায়, স্বর্ণের বিস্কুট উদ্ধারের পর শাসক দলীয় কয়েকজন নেতা পুলিশের সঙ্গে সমঝোতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। শাসক দলীয় নেতারা ছিলেন ধৃত পাচারকারীর উপদেষ্টা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ সমঝোতার টেবিলে টাকার গন্ধে মোহিত হয়ে যায়। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা আটককৃত ৩০টি স্বর্ণের বিস্কুটের মধ্যে ২৮টি দিয়ে দেবে।দুইটি বিস্কুট তারা রেখে দেবে। বিনিময়ে পুলিশকে দিতে হবে ৩৫ লক্ষ টাকা। শেষ পর্যন্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয় ৩২ লক্ষ টাকায়। বিনিময়ে পুলিশ পাচারকারীকে ছেড়ে দেয়। এবং সঙ্গে ২৮টি স্বর্ণের বিস্কুট। চুক্তি মোতাবেক বাদবাকি দুইটি বিস্কুট রেখে দেয় পুলিশ। গোটা ঘটনা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মেলাঘর থানার ওসি দেবাশিষ সাহা।

থানার অভ্যন্তরের “স্বর্ণের বিস্কুট” কাণ্ডের খবর গুনাক্ষরেও জানতে পারেন নি সিপাহীজলার পুলিশ সুপার। কিন্তু জেলার একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এই ঘটনা জেনে যায়। অভিযোগ, সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানার ওসিকে জরুরী তলব করেন। এবং টাকার অংশ দাবি করেন। শেষ পর্যন্ত এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করেন ওসি সাহেব। অবাক করার মতো ঘটনা ওসি দেবাশিষ থানার দুয়েকজন অফিসারকে কিছু টাকা হাতে দিয়েছেন। বাদবাকী টাকা নিজেই রেখেছে বিশ্বস্ত পকেটে।স্বাভাবিক ভাবেই থানার নিচু স্তরের কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।তাদেরকে ওসি চা খাওয়ায় টাকাও দেন নি। তাই থানার নিচু স্তরের কর্মীরা থানাদার দেবাশীষের কুকীর্তির উপাখ্যানের ক্যাসেট বিনা পয়সাতেই বিক্রি করছেন বাজারে। মেলাঘর থানার ভিতরে এই স্বর্ণের বিস্কুটের ঘটনা ওপেন সিক্রেট। কিন্তু কেউ প্রকাশ্যে বলার সাহস করছে না। কারণ ইতিমধ্যে থানাদার নাকি হুমকি দিয়েছেন, এই বিষয়ে কেউ মুখ খুললে রাজনৈতিক নেতাদের লেলিয়ে দিয়ে তাদেরকে বদলি করে দেবে প্রান্তিক অঞ্চলে।