ডেস্ক রিপোর্টার,২৯জুন।।
ছাত্রীকে শ্লীলতাহানী অভিযোগে দিল্লী পুলিশের হাতে গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া। তার বিরুদ্ধে নির্যাতিতা ছাত্রী দিল্লির কৌটিল্যমার্গ থানায় মামলা দায়ের করে। এই মামলার প্রেক্ষিতেই পুলিশ আইপিএফটির বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়াকে বুধবার গ্রেফতার করে। ঘটনা মঙ্গলবার রাতে, ত্রিপুরা দিল্লিস্থিত ত্রিপুরা ভবনে।ত্রিপুরা ভবনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের জিএ(এসএ)ডিপার্টমেন্টের অবর সচিবকে। বুধবার মেবার কুমার জমাতিয়াকে তদন্তকারী পুলিশ আদালতে সোপর্দ করে।আদালত তাকে দুইদিনের জেল হাজতে নির্দেশ দিয়েছে।
দিল্লি সূত্রের খবর, কৌটিল্যমার্গস্থিত ত্রিপুরা ভবন থেকে গত ছয় মাস ধরেই পড়াশোনা করছে রাজ্যের এক ছাত্রী। সে দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে। পারিবারিকভাবে এই ছাত্রীর আর্থিক অবস্থা অসচ্ছল। এই কারণেই ছাত্রীটি দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার আগে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিল। ছাত্রীটি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে তার আবেদন পত্রে জানিয়েছিল,দিল্লিতে ত্রিপুরা ভবনে তার থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে। কারণ দিল্লিতে থেকে পড়াশোনা করার মতো তার আর্থিক ক্ষমতা নেই । রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ছাত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে তাকে ত্রিপুরা ভবনের থাকার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর থেকেই গত ছয় মাস ধরে এই ছাত্রী থাকছে ত্রিপুরা ভবনেই।
সম্প্রতি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা আইপিএফটির বিধায়ক মেবার কুমার জমাতিয়া দিল্লির ত্রিপুরা ভবনে অবস্থান করছেন। মেবার কুমার থাকতেন ত্রিপুরা ভবনের ত্রিতলে দুই নম্বর রুমে। নির্যাতিতা ভার্সিটি ছাত্রীর অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে মেব্যার কুমার জমাতিয়া আচমকা তাকে মোবাইলে ফোন করে এবং তার রুমে আসার নির্দেশ দেয়। মেবার কুমারের সঙ্গে ভার্সিটির ছাত্রীটির পূর্ব পরিচয় ছিল। কারণ ছাত্রীটি মেবার কুমার জমাতিয়ার গ্রামের বাড়ির প্রতিবেশী। এই কারণে মেবারের ডাকে ছাত্রীটি তার রুমে চলে আসে। রুমে যাওয়ার পর মেবার ছাত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে।এবং তাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করে। তখন মেয়েটি চিৎকার দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।এই ঘটনা পরখ করে ত্রিপুরা ভবনে উপস্থিত লোকজন। রাতেই নির্যাতিতা ভার্সিটির ছাত্রী দিল্লির কৌটিল্য মার্গ থানায় ফোন করে বিষয়টি জানায়। সঙ্গে সঙ্গে ত্রিপুরা ভবনে ছুটে আসে পুলিশ। রাতভর ত্রিপুরা ভবন কর্তৃপক্ষের সামনেই নির্যাতিতা ছাত্রী ও রাজ্যের বিধায়কের মেবার কুমার জমাতিয়াকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে মেবার জমাতিয়া কথাবার্তায় অসংলগ্নতার ছাপ খোঁজে পায় তদন্তকারী পুলিশ।বুধবার সকালে পুলিশ ফের ত্রিপুরা ভবনে আসে এবং নির্যাতিতা ছাত্রী ও মেবার কুমার জমাতিয়াকে থানায় নিয়ে যায়।
পরবর্তী সময় মেয়েটির অভিযোগ মূলে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করে মেবার কুমার জমাতিয়াকে।
মেবার কুমার জমাতিয়ার অনুগামীদের বক্তব্য, ষড়যন্ত্র করে মেবারকে ফাঁসানো হয়েছে। গোটা ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাজনীতি। কারণ মেবার কুমার জমাতিয়া খুব শীঘ্রই তিপ্রামথাতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
মেবার ত্রিপুরা মাথাতে যোগ দিলে নিঃসন্দেহে প্রত্যুতের শক্তি অনেকটাই বেড়ে যাবে। এবং পাহাড়ে একেবারেই মিশে যাবে আইপিএফটি। শুধু কি তাই, শাসক দল বিজেপির জন্যও নাকি মেবার আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠতে পারেন। বলছে, মেবারের অনুগামীরা। তিপ্রামথার নেতৃত্ব বলছেন, মেবার কুমার জমাতিয়াকে ফাঁসানো হয়েছে। তাদের বক্তব্য, অভিযোগকারী ছাত্রীর সঙ্গে বিজেপি নেত্রী পাতাল কন্যার সম্পর্ক রয়েছে। সে পাতালকন্যার লোক হিসাবেই পরিচিত।এই কারণে গোটা ঘটনার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে মথা। তবে পুরো ঘটনার রহস্য ভেদ করতে পারবে তদন্তকারী দিল্লি পুলিশ।