ডেস্ক রিপোর্টার, আগরতলা
বোধজংনগর থানার ডিসি পাড়ার বিন্দামুড়া থেকে হাত- পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার দুই যুবকের লাশ।তাদের নাম পুষ্পক সাহা (৩২) ও বাসুদেব দেববর্মা(৩১)। উভয়ের বাড়ি রাজধানীর অ্যাডভাইজার চৌমুনীর পদ্মপুকুর পাড়। রবিবার দুপুরে স্থানীয় লোকজন জঙ্গলে লাশ দেখতে পেয়ে খবর দেয় পুলিশকে। বোধজংনগর থানার পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তবে কি কিভাবে, কোথায় এবং কারা তাদের হত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ময়নতদন্তের রিপোর্ট আসলেই চিত্র আরো পরিষ্কার হবে বলে দাবি তদন্তকারী পুলিশের।
বোধজংনগর থানা থানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার রাত দশটা নাগাদ পুষ্পক সাহা ও বাসুদেব দেববর্মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।রাতে তারা আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। রাতেই বাড়ির লোকজন তাদের খোঁজাখুঁজি শুরু করে। কিন্তু তাদের সন্ধান পায়নি। উভয়ের মোবাইলের সুইচ বন্ধ ছিল।স্বাভাবিক ভাবেই পরিবারের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। অবশেষে রবিবার দুপুরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় ডিসি পাড়ার বিন্দুমুড়া থেকে। মৃতদেহ দুইটি বাধা ছিল দড়ি দিয়ে। মৃতদেহ ছিল আঘাতের চিহ্ন।
তদন্তকারী পুলিশের দাবি, খুন হওয়া দুই যুবক পুষ্পক সাহা ও বাসুদেব দেববর্মা উভয়ই জড়িত ছিল নেশা মুক্তি কেন্দ্রের সঙ্গে। নন্দনগরস্থিত একটি নেশা মুক্তি কেন্দ্রে তাদের আসা যাওয়া ছিল হামেশাই। প্রাথমিকভাবে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশ এই তথ্য জানতে পেরেছে। তদন্তকারী পুলিশের ধারণা, নেশা মুক্তি কেন্দ্রের কোন ঘটনা কেন্দ্র করেই এই খুন সংঘটিত হয়েছে। বোধজং নগর থানার পুলিশ একটি খুনের মামলা রুজু করে শুরু করেছে তদন্ত।
জোড়া খুনের ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত থাকতে পারে ? এবং খুনের মোডাস অপারেন্ডি সম্পর্কে পুলিশের কাছে এখনো কোনো স্পষ্টিকরণ নেই। তদন্তর স্বার্থে রাতেই পুলিশ নন্দনগর নেশা মুক্তি কেন্দ্রের সঙ্গে জড়িত আরো তিন যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করতে পারে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পরই জোড়া খুনের রহস্য উন্মোচন করতে পারবে পুলিশ।
রাতেই পুলিশ এবং গোয়েন্দা আধিকারিকরা পৃথক পৃথকভাবে খুন হওয়া পুষ্পক ও বাসুদেব এর পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে পুলিশ বেশ কিছু ক্লু পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র ধরেই তদন্তের জাল বিস্তার করেছে পুলিশ। সন্দেহের তালিকায় রয়েছে আরো পাঁচ থেকে ছয় জন। ইতিমধ্যেই পুলিশ এই সমস্ত সন্দেহজনক লোকজনের গতিবিধির উপর নজর রাখতে শুরু করেছে। রেকর্ড করা হচ্ছে তাদের মোবাইল ফোন। পাশাপাশি শনিবার থেকে সন্ধিগ্ন লোকজন কাদের সঙ্গে ফোনে বার্তালাপ করেছে তারও অনুসন্ধান করছে বোধজং নগরের পুলিশ।
তদন্তকারী পুলিশ জানিয়েছে, নেশা মুক্তি কেন্দ্রে এমন কি সমস্যা তৈরি হয়েছিল, যার জন্য খুন হতে হয়েছে পুষ্পক ও বাসুদেবকে। খুনের ঘটনার রহস্য উন্মোচনে নির্দিষ্ট ছক কষেই অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশ। খুব শীঘ্রই জোড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কুশীলবদের কবর থেকে তুলে আনবে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক।
বোধজংনগর থানা এলাকা থেকে জোড়া লাশ উদ্ধারের ঘটনা কেন্দ্র করে একটি বিশেষ মহল বিভ্রান্ত ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল।এই সংক্রান্ত ঘটনার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল পুলিশও। এই কারণেই গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলছে আরক্ষা প্রশাসন।এই জোড়া লাশ উদ্ধারের ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের ব্যর্থতাও প্রকট হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *