
ডেস্ক রিপোর্টার, ১৩ডিসেম্বর।
বরাক নদী দিয়ে জল যত গড়াচ্ছে,আন্দোলন ততই তেজি হচ্ছে। কিসের আন্দোলন? পৃথক রাজ্যের দাবি। বিজেপি শাসিত অসমের বাঙালিরা আর অসমীয়াদের সঙ্গে সংসার করতে চাইছেন না। অসমীয়াদের টানা বঞ্চনার নীতির কারনে গর্জে উঠেছে বরাক ভ্যালির বাঙালিরা। তারা এখন নিজেদের সাংবিধানিক অধিকার চাইছে। তারা চাইছে স্বতন্ত্র রাজ্য। যেখানে থাকবেনা অসমীয়াদের রক্তচক্ষুর আস্ফালন। তারা আর সহ্য করতে পারছে না স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন আলফার চোখ রাঙানি। বাঙালি এখন অধিকার বুঝে নিতে শিখেছে। তাই গোটা বরাক ভ্যালিকে অসম থেকে পৃথক করে স্বতন্ত্র রাজ্যের দাবীকে পৌঁছে দিতে পেরেছে দেশের রাজনীতির পীঠস্থান “সংসদ ভবনে”।

বরাক ভ্যালির সামাজিক সংগঠক বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের আহ্বানে জেগে উঠেছে বাঙালিরা। পৃথক রাজ্যের দাবিতে মঙ্গলবার গোটা বরাক জুড়ে ছিল হোডিংয়ের ছয়লাপ। শিলচর, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রচুর হোডিং। এই সমস্ত হোডিংয়ের মাধ্যমে বরাকবাসী অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে চরম বার্তা দিয়েছে। তারা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, বরাক কখনো অসমের অঙ্গ ছিলো না। অসমের সঙ্গে বরাককে যুক্ত করার নীল নক্সা করেছিলো ব্রিটিশ।

কালে কালে দিসপুরের শাসক গোষ্ঠীর মুখ পরিবর্তন হলেও তাদের মুখোশ ছিলো একই।কারণ কংগ্রেস – বিজেপি সহ অসমের সমস্ত শাসক গোষ্ঠী বাঙালিদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখে দিয়েছিল।বাঙালির রক্তে লাল হয়েছিলো ভূপেন হাজারিকার রাজ্য। কিন্তু কখনো বাঙালিদের সন্মান করে নি অসমের দিসপুরের দণ্ডমুণ্ডের কর্তারা। তরুণ গগৈ থেকে হালের হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং তাদের পূর্বসুরীরা কখনো বাঙালিদের প্রতি সুবিচার করে নি। বরং তাদেরকে দাপিয়ে রেখে ধারাবাহিক ভাবে অত্যাচারের স্টিম রোল চালানো হয়েছিল।

অসমের বাঙালিরা দীর্ঘ দিন অত্যাচারিত হওয়ার সুবাদে তারা এখন পাল্টা প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। তারা চাইছে পৃথক রাজ্য। বরাক ভ্যালিকে ভিত্তি করে বাঙালিরা পূর্বাচল রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছে। বরাক উপত্যকার “বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট” নামক একটি সংস্থা দায়িত্ব নিয়ে বরাক সহ গোটা অসমের বাঙালিদের দাবি তুলে ধরেছে দেশের সামনে। তারা কলকাতা, দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে বাঙালিদের জন্য পৃথক পূর্বাচল রাজ্যের দাবিকে ভারত সরকারের গর্ভগৃহে পৌঁছে দিয়েছে।
এখন বরাক সহ গোটা অসমের বাঙালিরা এক্ জোটে পৃথক রাজ্যের দাবিতে তুফান তুলছে দিসপুরের রাজনীতিতে। তাই বাঙালিরা সমস্ত ভয় ভীতি উপেক্ষা করে বুক ফুলিয়ে নিজেদের অধিকার অর্জনের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে পৃথক রাজ্যের স্বপ্নকে সাকার করতে।