ডেস্ক রিপোর্টার, ৩রা জানুয়ারী।।
                   ২৪- র ভোট যুদ্ধকে সামনে রেখে প্রত্যাশিত ভাবেই নতুন কমিটির ঘোষনা দিয়েছে প্রদেশ বিজেপি। নতুন কমিটিতে রয়েছে বেশ চমক। সাংগঠনিক কাজের সুবিধার্থে প্রথমত কমিটির আকার ছোট করা হয়েছে। মোট ১৮ জনের রাজ্য কমিটি গঠন করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আগের কমিটিতে সদস্য সংখ্যা ছিলো ২৮জন।
                   ভারতীয় জনতা পার্টির নতুন কমিটিতে স্থান পেয়েছেন সুবল ভৌমিক ও বিল্লাল মিয়া।২৩- র বিধানসভা নির্বাচনের আগে সুবল ভৌমিক তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। তবে১৮- র আগে ত্রিপুরায় বিজেপির জমি মজবুত করার ক্ষেত্রে সুবল ভৌমিকের বড় ভূমিকা ছিলো। এটা অবশ্যই অস্বীকার করতে পারবে না বিজেপি নেতৃত্ব।১৮- র নির্বাচনের পর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে সম্পর্কের ছেদ ঘটায় সুবল বিজেপি ত্যাগ করেছিলেন।


তিনি কংগ্রেস – তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সংসার করে পুনরায় ফিরে এসেছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। নতুন কমিটিতে সুবলকে যোগ্য সন্মান দিয়েছে ভাজপা নেতৃত্ব। তাকে দেওয়া হয়েছে দলের  সহ – সভাপতির দায়িত্ব। আগেও তিনি ছিলেন সহ – সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। রাজ্য রাজনীতিতে সুবল একজন পোর খাওয়া নেতা। এটা বিলক্ষণ জানেন ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্ব। আরএসএস – র সঙ্গেও সুবল ভৌমিকের সুসম্পর্ক।


রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিল্লাল মিয়া সদ্য কংগ্রেস ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সদ্য সমাপ্ত উপ নির্বাচনের প্রাক লগ্নে তিনি গা ভাসিয়ে ছিলেন বিজেপিতে। তিনিও রাজ্য রাজনীতির পরিচিত মুখ। এবং একজন লড়াকু নেতা। বিল্লাল মিয়াকেও ভারতীয় জনতা পার্টি যোগ্য সন্মান দিয়েছে। বিজেপির মাইনরিটি মোর্চার রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিল্লালকে। নিঃসন্দেহে বিল্লাল মিয়ার জন্য এটা  বড় প্রাপ্তি। বিজেপি নেতৃত্ব সুবল – বিল্লালকে নিয়ে কোনো রকম ছেলে খেলা করিনি।তাদেরকে উপযুক্ত জায়গাতেই বসিয়ে দিয়েছে।


অন্য দিকে বিজেপির কাছে ব্রাত্য থেকে গেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সহ – সভাপতি আশীষ লাল সিং ও প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত ভট্টাচার্য। তারা উভয়েই ২৩- র নির্বাচনের পর তৃণমূল ও কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, আশীষ – প্রশান্ত উভয়কেই রাজ্য কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে। কিন্তু তাদের ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ে নি। বিজেপি নেতৃত্ব তাদেরকে কোনো গুরুত্বই দেয় নি। রীতিমতো ছুঁড়ে ফেলে দেয়। বিজেপি থিঙ্ক-ট্যাঙ্কদের কথায়, আশীষ লাল সিং বিজেপিতে যোগ দিয়ে চলে গিয়েছেন রহস্য জনক অন্তর্ধানে!তাকে প্রদেশ বিজেপির কোনো কাজেও পাওয়া যায় না। দুই কেন্দ্রের উপভোটে তাদেরকে কদাচিৎ দেখা গিয়েছিল।  আশীষ লাল সিংয়ের বক্তব্য, “তার মা অসুস্থ। এই কারণেই মায়ের দেখাশুনার জন্য তাকে রাজ্যের বাইরে থাকতে হচ্ছে।” তবে বিজেপি ঘেঁষা দিল্লি ভিত্তিক কিছু সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছেন আশীষ। প্রশান্ত ভট্টাচার্য রাজ্যে থাকলেও তিনি নিষ্প্রভ। দলের কোনো কাজে তাকে দেখা যায় নি। তাই নতুন রাজ্য কমিটিতে আলোচনাতেই আসে নি তার নাম।কিন্তু দুই কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে প্রশান্তকেও মাঝে মধ্যে দেখা গিয়েছিলো।


ভাজপা নেতৃত্বের বক্তব্য, আশীষ – প্রশান্ত- র বিশেষ কিছু জন সমর্থন নেই। তারপরও দল তাদেরকে সাংগঠনিক কাজে ব্যাবহার করতে চাইছে। কিন্তু তারা নিজেরাই সরে আছে দূরে।
  জন সমর্থনের প্রশ্নে  একই অবস্থা সুবল ভৌমিকের। তিনি এখন অতীতের ছায়া মাত্র।তবে সুবল সাংগঠনিক ভাবে অনেক বেশী অভিজ্ঞ। বিজেপির দুর্দিনের কান্ডারী।ঘরের ছেলে। এবং সংগঠক হিসাবে পরীক্ষিত।সর্বোপরি সমস্ত দিক বিচার বিবেচনা করে নতুন রাজ্য কমিটির গঠন প্রক্রিয়ায় গণনার মধ্যেই আসে নি আশীষ – প্রশান্ত- র নাম। দাবি, কৃষ্ণনগরের কুশাভাউ ভবনের দন্ডমুণ্ডের কর্তাদের।
                  
                  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *