আগরতলা: ত্রিপুরায় ২৩ জুন উপনির্বাচনের আগে দুই সপ্তাহেরও কম সময় বাকি থাকতে, বিজেপির ওবিসি মোর্চার প্রাক্তন রাজ্য সহ-সভাপতি সুব্রত চৌধুরী শুক্রবার ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুস্মিতা দেব এবং সুবল ভৌমিকের উপস্থিতিতে সুব্রত চৌধুরী দলে যোগদান করেন। একজন প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটার ছাড়াও সুব্রত চৌধুরী বিজেপির সদর জেলা সহ-সভাপতিও ছিলেন।
তাঁকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি, শুক্রবার ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুবল ভৌমিক বলেছেন যে তারা তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে বিজেপির ক্রমাগত আক্রমণ এবং দলের ফেস্টুন, ব্যানার পতাকা ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখেছিলেন।
সুবল ভৌমিক বলেছেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনকে আবারও চিঠি দিয়েছি যে বিজেপির “বাইক বাহিনী” নির্বাচনের আগে আমাদের দলের পতাকা ও ফেস্টুন খুলে ফেলছে এবং আমাদের কর্মীদের আক্রমণ করছে। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা গতকাল সমস্ত প্রার্থীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন এবং আমরা পুরো ঘটনা বর্ণনা করেছি। আজকে আমরা চিঠিও জমা দিয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয়।”
ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে কমিশন যদি কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ না নেয় তবে দল রাস্তায় নামবে। তিনি বলেছেন, “কীভাবে অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের সুযোগ আছে? গতকাল, মহাবীর বাগানে এক বিজেপি নেতা আমাদের কর্মী গণেশ গোয়ালার বিরুদ্ধে হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। বিজেপি কর্মীরা সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রে দারাং এবং বামনছেরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আমাদের দলের পোস্টার ও পতাকা ছিঁড়ে ফেলেছে।”
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বাইক বাহিনীর “গুন্ডা” সংস্কৃতিকে সমর্থন করার জন্য বিজেপির নিন্দাও করেছেন। তিনি জিজ্ঞাসা করেছেন, “বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে বিজেপির বাইক বাহিনীর সদস্যরা তাদের নিজস্ব মন্ডল সভাপতিকে টাকরজালায় মারধর করেছে। তখন তৃণমূল নেতারা কতটা নিরাপদ?”
প্রবীণ নেতা ২০২০- এনসিআরবি পরিসংখ্যানও উদ্ধৃত করেছেন মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে কীভাবে উত্তরপূর্ব ভারতের ত্রিপুরায় রাজনৈতিক কারণে হিংসা এবং দাঙ্গার সর্বোচ্চ ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, “আমরা এটা সহ্য করব না এবং চুপ থাকব না। আমরা ভারতের নির্বাচন কমিশন এবং ত্রিপুরার আধিকারিকদেরও জানিয়েছি। যদি এই বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হয় এবং আরও একটি বড় ঘটনা ঘটে, আমরা রাস্তায় বসে থাকব প্রতিবাদ করবো।”
তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব উল্লেখ করেছেন যে তৃণমূল নেতারা কোনও হিংসার আশ্রয় নেননি। তিনি বলেছেন, “এমনকি যখন আমাদের পতাকা ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছিল, তখনও আমাদের কর্মীরা কিছুই করেনি। আমাদের দল এটা বিশ্বাস করে না কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমি প্রশাসনকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবিতে আমাদের আবেদন এখনও রয়েছে। যা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। প্রয়োজনে আমরা এটিকে পুনরুজ্জীবিত করব।”