ডেস্ক রিপোর্টার, ৪মে।।
                 ঊষা বাজার সিপিডব্লিউডি- র নিগোসিয়েশন বানিজ্য এবং গ্যাং ওয়ার নিয়ে রাজ্যের জনপ্রিয় ওয়েব পোর্টাল “জনতার মশাল – এ ধারাবাহিক খবর প্রকাশিত হয়েছিল। প্রকাশিত খবর গুলির বাস্তব রূপ প্রতিফলিত হয়েছে ভারত রত্ন সংঘের সম্পাদক দূর্গা প্রসন্ন দেব হত্যাকান্ডের মাধ্যমে। এখন নতুন করে বলার কিছু নেই।
       দূর্গা প্রসন্ন খুন হয়েছে।তদন্ত করছে পুলিশ।ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে ভারত রত্ন সংঘের প্রাক্তন সভাপতি প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরী। ভিকি খুনের পেছনে রয়েছে “নারী”র যোগ। পুলিশ জালে তুলেছে বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুস্মিতা সরকারকে।তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পেয়েছে নানান ক্লু। ভিকি হত্যার “মোডাস অপারেন্ডি” অনুসন্ধানকারী পুলিশের কাছে স্পষ্ট। হত্যাকান্ডের “সিন অফ ক্রাইম” প্রমাণ করে ঘটনার সঙ্গে ভিকির ঘনিষ্ঠরাই জড়িত ছিলো। তাই  মৃত্যু নিশ্চিত করে আততায়ীরা ভিকির মোবাইল থেকেই তার দাদাকে ফোন করে লাশ নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছিলো। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের কোর টিমে ছিলো অপরাধ জগতের টাইকুন অমিতাভ ঘোষ ওরফে অমিত ওরফে দাদামনি। ভিকিকে খালাসের মূল স্ক্রিপ্ট রচনা করেছিলো অমিত ঘোষ। স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেছিলো রাজু – বিমান – রাকেশ – দেবব্রত। তদন্তকারী পুলিশের কাছে খুনের গোটা চিত্র নাট্যের স্ক্রিপ্ট জলের মতো পরিষ্কার।

।।অমিত ঘোষ ও রাজু বর্মন।।

দূর্গা প্রসন্ন ওরফে ভিকি হত্যার পরবর্তী পরিস্থিতি আরোও ভয়ানক । এবং হাড়হিম করার মতো। পুলিশের কাছে উঠে এসেছে এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য। গোয়েন্দার দেওয়া তথ্য বলছে, রক্ত খেকো অমিত ঘোষ – রাজু বর্মনরা ভিকিকে খুন করেই বসে নেই।তারা অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে মধ্যেই আবার নতুন করে কাউকে কুতল করার জন্য সাজিয়েছে নতুন প্লট। দ্বিতীয় দফায় সমাজদ্রোহী অমিত – রাজুর টার্গেট পয়েন্টে আছেন আরো একজন।তিনি বিজেপি নেতা আশীষ লাল সিং।রাজ্যের প্রয়াত প্রথম মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিংয়ের পুত্র। পুলিশ আশীষ লাল সিংকে সাবধান করে দিয়েছে। এবং তিনি যে অমিত – রাজু’র “লেজার লাইটের” মধ্যে আছেন, তাও স্পস্ট করে দিয়েছে।
              আশীষ লাল সিং কেন অমিত – রাজুর রাডারে? এই প্রতিবেদনে আমরা অনুপুঙ্খ ভাবে তুলে ধরবো সেই তথ্যও।


সমাজদ্রোহী রাজু বর্মনের উপদেষ্টা ছিলো অমিত ঘোষ। যাকে রাজ্যের অপরাধ জগতের মিসিং লিংক বলা হয়ে থাকে। অমিত ঘোষকে “ব্যাকবোন”করে নিগোসিয়েশিন বাণিজ্যের মধুর ভান্ড দখল করে রেখেছিলো । অদৃশ্যে ছিলো রাজনৈতিক শক্তিও।


অন্য দিকে খুন হওয়া দূর্গা প্রসন্ন বরাবর ছিলো আশীষ অনুগামী। আশীষ লাল সিংয়ের সঙ্গেই দীর্ঘ দিন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িত ছিলো। পরে ২০১৬ সালে তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করে দূর্গা চলে এসেছিলো বিজেপিতে। সম্প্রতি আশীষ লাল সিং বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দূর্গা প্রসন্নও পায়ের নিচে শক্ত জমি খুঁজে পায়। আশীষ লালের স্নেহভাজন ভিকি ধীরে ধীরে কোণঠাসা করে ফেলে রাজু বর্মনকে। তার সঙ্গেও অদৃশ্যে ছিলো রাজনৈতিক শক্তি। শেষ পর্যন্ত রাজুদের এলাকা ছাড়তে হয়। হাত ছাড়া হয়ে যায় ক্লাব। রাজুর পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায়।বিপাকে পরে যায় অমিত ঘোষও।কারণ অমিত জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর তার “টাকার কল” ছিলো রাজু বর্মন। চতুর অমিত বুঝে গিয়েছে ভিকির পেছনে আশীষ লালের হাত থাকলে সে রাজনৈতিক ভাবে দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

।।আশীষ লাল ও ভিকি।।

এবং সিপিডব্লিউডি – র মধুর ভান্ড পুরোপুরি ভাবে দখল করবে। কারণ কংগ্রেস রাজনীতি থেকেই অমিত ঘোষ শচীন পুত্র আশীষ লাল ওরফে হনুর রাজনৈতিক শক্তি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। অমিত – রাজু বুঝে গিয়েছে ভিকি – আশীষ জুটিকে ব্যাকফুটে ঠেলতে না পারলে তারা হয়ে যাবে সহায় সম্বলহীন। ব্যাস, বাজারে টিকে থাকতে গেলে “কুতল” ব্যতীত অন্য কোন পথ তাদের কাছে খোলা নেই।স্বাভাবিক ভাবেই ভিকিকে না ফেরার দেশে পাঠানোর ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে অমিত – রাজু জুটি। এবং পরিকল্পনাকে সফল করে।


বাজার ধরে রাখতে গেলে টপকাতে হবে আশীষকেও। এটা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছে অমিত ঘোষ।তাই লোহা গরম থাকতেই তাতে আরোও উষ্ণতা বাড়ানোর জন্য আশীষ লাল সিংকে খালাস করার প্লট সাজিয়েছে অমিত – রাজুরা।তাদের দ্বিতীয় পরিকল্পনার  খবর আগাম চলে এসেছে গোয়েন্দার কাছে। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে আশীষকে করা হয়েছে সতর্ক। রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর অমিত – রাজু’র  দ্বিতীয় টার্গেটের খবর নিয়ে ব্যাতিব্যস্ত। তারাও সতর্ক। এবং অমিত – রাজু জুটিকে জালে তুলতে পাল্টা ফাঁদ পেয়েছে পুলিশ – গোয়েন্দাও। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন আশীষ লাল সিং। তিনি আশঙ্কা করে বলছেন,” অবাক হওয়ার কিছু নেই। নানান সূত্র থেকে তিনি এই আভাস পেয়েছেন। তাই আছেন সাবধানে।” আশীষ লাল সিংয়ের কথায়, তাঁর বাবা ছিলেন ত্রিপুরার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী।কাজ করেছিলেন রাজ্যের মানুষের জন্য। আশীষ প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন,” আমি কখনো অপরাধ করি নি।মানুষকে সাহায্য করেছি। তাই কোনো ভয় নেই। আস্থা আছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের উপর “।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *