ডেস্ক রিপোর্টার,১৩ফেব্রুয়ারি।।
” ১৮-র বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন ত্রিপুরাকে ‘হীরা’ দেবেন।বাস্তবে নরেন্দ্র মোদী ত্রিপুরাকে দিয়েছেন “কাঠের টুকরো”।–বক্তা কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন। রবিবার কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা বলেন তিনি। কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘হীরা’ দিল্লিতে শোভা পায়,ত্রিপুরাতে নয়। ত্রিপুরাকে হীরা থেকে মুক্ত রাখার জন্য সুদীপ রায় বর্মন প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানান। সুদীপের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর হীরা ত্রিপুরার অমঙ্গল ডেকে এনেছে। প্রতিদিন রাজ্যে চলছে লুটপাট ও দুর্নীতি।
প্রধানমন্ত্রীর পর সুদীপ রায় বর্মন আক্রমণ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে। সুদীপের অভিযোগ, ৫১পিঠের এক পিঠ উদয়পুরের ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির।এই মন্দিরে একটি ট্রাস্ট গঠন হয়েছে।এই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান খোদ মুখ্যমন্ত্রী নিজে। এই ট্রাস্টের বহু কেলেঙ্কারি রয়েছে।আগামী দিনে ট্রাস্টের কেলেঙ্কারিও সামনে নিয়ে আসবেন তিনি।
কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন বলেন, রাজ্যের বিজেপি সরকার এক আজব সরকার।তারা কোর্টের রায়কে মান্যতা দিচ্ছে। সর্বশিক্ষার শিক্ষক নিয়মিত করণের জন্য আদালত রায় দিয়েছে।কিন্তু সরকার তা মানছেই না। রাজ্য সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে সুদীপ বলেন, বর্তমান সরকারকে আমরা ফেলে দেবো না ।সরকারকে ফেলে দিলে বিজেপি সুযোগ পেয়ে যাবে অজুহাত দেখানোর।তখন তারা বলবে, কাজ করার ইচ্ছা ছিলো, কিন্তু সরকার পড়ে যাওয়াতে কাজ করা যায়নি।
সুদীপ রায় বর্মন রীতিমতো বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, শাসক দলের বর্তমান বিধায়ক ৩৩জন।চারজন বিধায়ক সরে গেলেই সরকার মেজরিটি হারাবে।তখন কি করবে বিজেপি? সুদীপের সটান বক্তব্য, কংগ্রেস কাউকে ঢেকে আনবে না।কিন্তু যদি কেউ কংগ্রেসে চলে আসে, তাহলে কিছু করার নেই।
আগরতলার হকার উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে সরব হয়েছেন সুদীপ রায় বর্মন।তিনি বলেন, হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা না করে তাদের উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে। গোটা রাজ্যেই মানুষ আছে অভাবে। নেই কাজ,নেই রোজগার।অথচ রাজা ঘুরে বেড়াচ্ছেন।খবর নিচ্ছেন না মানুষের। সদ্য বিজেপি ত্যাগী বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রোমের সম্রাট নিরোর সঙ্গে তুলনা করে।ইতিহাসে বলা হয়, রোম নগরী যখন আগুনে পুড়ে যাচ্ছিল তখন সেদিকে নিরোর কোন ভ্রুক্ষেপও ছিল না। বরং সেসময় বাঁশি বাজাচ্ছিলেন নিরো।
কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মনের আক্রমণের ফলায় ছিলেন, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ। এই কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, মন্ত্রী রতন লাল নাথ গোটা শিক্ষা দপ্তরকে এনজিও’র হাতে তুলে দিয়েছেন।তাতে অবশ্যই সাধারণ মানুষের কোনো লাভ না হলেও “বিকাশ” হয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর।
রাজ্যের “পার ক্যাপিটা ইনকাম” বেড়েছে বলে দাবি করেন বিজেপি নেতৃত্ব। সুদীপের প্রশ্ন কোথায়? কাজ নেই,রোজগার নেই, তাহলে কিভাবে মানুষের মাথা পিছু গড় আয় বাড়বে।মানুষ এটা মেনে নেবেন না। গত চার বছরে একটিও স্কুল, কলেজ,হাসপাতাল বানাতে পারেনি।শুধুমাত্র আগের তৈরি বিল্ডিংগুলি রঙ লাগিয়ে উদ্বোধন করছে।রাজ্যের মানুষ এতটা বুকা নয়।তারা সবটাই বুঝতে পেরেছে।
প্রদেশ কংগ্রেস সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুদীপ রায় বর্মন বলেন, বর্তমান কংগ্রেস উন্নত কংগ্রেস হিসেবে রূপ নিয়েছে।এখন কংগ্রেস কাজ করবে মানুষের জন্য।থাকবে মানুষের পাশে।তিনিও যে কংগ্রেস ছেড়ে ভুল করেছিলেন তা স্বীকার করেছেন অকপটে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক অজয় কুমার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহ, প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ সাহা, বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা গোপাল রায় সহ অন্যান্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *