ডেস্ক রিপোর্টার,২এপ্রিল।।
গত কয়েকমাস আগেও তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখতো।দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে এসে বিপ্লব দেবের সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়েছিলেন।বাড়ছিল তৃণমূলের জন সমর্থনও।পুর ও নগর ভোটে মানুষ বিজেপি’র সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে দিয়েছিলো ভোট। তারপরেই সব যেন তালগুড় পাকিয়ে যায়।
রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস হঠাৎ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। দলের মাথায় বসানো হয় এক সময়ের লড়াকু নেতা সুবল ভৌমিকে। তারপর শুরু হয়ে যায় নেতৃত্বের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই।সুবল ভৌমিক বর্তমানে অতীতের ছায়া। প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম নেতা তথা প্রাক্তন সভাপতি আশীষ লাল সিং চলে যান রহস্য জনক অন্তর্ধানে। সুস্মিতা দেব প্রথম দিকে সক্রিয় থাকলেও পরে তিনিও নিষ্ক্রিয় হয়ে যান।কুনাল ঘোষ রাজ্যে এসে বিজেপিকে নানান ভাবে আক্রমণ করে ২৩-এ ক্ষমতা দখলের ক্যাসেট বাজিয়ে ছিলেন।কিন্তু সবই ভেসে যায় হাওড়ার জলে। সমতল,পাহাড় কোথায়ও নেই দলের শক্তি!
প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের বক্তব্য, বঙ্গ নেতৃত্বের একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দল ধুঁকছে। প্রথম থেকে ভুল করে আসছে বঙ্গ নেতৃত্ব। প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের স্টিয়ারিং কমিটিতে আহবায়ক করা হয় সুবল ভৌমিকে।এরপরই দলের একাংশ কর্মী-সমর্থক মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে।তাদের ধারণা ছিলো আশীষ লাল সিংকে দলের ব্যাটন দেওয়া হবে।কারণ রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের মূল ভীত তাঁর হাতেই তৈরি।পাহাড়েও তাঁর কিছু কিছু পকেটে সংগঠন রয়েছে।এটা নেই সুবল ভৌমিকের।এই কারণেই সুবল ভৌমিক শহরের গন্ডি ছেড়ে বেরিযে যেতে পারছেন না।
তৃণমূল কর্মীদের কথায়, একমাত্র আশীষ সিংয়ের কারণেই পুর ভোটে আমবাসা থেকে একটি আসন পেয়েছিল তৃণমূল।কিন্তু সুবল ভৌমিক দলের নির্বাচিত প্রতিনিধি সুমন দাসকে ধরে রাখতে পারেনি। সুমন যোগ দেন বিজেপিতে। কর্মীদের ভাষায়, বঙ্গ নেতৃত্ব আশীষ লাল সিংকে যে সন্মান কথা ছিলো, তা দিয়ে পারেনি। সুবল ভৌমিকের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলার নেতৃত্ব তাঁকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই একসময় আশীষ লাল সিং নিজেও হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়েন।কৈলাসহরে আশীষ লাল সিংয়ের উপর আক্রমনের পর তৃণামূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনো রকম প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। বিক্ষোভ মিছিল বা সমাবেশ তো অনেক দূরের বিষয়। কৈলাসহরের ঘটনার পর আশীষ লাল সিং অসুস্থ হয়ে পড়েন।তাকে দেখার জন্য বঙ্গ বা রাজ্য নেতৃত্ব কেউ যাননি বলে অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদের।
অসুস্থ আশীষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটে যান দিল্লিতে।এরপর থেকেই রহস্য জনক অন্তর্ধানে চলে যান।দলের কোনো স্তরের নেতা-কর্মীরা জানেন না আশীষ কোথায়?তাঁর সঙ্গে কাউর কোনো যোগাযোগ নেই। দলের সঙ্গে একেবারেই সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছেন আশীষ লাল সিং। তাঁর সঙ্গে মোবাইলেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে আশীষ লাল সিং সাইড হয়ে যাওয়ার পর দলের একটা বড় অংশের নেতা-কর্মী বসে যায়।তাদের বের করে আনতে পারেননি সুবল ভৌমিক।আশীষ লাল সিং আড়ালে চলে যাওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেস আরও দুর্বল হয়ে পড়ে বলে দাবি কর্মীদের। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল এখান সাইনবোর্ড সর্বস্ব হয়ে পড়েছে।আগামী ৬এপ্রিল তৃণমূল মহা মিছিলের ডাক দিয়েছে।কিন্তু এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক যে হয়ে পড়ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *