ডেস্ক রিপোর্টার ২৫জুন।।
সম্পন্ন হলো রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন। গণনা আগামী ২৬ জুন। সদ্যসমাপ্ত উপনির্বাচন কংগ্রেসের প্রার্থী সুদীপ রায় বর্মন ও আশীষ সাহা সহ গোটা কংগ্রেসের জন্যই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে সুদীপ- আশীষের রাজনৈতিক জীবন ভবিষ্যৎ।একই অবস্থা কংগ্রেসের।
২৩- র বিধানসভা নির্বাচনের আগে সদ্যসমাপ্ত উপভোগ রাজ্যের কংগ্রেসের জন্য অ্যাসিড টেস্ট বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা। ১৮ র বিধানসভা নির্বাচনের পর একেবারেই ঝিমিয়ে গিয়েছিল রাজ্য কংগ্রেস। ১৯-র লোকসভা নির্বাচনে গা ঝাড়া দিয়েছিল কংগ্রেস। তাও আবার প্রদ্যুৎ কিশোরের নেতৃত্বে। যদিও প্রদ্যুৎ পরবর্তী সময় কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যেতেই পোস্ট অফিস চৌমুনির সাদা বাড়ি আবার নড়বড়ে হয়ে যায়। প্রদেশ কংগ্রেসে প্রদ্যুৎ কিশোরের রাজত্বের পর, সভাপতির চেয়ারে বসেন পীযূষ কান্তি বিশ্বাস। কিন্তু অবস্থা সেই তিমিরেই। পীযূষ কান্তি বিশ্বাসও কংগ্রেসের ঝিমুনি নিঃশেষ করতে পারেন নি। তার নেতৃত্বে এডিসি ভোট কংগ্রেসের সাংগঠনিক দেওলিয়াপনার কঙ্কাল সার বেরিয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের হাইকমান্ডের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় দল ছাড়েন পীযূষ কান্তি বিশ্বাস। এরপর কংগ্রেসের হল ধরেন বর্ষীয়ান নেতা বীরজিত সিনহা। হাইকমান্ড তাকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব সপে দেয় তার উপর। বীরজিত কংগ্রেসের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে ব্যর্থ হন। পুরো ও নগর ভোটে কংগ্রেস পরাজয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। জব্দ হয় দলীয় প্রার্থীদের জামানত।
প্রদেশ কংগ্রেসের উপর থেকে যখন মানুষ একেবারেই আস্থা হারিয়ে ফেলছিল,তখনই কংগ্রেসের প্রাণ ভোমরা হয়ে ওঠেন দুই প্রাক্তন সেনানি সুদীপ প্রায় বর্মন ও আশীষ কুমার সাহা
তারা দুই জনই বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করে যোগ দেন কংগ্রেসে। উভয়েই ছেড়ে দেন বিধায়ক পদও। স্বাভাবিকভাবেই রাজধানীর দুই হেভিওযেট কেন্দ্র ছয় আগরতলা ও টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্রে উপনির্বাচন প্রয়োজন হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে রাজ্যের সুরমা ও যুবরাজ নগর বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
সুদীপ রায় বর্মন ও আশীষ কুমার সাহা কংগ্রেসে যোগ দিতেই চকচক করে যায় পোস্ট অফিস চৌমুহনীর সাদা বাড়ির। উপভোট কেন্দ্র করে সেজে ওঠে সাদা বাড়ি আনাচ-কানাচ। বৃদ্ধি পায় কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তিও। সব মিলিয়ে কংগ্রেসের খোলনলচে একটা পরিবর্তন আসে।তার কান্ডারী অবশ্যই সুদীপ রায় বর্মন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, উপভোগ ফলাফলের উপর নির্ভর করবে সুদীপ- আশীষের রাজনৈতিক জীবন সহ গোটা কংগ্রেসের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। রাজনীতিকরা বলছেন,উপভোগ সুদীপ, আশীষ যদি জয়ী হন, তাহলে রাজ্য রাজনীতি নূতন “বিপ্লব” শুরু হবে। কংগ্রেস পৌঁছে যাবে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। 23- র বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস হয়ে উঠবে প্রবল শক্তিধর এবং ক্ষমতার দাবিদার। সুদীপ – আশীষরা পরিচয় দেবেন তাদের সুচতুর রাজনৈতিক মস্তিষ্কের।
উপনির্বাচনে সুদীপ- আশীষ পরাজিত হলে কি হবে পোস্ট অফিস চৌমুনির পরিবেশ পরিস্থিতি? এই প্রশ্ন কিন্তু উঁকি দিচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। কংগ্রেসের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী পরাজিত হলে নিশ্চিতভাবে শোকে বিহ্বল হবে গোটা রাজ্য কংগ্রেস l সুদীপকে আঁকড়ে ধরে গোটা কংগ্রেস যে গতিতে রাজনীতির লেখচিত্রে উঠতে শুরু করেছিলো, ফের ধাক্কা লাগবে। জনপ্রিয় চলে আসবে আরো তলানীতে। তখন অবশ্যই কংগ্রেসকে পুনরায় শক্তিশালী করে ২৩র ভোটযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া কঠিন হয়ে উঠবে।সব মিলিয়ে উপভোটের পরাজয় কংগ্রেসের এক ঘরে করে দেবে বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা।তখন কংগ্রেসের পক্ষে কোমর সোজা করে দাঁড়িয়ে ২৩র ভোট লড়াই করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। এবং সুদীপ – আশীষের রাজনৈতিক জীবনেও নেমে আসতে পারে বিপর্যয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *