ডেস্ক রিপোর্টার,২৫জুন।।
সন্ত্রাস বা রাজনৈতিক সন্ত্রাস। ভোট বাজারে সন্ত্রাস এখন অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। ভোট হবে কিন্তু সন্ত্রাস হবে না তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভোট শব্দের সঙ্গে সন্ত্রাস শব্দটি যেন উপপ্রতভাবে জড়িয়ে গেছে। বিশেষভাবে পশ্চিমবাংলা ও ত্রিপুরা, আসাম এই সমস্ত রাজ্যগুলিতেই সন্ত্রাস বিনা ভোটের যেন আমেজই থাকেনা।
রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত উপভোটে সন্ত্রাসের ছায়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। সন্ত্রাস নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সন্ত্রাসীরা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান, মারধর, গাড়িতে ভাঙচুর, নানান ভয়-ভীতি প্রদর্শন, এমনকি ছাপ্পা ভোট দেওয়া। উপভোটে সন্ত্রাসের ছিল প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। দাবি বিরোধীদের।
উপভোগটে রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটের দিন সন্ত্রাস সংক্রান্ত ইসুতে মোট মামলা হয়েছে নয়টি। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের থানাগুলিতে শাসক বিরোধী উভয়পক্ষ থেকে মামলা পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে । সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ মূলে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে দুষ্কৃতীদের। ছাপ্পা ভোট দিতে আসা রাজনৈতিক দুষ্কৃতীদের কেন্দ্রে আটক করেছে জনতা । তারপর তুলে দিয়েছে পুলিশের হাতে।গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছেন এক পুলিশ কর্মীও। উপভোট এ সংক্রান্ত ঘটনার সাক্ষী থেকেছে এই রাজ্যের মানুষ।
রাজ্যের নগর ও পুর ভোটেও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। ১৯র লোকসভা নির্বাচনেও সন্ত্রাস নিয়ে সরব হয়েছিল বিরোধী শক্তি। আবার উপভোগ একই অভিযোগ অর্থাৎ সন্ত্রাস বিনা ভোট যেন আমেজহীন।
রাজনীতিকদের বক্তব্য, রাজ্যে রাজনীতিতে সন্ত্রাস কিন্তু বিজেপির জামানা থেকেই শুরু হয়নি । এই সন্ত্রাসের শিকড় প্রোথিত অনেক গভীরে । ১৯৮৮- র কংগ্রেস- টিইউজেএস জামানা থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে থাবা বসিয়েছিল কাল সন্ত্রাস। রাজ্যের প্রয়াত প্রাক্তন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মোহন দেবই ভোট সন্ত্রাসের বীজ বপন করেছিলেন রাজ্যে।এই কারণে বামেরা সন্তোষ মোহনকে “সন্ত্রাস মোহন” হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। বামেরা দীর্ঘ সময় ৮৮- র জোট জামানার সন্ত্রাসের ক্যাসেট বাজিয়ে একের পর এক ভোটে জয়ী হয়েছিলো।
বামেদের কটাক্ষ করে রাজনীতিকরা বলছেন, কমিউনিস্টরা ধোয়া তুলসী পাতা নয়। বাম জামানতেই বাইক বাহিনীর আমদানি। রামনগর ও খয়েরপুর, বিলোনিয়া কেন্দ্রগুলিতে বাইক সন্ত্রাসের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলো বামেরা। এখন তারাই বিজেপির বাইক সন্ত্রাস নিয়ে সরব হয়েছে। রাজনৈতিক বিশারদদের অভিযোগ, রাজনৈতিক খুনের স্রষ্টাও বামেরা।তারা তথ্য তুলে বলেন, প্রথম বাম সরকারের জামানায় খোয়াইয়ে খুন হয়েছিলেন তত্কালীন গ্রাম প্রধান নৃপেন্দ্র পাল।প্রকাশ্যে দিবালোকে চলন্ত রিক্সা থেকে নামিয়ে দুষ্কৃতীরা নৃপেন্দ্র পালকে কুপিয়ে খুন করেছিলো। তখন বাম মূখ্যমন্ত্রী ছিলেন “জননেতা” নৃপেন চক্রবর্তী। রাজনৈতিক মহলে কথিত আছে, মূখ্যমন্ত্রী নৃপেন চক্রবর্তীর জ্ঞাতসারেই খুন হয়েছিলেন কংগ্রেসের গ্রাম প্রধান নৃপেন্দ্র পাল।এটাই নাকি রাজ্য রাজনীতির প্রথম “রাজনৈতিক খুন”।