ডেস্ক রিপোর্টার,১৭ মার্চ।।
       দেশ জুড়ে বেজে গিয়েছে লোকসভা ভোটের দামামা।নির্বাচনী প্রচার শুরু শাসক -বিরোধী উভয় শিবিরে।লোকসভা নির্বাচনের মাঝেই লাইম লাইটে রামনগর বিধানসভা কেন্দ্র।রামনগর কেন্দ্রেও হবে উপভোট।রামনগরে উপ-নির্বাচনে কে হচ্ছেন শাসক বিজেপির মুখ?রাজধানীর হেভিওয়েট বিধানসভা কেন্দ্র রামনগর। অতি সম্প্রতি এই কেন্দ্রের কিংবদন্তি জননেতা তথা বিজেপির বিধায়ক সুরজিৎ দত্ত প্রয়াত হয়েছেন।স্বাভাবিক ভাবেই রামনগরে উপ-নির্বাচন আবশ্যক। জাতীয় নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই রামনগর কেন্দ্রে হবে উপ-নির্বাচন। তাই এই মুহূর্তে রাজ্যের লোকসভার দুই আসনের সঙ্গে রামনগরেও হবে অকাল ভোট। বড় কোনো অঘটন না ঘটলে উপ- নির্বাচনে শাসকের জয় নিশ্চিত।স্বাভাবিক ভাবেই শাসক দল বিজেপির প্রার্থী কে হচ্ছেন রামনগরে? তা নিয়ে বিজেপি’র অন্দরেই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

।।দীপক মজুমদার ।।

নাম: দীপক মজুমদার ওরফে অলীক

পদ: মেয়র,আগরতলা পুর নিগম

বিধানসভা কেন্দ্র: রামনগর

।।অমিত রক্ষিত।।


নাম: অমিত রক্ষিত।

পদ: সাধারন সম্পাদক, প্রদেশ বিজেপি

বিধানসভা কেন্দ্র: রামনগর


কৃষ্ণনগর কুশাভাউ ভবনের তথ্য বলছে, রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে  বিজেপির প্রার্থী হিসাবে প্রথম দুইটি নাম দীপক মজুমদার ও অমিত রক্ষিত। এই দুই নেতার মধ্যেই টি আর পি উঠা নামা করছে। শেষ পর্যন্ত কার মুখে হাসি ফুটবে? এটা বলবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
       আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার।কংগ্রেস রাজনীতি থেকেই তার উত্থান। তবে তিনি সব সময় ছিলেন কংগ্রেসের অলিন্দে। দীপক মজুমদারের রাজনৈতিক গড ফাদার ছিলেন রাম নগর কেন্দ্রের প্রয়াত বিধায়ক সুরজিৎ দত্ত। কংগ্রেসে থাকা কালীন তিনি একবার তৎকালীন সময়ের আগরতলা পুর পরিষদের কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১৩- র বিধানসভা নির্বাচনে দীপক মাজদার কংগ্রেসের টিকিটে খোয়াই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।কিন্তু জয়ের মুখ দেখেন নি।ধীরে ধীরে রাজ্য রাজনীতির পিট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দীপক মজুমদার বিজেপির স্রোতে ভেসে যান।২১- র আগরতলা নিগমের ভোটে জয়ী হয়ে তিনি হন কর্পোরেটর।এবং বিজেপি তাকে নগর পিতার চেয়ারে বসিয়ে দেয়।

।।শহরের জলাশয় গুলিতে থুবড়ে পড়েছে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড, চুরি হচ্ছে জিনিস পত্র।।

দীপক মজুমদারের সময় কালে কেমন চলছে আগরতলা পুর নিগম? নগরের মানুষের কথায়, অতি উত্তম বা উত্তম নয়, ভালো মন্দের সংমিশ্রণে মোটামুটি। দীপক মজুমদারের নেতৃত্বে নিগমের যেমন ভালো কাজ হচ্ছে,তেমনি দুর্নীতি হচ্ছে চুটিয়ে। কমিশন বাণিজ্যের ডুবে গিয়েছেন প্রতিটি ওয়ার্ডের কর্পোরেটররা। এক মহিলা কর্পোরেটর লিপ্ত হয়েছেন যৌন কার্যকলাপে। মেয়র নিশ্চুপ।রাজধানীর জলাশয় গুলিতে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ র নামে চলছে সীমাহীন দুর্নীতি। মুখ থুবড়ে আছে প্রতিটি পার্কের লাইট অ্যান্ড সাউন্ড। নিত্য দিন হচ্ছে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের সরকারী সম্পদ চুরি।পুর নিগমে টেন্ডারের নামে রগরগে নিগোসিয়েশন বাণিজ্য।ঠিকাদারদের হুমকি – হুজ্জুতি। ফুটপাত দোকানীদের তোলা আদায়। এক গ্রুপ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে অপর গ্রুপকে কাজের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া। কে বা কারা করছেন এই সমস্ত দুর্নীতি? কিন্তু কোনো এক রহস্য জনক কারণে বিষয় গুলি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন মেয়র দীপক মজুমদার। প্রার্থী চয়নের ক্ষেত্রে অবশ্যই এই বিষয় গুলি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে রামনগর রাজনীতিতে মেয়র দীপক মজুমদার একটি পরিচিত মুখ।


প্রার্থীর দৌঁড়ে দীপক মজুমদারের প্রতিদ্বন্দ্বী অমিত রক্ষিত।তিনি প্রদেশ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক। বিজেপির কর্মীদের কথায়, এই মুহূর্তে সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দলের মধ্যে সুনাম অর্জন করছেন অমিত। গেরুয়া ঘরানা থেকেই তার রাজ্য রাজনীতিতে উত্থান। তিনিও ২০১৮- র বিধানসভা নির্বাচনে খোয়াই কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু জয়ী হতে পারেন নি।অল্প ভোটের ব্যবধানে বাম প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। রামনগর অঞ্চলের সর্ব অংশের মানুষের কাছেই অমিত রক্ষিতের একটা গ্রহন যোগ্যতাও রয়েছে। তবে প্রার্থীর তালিকায় চূড়ান্ত সিলমোহর দেবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এখন দেখার বিষয় কংগ্রেস ঘরানা থেকে উঠে আসা দীপক মজুমদার নাকি বিজেপির ঘরানা থেকে রাজনীতিতে আসা অমিত রক্ষিতের ললাটে লাগে রামনগরের টিকিট।
       দীপক মজুমদার, অমিত রক্ষিত ছাড়াও রামনগর কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় নিচের দিকে নাম রয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, দুই কর্পোরেটর তুষার কান্তি ভট্টাচার্য্য ও অভিষেক দত্তের।  এই তিনজনের সম্ভাবনা একে বারেই ক্ষীণ। তবে রাজনীতির অভিধানে “অসম্ভব” বলে কোনো শব্দ নেই।তার জ্বলন্ত প্রমাণ লোকসভার পূর্ব ত্রিপুরা আসনের প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *