সাব্রুম ডেস্ক,১৫ জুলাই

পুলিশের নিরাপত্তার চক্রবুহ্য ভেদ করে
আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকার হ্যাকান জিম্বু
জিবি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে ছিলো গত ৯জুলাই।এই আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকারকে সাব্রুমের মনুবাজার থানার অন্তর্গত ছোট শাকবাড়ি এলাকার শাকিব ত্রিপুরা(২৩)নামে এক যুবক জিবি হাসপাতাল থেকে পালাতে সাহায্য করেছিলো। এবং খোয়াই দিয়ে সীমান্তের ওপার বাংলাদেশে পৌঁছে দিয়েছিলো।পুলিশের জেরায় একথা জানায় শাকিব ত্রিপুরা।
হ্যাকান জিম্বুকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত রকমের “মাস্টার প্ল্যান” তৈরি করেছিলো শাকিব।
প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে মনুবাজার থানার পুলিশ বুধবার গভীর রাতে হ্যাকান জিম্বুর সহযোগী
শাকিব ত্রিপুরাকে ছোট শাক বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল। মনুবাজাতে অভিযুক্ত শাকিব ত্রিপুরাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বৃহস্পতিবার বিকালে আগরতলা এনসিসি থানার হাতে সঁপে দেয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত শাকিব ত্রিপুরা জানায়, সম্প্রতি বিশালগড় সেন্ট্রাল জেলে শাকিব তার মামা স্বর্ণ ত্রিপুরাকে দেখতে যায়।স্বর্ণ ত্রিপুরা একজন দাগি অপরাধী।তার বিরুদ্ধে অপহরণ ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। মামা স্বর্ণ ত্রিপুরাকে দেখতেই গিয়েই শাকিবের সঙ্গে পরিচয় হয় আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকার
হ্যাকান জিম্বুর। জেল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য হ্যাকান সাহায্য চেয়েছিলো স্বর্ণ ত্রিপুরার কাছে। তখনই স্বর্ণ ত্রিপুরা তার ভাগ্নে শাকিব ত্রিপুরার সঙ্গে হ্যাকানের পরিচয় করিয়ে দেয়।
স্বর্ণ ত্রিপুরা ও হ্যাকানের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বার্তা বলার পর মোটা অঙ্কের চুক্তি হয়।এরপরই চুক্তি মোতাবেক হ্যাকানকে শাকিবের মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয় । পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক গত ৮জুলাই আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকার জিম্বু শারীরিক অসুস্থতার নাটক করে।এদিন সকালেই সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জিবি হাসপাতালে আসে।এরপরই জিম্বু পালিয়ে যাওয়ার মূল স্ক্রিপ্ট রচনা করে শাকিব। হ্যাকান ও শাকিবের মধ্যে শুরু হয় মোবাইলে যোগাযোগ। মূলত হোয়াটস এপ্সে শুরু হয় এসএমএস আদানপ্রদান। এর পর থেকেই শুরু হয় প্ল্যানমাফিক কার্যকলাপ ।
আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকার হ্যাকান শাকিবকে মোনবাইল এসএমএস করে জানিয়ে দেয়, ” হাসপাতালের জানালার লোহার রড গালাবার জন্য কেমিক্যাল জিবিতে পৌঁছে দিতে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শাকিব কেমিক্যাল পৌঁছে দেয় এটিএম হ্যাকার হাকানের কাছে।” পুলিশের জেরায় একথা স্বীকার করেছে ধৃত শাকিব।জিবি হাসপাতালের ওয়ার্ডের জানালা দিয়ে বেরিয়ে কিভাবে পালিয়ে যাবে হ্যাকার হ্যাকান?
তারজন্য শাকিব সংশ্লিষ্ট রাস্তার স্থির ছবি ও ভিডিও তুলে হ্যাকানের কাছে পাঠিয়ে দেয়।নির্দিষ্ট রোড ম্যাপ মোতাবেক গত ৯জুলাই
হ্যাকার হ্যাকান জিম্বু জেল পুলিশের নিরাপত্তার বেষ্টনী ভেঙে জিবি জিবি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, শাকিব একটি সাদা রঙের
বলেরো গাড়ি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে।
হ্যাকান জিবি থেকে বেরিয়ে শাকিবের দেখানো পথ ধরে বলেরোতে এসে উঠে।এবং পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে প্রথমে আগরতলা শহর থেকে বের হয় । এরপর পুলিশের সন্দেহ এড়ানোর জন্য শাকিব তার এক বন্ধুর বাইককে সওয়ার হয়ে হ্যাকানকে নিয়ে সোজা খোয়াই সীমান্তে চলে যায়। পুলিশ ও বি এসএফকে ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় পহরমুড়া সীমান্ত দিয়ে হ্যাকানকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। চুক্তি মোতাবেক শাকিবের ব্যাংক একাউন্টে টাকাও পাঠিয়ে দেয় হ্যাকান।আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকার তথা তুর্কির নাগরিক হ্যাকান জিম্বু গত ১২ জুলাই ঢাকায় পৌঁছায়। এবং মোবাইলে হোয়াটস এপসের মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে তার ঢাকায় অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য উগলে দিয়েছে ধৃত শাকিব ত্রিপুরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *