ডেস্ক রিপোর্টার,২২ফেব্রুয়ারি।।
রাজ্যের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নে সরকার স্বাস্থ্য, শিল্প, শিক্ষা, যোগাযোগ, পর্যটন, কৃষি, পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। এজন্য প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলির বিকাশে ইতিবাচক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকারের এই ক্ষেত্রগুলির উন্নয়নের গতি আরও বাড়াতে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)-কে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলির বিকাশে কাঙ্খিত সাফল্য পাওয়া যাবে। মঙ্গলবার সচিবালয়ের ২নম্বর সভাকক্ষে এডিবি’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতেই রাজ্যকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য এডিবিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আলোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের উন্নয়নে এডিবি যে সমস্ত প্রকল্প হাতে নিয়েছে তা দ্রুততার পাশাপাশি সফলভাবে রূপায়ণের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। রাজ্যের সম্ভাব্য বিনিয়োগ ক্ষেত্রগুলির জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্প রূপায়ণে এডিবি’র সহযোগিতা আবশ্যক। এডিবি রাজ্যের উন্নয়নের জন্য যে সমস্ত প্রকল্প গ্রহণ করেছে তা কিভাবে দ্রুত রূপায়ণ করা যায় সে বিষয়ে এডিবিকে পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে রাজ্যের আবহওয়ার উপর ভিত্তি করে এডিবিকে প্রকল্প রূপায়ণের উপর গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে বিশেষত শীতের মরশুমে বিল্ডিং রাস্তা সহ বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পগুলি রূপায়ণের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নয়নে এডিবিকে রাজ্য সরকারের পাশে থেকে কাজ করে রাজ্যকে রক্তাল্পতা মুক্ত, এইডস মুক্ত, অপুষ্টি মুক্ত রাজ্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। ড্রাগস মুক্ত ত্রিপুরা গঠনে রাজ্য সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার জন্যও এডিবি’র প্রতি আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, রাজ্যের সার্বিক বিকাশে আগামী ২৫ বছরের জন্য ‘লক্ষ্য-২০৪৭’ নামে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। ‘লক্ষ্য-২০৪৭’-র উপর এডিবি কিভাবে কাজ করতে চায় তারজন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার রাজ্যের ১২টি অ্যাসপিরিশনাল ব্লকে পরিকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য যোগাযোগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে এডিবিকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি ত্রিপুরা-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নেও এডিবিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
সভায় উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, রাজ্যের বড় একটা অংশ বনাঞ্চল। একে ভিত্তি করে আবহাওয়া পরিবর্তনের উপর বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে এডিবি’র কাজ করার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের শিল্প, পরিকাঠামো, পর্যটন, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রেও এডিবি’র বিনিয়োগ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। মুখ্যসচিব কুমার অলক সভায় বলেন, রাজ্য সরকার পর্যটন, শিল্প, স্বাস্থ্য, পরিকল্পনা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছে। এইসব ক্ষেত্রগুলিতে এডিবি বিনিয়োগ করার জন্য এগিয়ে আসতে পারে। রাজ্যের নিজস্ব প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে শিল্প উন্নয়নেও এডিবি এগিয়ে আসুক।
সভায় এডিবি’র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর সমীর কুমার খারে বলেন, এডিবি ত্রিপুরাকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই লক্ষ্যে আগামী ৪ বছরে এডিবি রাজ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতিকরণ, পর্যটন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক কল্যাণ, কৃষি, আবহাওয়া পরিবর্তন, শিল্প ক্ষেত্রগুলিতে উন্নয়নের যে সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তা সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরেন তিনি। সভায় এছাড়াও স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব জে কে সিনহা, রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব পুনীত আগরওয়াল, পরিবহণ দপ্তরের সচিব এল এইচ ডার্লং, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব চৈতন্যমূর্তি, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব পি কে গোয়েল, অর্থ দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, পর্যটন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর টাকিও কোনিশি এবং এডিবি’র অন্যান্য প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *