* নগর ও পুর ভোটে তৃণমূলের মোট প্রার্থী ১২৫জন।

* প্রার্থীদের ভোট খরচ মাথাপিছু ২লক্ষ টাকা।

* মোট টাকার পরিমাণ আড়াই কোটি।

* প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো টাকা সরাসরি দেওয়া হবে প্রার্থীদের ব্যাংক একাউন্টে।

*সুস্মিতা দেবের হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্ত বদল।

*প্রার্থীদের কিস্তিতে কিস্তিতে টাকা নিতে হবে সুবল ভৌমিক থেকে।

* প্রার্থীদের মনে গভীর সন্দেহের বাতাবরণ।



ডেস্ক রিপোর্টার,১১নভেম্বর।।
প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের অলিন্দে প্রার্থীর টাকা নিয়ে কাড়াকাড়ি। কার দখলে রাখবে মধুর ভান্ড? সুবল -সুস্মিতা জুটি, নাকি প্রার্থীরা? এই ইস্যুতে ভ্যাপাচেপা খেয়ে গেছে খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট কৌশলী সংস্থা “আই-প্যাক”।
রাজ্যের পুর ও নগর ভোটের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। স্বপ্ন দেখছেন মমতা-অভিষেক।কিন্তু পুর ও নগর ভোটের টাকার কাড়াকাড়ি নিয়ে এখন মত্ত প্রদেশ নেতৃত্ব।ঘাসফুল অলিন্দে খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো পুর ও নগর ভোটের প্রত্যেক প্রার্থীকে দুই লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে ভোটের খরচের জন্য। তৃণমূল কংগ্রেস পুর ও নগর ভোটে গোটা রাজ্যে মোট ১২৫জন প্রার্থী দিয়েছে।প্রার্থীদের টাকা দেওয়ার জন্য নামের লম্বা তালিকা তৈরি করেছে “আই-প্যাক।”
আই-প্যাকের পক্ষ থেকে প্রত্যেক প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ব্যাংক একাউন্ট নেওয়া হয়। প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়,প্রত্যেকের একাউন্টে ২লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে খরচের জন্য।দলের এই সিদ্ধান্তে খুশি হন প্রার্থীরাও। আই-প্যাক টিম প্রার্থীদের নামের তালিকা করে পাঠিয়ে দেয় কলকাতার তৃনমূল ভবনে।
“জনতার মশাল”র সংবাদ ভবনে কয়েকজন প্রার্থী ফোন করে জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তাদের একাউন্টে সরাসরি ২লক্ষ টাকা ঢুকার কথা ছিলো।কিন্তু বুধবার গভীর রাতে প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়,তাদের একাউন্টে টাকা দেওয়া হবে না।সিদ্ধান্ত দলের বঙ্গ নেতৃত্বের।প্রার্থীদের টাকা নিতে হবে প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক সুবল ভৌমিকের কাছ থেকে।তাও আবার কিস্তিতে কিস্তিতে। প্রার্থীরা এই কথা জানার পর তারাও তেলেবেগুনের মতো জ্বলে উঠেন।
ঘটনার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেন প্রার্থীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলকাতা থেকে সরাসরি তাদের একাউন্টে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাদ সাধেন খোদ দলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব।তিনি কলকাতায় ফোন করে বলেন, “প্রার্থীদের সরাসরি টাকা দেওয়া যাবে না।টাকা দিতে হবে সুবল ভৌমিকের মাধ্যমে। এবং প্রার্থীদের কিস্তিতে কিস্তিতে টাকা দেওয়া হবে।”…ব্যাস।
তৃণমূল নেত্রী সুস্মিতা দেব কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন? ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা বলছেন, দলের আহবায়ক সুবল ভৌমিক নাকি সুস্মিতা দেবের মগজ ধোলাই করতে সক্ষম হয়েছেন।সুবল ভৌমিক সুস্মিতা দেবকে বুঝিয়েছেন,প্রার্থীদের সরাসরি টাকা দিলে তারা গুরুত্বহীন হয়ে যাবেন।তখন প্রার্থীরা সরাসরি কথা বলবেন বঙ্গ নেতৃত্বের সঙ্গে। হাতে ব্যাটন রাখতেই নাকি “মানির সাপ্লাই লাইন” ঘুরিয়ে নেন নিজেদের দিকে। তৃণমূল প্রার্থীদের অভিযোগ, সুবল ভৌমিক কখনো প্রার্থীদের ২লক্ষ টাকা করে দেবেন না।তিনি প্রার্থীদের নম: বিষ্ণু,নম:বিষ্ণু(অল্প টাকা) করে হাত মুছে নেবেন।কারণ রাজ্য রাজনীতিতে সুবল ভৌমিকের ভোটের বাজারের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল খোদ প্রার্থীরা।
আগরতলা পুর নিগমের এক প্রার্থী (শহর দক্ষিণাঞ্চল) জানান, টাকার জন্য তিনি ফ্ল্যাগ কিনতে পারছেন না। ছাপাতে পারছেন না পোস্টার।নিজের অনুগামীদের টিফিনের নূন্যতম টাকা দিতে পারছেন না।অথচ বাংলা থেকে পাঠানো ভোট খরচের টাকা সুবল ভৌমিকের টাকা নিতে হবে কিস্তিতে কিস্তিতে।ঘাসফুলের এই প্রার্থীর প্রশ্ন,এলাকায় কাজ করবেন প্রার্থীরা, এখানে সুবল ভৌমিকের ভূমিকা কি? প্রার্থীদের কেন তার কাছ থেকে টাকা নিতে হবে? প্রার্থীদের দাবি,তাদের একাউন্টে সরাসরি টাকা দিতে হবে।অন্যথায় কোনো প্রার্থীর কাছেই পৌঁছবে না টাকা।হাতে টাকা না পেলে কাজ করবেন না তারাও।
তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের বক্তব্য, ১২৫ জন প্রার্থীর জন্য সুবল ভৌমিককে দেওয়া হবে মোট আড়াই কোটি টাকা।এই টাকা সুবল ভৌমিকের হাতে এলে নয়ছয়ের সম্ভাবনা থাকবে প্রবল।কারণ রাজনীতির অতীত এমন আভাস দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে।এই জন্যই প্রার্থীরা চাইছে টাকা আসুক তাদের ব্যাংক একাউন্টে।এলাকার দিন-রাত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তারা।হামলা হচ্ছে প্রার্থীদের বাড়ি ঘরে।তাহলে কেন প্রার্থীদের দেওয়া ভোট খরচার টাকা তুলে দেওয়া হবে সুবলের হাতে? প্রশ্ন তুলেছে সংশ্লিষ্ট মহল।তবে সুস্মিতা দেব সম্পর্কে প্রার্থীদের ধারণা স্পস্ট।তাদের বক্তব্য, সুস্মিতা দেব আড়াই কোটি থেকে এক টাকাও নেবেন না।কিন্তু সুবল ভৌমিক জাদু-মন্ত্র বলে সুস্মিতাকে নিজের কব্জায় রেখে দিয়েছেন ভুল বুঝিয়ে।
তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে বলেন, তারা সুবল ভৌমিকের হাত থেকে টাকা নেবেন না। ভোট খরচের টাকা তাদের দিতে হবে সরাসরি।টাকার বিষয়ে সুবল ভৌমিক নাক গলাতে পারবেন না।সুবল ভৌমিকের প্রতি নেই তাদের আস্থা।প্রার্থীদের অভিযোগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে থাকাকালীন টাকা মারিং-র মলাট বদ্ধ ইতিহাস রয়েছে সুবল ভৌমিকের।কংগ্রেসে থাকা কালীন টাকা নিয়ে প্রদ্যুত কিশোরের সঙ্গে সুবল ভৌমিকের কি হয়েছিলো? এই সমস্ত ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল খোদ প্রার্থীরা। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রার্থীদের টাকা ব্যতীতও আরো এক কোটি টাকার তহবিল এসেছে রাজ্যে,ভোটের সাধারণ খরচের জন্য।কিন্তু সেই টাকার ঝলক দেখা যাচ্ছে না প্রচারে।তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের বক্তব্য, গোটা রাজ্যে তাদের কাছে নেই পর্যাপ্ত ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন ও পোস্টার।ভোট বাজারে দলের সাংগঠনিক কাজের পর কর্মীরা পাচ্ছে না নূন্যতম টিফিনের টাকা।আগরতলা শহরে কর্মীরা রয়েছে বিভ্রান্তিতে।কারণ তারা এখনো বুঝে উঠতে পারছে না,তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় কোনটি।কারণ বনমালীপুরে সুবল ভৌমিকের বাড়িতে একটি অফিস।রাধানগর রাজা চৌধুরীর হোটেল মার্সে একটি অফিস।এবং রাতুল দেবের চেম্বার থেকেও তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকলাপ পরিচালিত হয়।স্বাভাবিক ভাবেই ভোটের মুখে দলীয় কার্যালয়ের চক্রবুহ্যে পড়ে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের নাভিশ্বাস উঠতে শুরু করেছে।সব মিলিয়ে বঙ্গের তৃণমূল ভবন থেকে নোটের বান্ডিল রাজ্যে পাঠালেও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে দেখা যাচ্ছে না সেই টাকার ঝাঁঝ। সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচার চলছে ম্যারম্যার অবস্থায়।প্রচারের এই বিষয়টি নজরে লাগছে সাধারণ ভোটারদেরও।

One thought on “BIG BIG BREAKING….<br>তৃণমূলের আড়াই কোটি টাকার তহবিল সুবলের কুক্ষিগত!বিদ্রোহের বার্তা দলীয় প্রার্থীদের।”
  1. আমরা ইলেকশন ফুন্ড নিয়ে ওয়াকিবহাল হতে চাই।
    স্পস্ট হক বিষয় গুলি।
    আবার
    Subol bhawmik পুরনো কর্মীদের কে কুন ও পাত্তা দেই না।
    যাদের কর্মের গুনে আজ ত্রিপুরায় পুনরায় তৃণমূল কংগ্রেস এর নভা জাগরণ ঘটেছে। অত এব আমরা আর মানতে পারছি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *