“বাংলাদেশের মন্দিরে ভগবানের ভক্তদের বিরুদ্ধে এমন ঘৃণা ও হিংসা দেখে আমার মন ভেঙে গেছে।”— তুলসী
বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নব নিযুক্ত ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড- র এই মন্তব্য বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে? তারই বহিঃপ্রকাশ।
৪৩ বছরের মহিলা তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন কংগ্রেসে প্রথম হিন্দু কংগ্রেস সদস্য ছিলেন।
ডেস্ক রিপোর্টার,১৮ নভেম্বর।। তুলসী গ্যাবার্ড । আমেরিকার ন্যাশানাল সিকিউরিটি এজেন্সির ডিরেক্টরের চেয়ারে বসেই তিনি বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন।।অতীতে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এবারও একই ভূমিকা পালন করলেন । আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা বলছেন, বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নব নিযুক্ত ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড- র এই মন্তব্য বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে? তারই বহিঃপ্রকাশ।
৪৩ বছরের মহিলা তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন কংগ্রেসে প্রথম হিন্দু কংগ্রেস সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে দিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তার দেখাশুনার গুরু দায়িত্ব। ২০২১ সালে দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশে চরমে উঠেছিলো হিন্দু নির্যাতন। শতাধিক হিন্দু পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছিলো। সেই সময় বহু হিন্দু মন্দির, বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছিল। তৎকালীন সময়ে এই আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন তুলসী।
এই ভিডিওতে তুলসী বলেছিলেন, “বাংলাদেশের মন্দিরে ভগবানের ভক্তদের বিরুদ্ধে এমন ঘৃণা ও হিংসা দেখে আমার মন ভেঙে গেছে। জিহাদি মনে করে হিন্দু মন্দির ও মূর্তি জ্বালিয়ে দিলে এবং নষ্ট করলে তাদের ঈশ্বর সন্তুষ্ট হবেন। জিহাদীরা দেখায় আসলে, তারা ঈশ্বর থেকে কতটা দূরে। বাংলাদেশের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের উচিত দেশের হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা।”
তুলসী ১৯৭১ সালের ইতিহাস নিয়েও চর্চা করেছিলেন।এবং সেই সময় বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নৃশংসতার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছিলেন তিনি। তুলসী গ্যাবার্ড বারবার বলেন, তিনি একজন হিন্দু হিসাবে নিজেকে গর্ব বোধ করেন।
মার্কিন মূলকের এই প্রভাবশালী রাজনীতিক তুলসী গ্যাবার্ড কিভাবে হিন্দু হলেন?
বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের তোলা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি জানিয়েছেন, তার জন্ম ১৮৮১ সালে। জন্ম স্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়াতে । তাঁর বাবা মাইক গ্যাবার্ড এবং মা ক্যারল গ্যাবার্ড। গ্যাবার্ড দম্পতির পাঁচ সন্তানের একজন তুলসী।১৯৮৩ সাল। তখন তুলসী গ্যাবার্ডের বয়স দু’বছর। এই সময় থেকেই তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। হাওয়াইতে আসার পর, তার মা ক্যারল হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন।
পরিবারে হিন্দু ধর্মের প্রভাবের কারণে ক্যারল গ্যাবার্ড তার সন্তানদের হিন্দু নাম রাখেন।
তাঁর বাবা একজন রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ছিলেন। পরিবারে হিন্দু ধর্মের প্রভাবের কারণে ক্যারল গ্যাবার্ড তার সন্তানদের হিন্দু নাম রাখেন। এই সুবাদে হিন্দু ধর্মের প্রতি অনুরাগ বেড়ে যায় তুলসীর। তাই মায়ের ধর্মের লোকজন আক্রান্ত হলে মার্কিন মুলুক থেকে গলায় আওয়াজ তুলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড- র। বিশ্ব রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের কথায়, বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে তুলসী গ্যাবার্ড- র মন্তব্যে ঝড় উঠছে বাংলাদেশে। নিঃসন্দেহে এক নূতন আতঙ্কের প্রহর গুনছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূস।