আগরতলা,৩ জুলাই।।
খার্চি মেলা হলো রাজ্যের মিশ্র সংস্কৃতির এক বৃহৎ মিলনস্থল। খার্চি উৎসব উপলক্ষে মেলাকে কেন্দ্র করে শান্তি-সম্প্রীতি, সৌভ্রাতৃত্ববোধের আবহ তৈরি হয়। পাশাপাশি মেলাকে কেন্দ্র করে কৃষ্টি, সংস্কৃতির আদান প্রদানও হয়।বুধবার পুরাতন আগরতলার খয়েরপুরস্থিত চতুর্দশ দেবতার মন্দির প্রাঙ্গণে কৃষ্ণমালা মুক্তমঞ্চে খার্চি উৎসব ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খার্চি পূজা হলো সুখ, সমৃদ্ধি এবং চেতনার প্রতীক। চতুর্দশ দেবতা মূলত ত্রিপুরার রাজ পরিবারের কূলদেবতা এবং রাজ্যের জনজাতিদের আরাধ্য দেবতা। বর্তমানে খার্চি জাতি-জনজাতির উভয় সম্প্রদায়ের কাছে সার্বজনীনভাবে পূজীত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার লুপ্তপ্রায় শিল্প সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। রাজ্যে একটা কালচারেল হাব তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যাত্রা শিল্প, নাট্য শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য রাজ্যে বৃহৎ পরিসরে যাত্রা ও নাট্য উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিল্প সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে গত এক বছরে সরকারিভাবে ৫০০ বা তার অধিক অনুষ্ঠান করা হয়েছে। পুতুল নাচ রাজ্যে থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। পুতুল নাচকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে। রাজ্যে জাতি-জনজাতিদের নিজ নিজ কৃষ্টি, সংস্কৃতি ধরে রাখতে বা রক্ষা করতে সরকারের পাশাপাশি রাজ্যবাসীকেও এগিয়ে আসতে হবে। রাজ্যের জনজাতিদের সংস্কৃতি রক্ষায় সাংস্কৃতিক কর্মশালা করার জন্য এবার রাজ্য বাজেটে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। রাজ্যের প্রতিভাবানদের সুবিধার্থে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় নানা কোর্স চালু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও ভাষণ রাখেন বিধায়ক তথা খার্চি মেলা কমিটির চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী। খার্চি পূজা উপলক্ষে মেলা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন দপ্তরের প্রদর্শনীমূলক স্টল খোলা হয়। মুখ্যমন্ত্রী স্টলগুলির ফিতা কেটে উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক স্বপ্না দেববর্মা, পুরাতন আগরতলা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান ঝর্ণারাণী দাস, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার, এসপি কিরণ কুমার, জিরানীয়া মহকুমা শাসক অনিমেষ ধর প্রমুখ। মেলা উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী কৃষ্ণমালা মুক্তমঞ্চে এবং হাবেলি মঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।