
ডেস্ক রিপোর্টার,১০ ডিসেম্বর।
মানিক জামানায় অস্তিত্বহীন বিপ্লবের স্বপ্নের স্মার্ট পুলিশ! যার পোশাকি নাম “বিট পেট্রোল”। রাজ্য জুড়ে অপরাধ কমাতে পুরোপুরি ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের “বিট পেট্রোল”।অথচ আজ থেকে চার বছর আগে ঘটা করে রাজ্য পুলিশে চালু করা হয়েছিল “বিট পেট্রোল”। তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বিট পেট্রোল উদ্বোধন করে বলেছিলেন,” রাজ্য পুলিশকে স্মার্ট করতেই স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এই উদ্যোগ। এর ফলে পুলিশ দ্রুত অপরাধের লাগাম টানতে পারবে এবং শেষ করতে পারবে সময়ের কাজ সময়েই”। রাজ্য আরক্ষা দপ্তর বিট পেট্রোল চালু করার জন্য মোট ২৬১ টি বাইক সরবরাহ করেছিল।এই বাইক গুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল গোটা রাজ্যে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্য পুলিশের কর্তাদের ধারণা ছিল, বিট পেট্রোল নিশ্চিতভাবে রাজ্যের অপরাধের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে। কিন্তু বাস্তব অর্থে বিট পেট্রোল চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়। দিন যত গড়াচ্ছে, রাজ্যের মানুষ ততই ভুলে যাচ্ছে, বিপ্লব কুমার দেবের স্মার্ট পুলিশের অঙ্গ হিসেবে থাকা “বিট পেট্রোলকে”।

বিপ্লব কুমার দেবের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছেন ডা:মানিক সাহা। তিনি দ্বিতীয়বার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।মানিক জামানাতেও একেবারেই নিষ্প্রভ বিট পেট্রোল। বিপ্লবের স্মার্ট পুলিশ মানিক জামানায় যেন আরো আনস্মার্ট হয়ে উঠেছে। বিট পেট্রোল কোথায় থাকে? কিভাবে কাজ করছে? এটা ভুলেই গিয়েছে রাজ্যের মানুষ।কারণ রাজ্যের অপরাধ দমনে বিট পেট্রোল তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারে নি। তার জন্য অবশ্যই পুলিশ কর্মীদের দায়ী করা যাবে না। দায়ী গোটা সিস্টেম।

থানা ও পুলিশ ফাড়ি গুলিতে বিট পেট্রোলকে নিযুক্ত করা হয়েছিল ।প্রতিটি থানা ও ফাড়ি প্রয়োজন অনুযায়ী একটি বা দুটি বিট পেট্রোলের বাইক দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী,থানায় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবলরা বিট পেট্রোল লেখা মোটর বাইক নিয়ে এলাকায় সাওয়ার হবেন। এবং কোথায়ও কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে, তারা অনস্পটে ঝামেলা মিটমাট করবেন। আবার পরিস্থিতি অনুধাবন করে থানায় অফিসার সহ অতিরিক্ত ফোর্স অকুস্থলে নিয়ে আসার জন্য বার্তা পাঠাবেন তারা।পুলিশ কর্মীদের বক্তব্য, বিট পেট্রোলকে সফল করে তোলার জন্য তারা চেষ্টা করেছিলেন।কিন্তু ব্যর্থ।কারণ প্রতিটি থানা – ফাড়িতে পর্যাপ্ত লোকবল নেই। যে থানায় কুড়ি জন কনস্টেবলের প্রয়োজন,সেখানে আছে মাত্র দশ জন।স্বাভাবিক ভাবেই কর্মী সল্পতার করেন কনস্টেবলরা সঠিক ভাবে কাজ করতে পারেন না। তাছাড়া তাদেরকে দেওয়া মোটর বাইক গুলিও লড় ঝড়। যত্রতত্র বিকল হয়ে পড়ে বিট পেট্রোলের “বাহন” মোটর বাইক গুলি।

বিট পেট্রোল অসফল হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ কনস্টেবলদের পোস্টিং প্রক্রিয়া। পুলিশ আধিকারিকদের কথায়, বিট পেট্রোলকে সফল করতে হলে সংলিস্ট থানা এলাকা বা তার আশেপাশে হোম অ্যাড্রেস থাকা কনস্টেবলদের পোস্টিং দিতে হবে। তাহলে তাদের ডিউটির পরও পাওয়া যাবে।এবং কাজে লাগানো সম্ভব। কিন্তু রাজনীতির গ্যাড়াকলে কারণে এক মহকুমার কনস্টেবলকে অন্য মহকুমাতে পোস্টিং দেওয়া হয়। ফলে ডিউটি শেষ করে তারা ফিরে যায় বাড়ির উদ্দেশ্যে।তাদের অতিরিক্ত সময়ে কাজে ব্যবহার করা যায় না। তাই থানা গুলিতে কর্মী সল্পতা লেগে থাকে বারো মাস। এই জন্যই বিয়ে বাড়ি থেকে শ্রাদ্ধ বাড়িতে দৌঁড় ঝাঁপ করা কন্সটেবলদের পক্ষে বিট পেট্রোলকে সফল করে তুলা কোনো ভাবেই সম্ভব হয় নি। এই কারণেই বিপ্লব জামানার বিট পেট্রোল চূড়ান্ত ব্যার্থ মানিক জামানাতেও।