ডেস্ক রিপোর্টার,২৯ জানুয়ারি।।
            ২৩ এর বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দল বিজেপির থেকে টিকিট পেলেন দলের তিন সাধারণ সম্পাদক। ব্রাত্য থেকে গেলেন দলের অপর সাধারণ সম্পাদক অমিত রক্ষিত। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ বাড়ছে খোদ দলের অন্দরে। তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে প্রকাশ্যে। ক্ষুব্ধ কর্মীরা দল ছাড়ছে কাতারে কাতারে। এটা অবশ্যই ভালো লক্ষণ নয়। কাল ডেকে আনতে পারে বিজেপির।
             বিজেপির সাধারণ সম্পাদক টিংকু রায় বিরুদ্ধে সরকারিভাবে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আদালত তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে  শিল্প নিগমে চেয়ারম্যানের চেম্বারে। টিংকু ছিলেন শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান। এছাড়া টিংকু রায়ের বিরুদ্ধে আরো বহু অভিযোগ রয়েছে দুর্নীতির। তারপরও কেন টিংকুর মত দুর্নীতিবাজ লোকদের টিকিট দিয়েছে দল।অথচ সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও টিকিট দেওয়া হয়নি দলের অপর সাধারণ সম্পাদক অমিত রক্ষিতকে ।আরো দুই সাধারণ সম্পাদক কিশোর বর্মন ও পাপিয়া দত্তকেও টিকিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দল ব্রাত্য রেখেছে অমিত রক্ষিতকে।
           বিজেপির কর্মী এবং রাজ্যের উদ্যোগ পতিদের অভিযোগ, শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু জামায় রাজ্যের শিল্পে আক্রমণ করেছে ধসারোগ। ভেঙ্গে পড়েছে শিল্পের মেরুদন্ড। বোধজং নগর শিল্পতালুকে দৌরাত্ম বেড়েছে মাফিয়া – সমাজদ্রোহীদের ।তাদের তোলা আদায়ের বহরের কারণে বহু শিল্প এখন ধুঁকছে। শিল্প তালুকে সাধারণ পুলিশ প্রোডাকশন দেওয়ার মত ব্যবস্থা করতে পারিনি টিংকু। মানিক সাহা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর শিল্প তালুকে তিনি গিয়েছিলেন। তখন সঙ্গে ছিলেন টিংকু নিজেও। মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সরব হয়েছিলেন উদ্যোগপতিরা। সেখান দাড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
           কৃষ্ণনগরস্থিত গেরুয়া বাড়িতে পা রাখলেই টিংকু রায়ের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ শোনা যায় কর্মীদের মুখে মুখে। তারপরও কোন জাদু মন্ত্র বলে টিংকু হয়ে উঠলেন সুবোধ বালক। এবং পেয়ে গেলেন টিকিট। টিংকু রায়কে দলীয় লোকজন যে পছন্দ করছে না, তার প্রমাণ পাওয়া যায় চন্ডিপুর বিধানসভার দিকে নজর রাখলেই। চন্ডিপুরের প্রার্থী হিসেবে টিংকুর নাম ঘোষণা হতেই গত বিধানসভা এলাকায় আগুনে জ্বলতে থাকে।দলীয় কর্মীরা প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং তারা পদত্যাগ করছে নিজ নিজ পদ থেকে।তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, স্থানীয় কাউকে প্রার্থী না করলে ভোটের ময়দানে কাজ করবে না। দুর্নীতিবাজ টিংকুকে তারা প্রবেশ করতে দেবে না বিধানসভা এলাকায়।
           সম্প্রতি টিংকু রায়ের জাল শিক্ষাগত যোগ্যতা শংসাপত্র নিয়ে সরব হয়েছিল চন্ডিপুরের যুব মোর্চার কর্মীরা। তারা টিংকু রায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলো। তাছাড়া স্থানীয় থানা- পুলিশ, পুলিশ সুপার ও জেলা শাসককে ও অভিযোগ করেছে টিঙ্কুর বিরুদ্ধে।
           বিজেপির কর্মীদের কথায়,টিংকু রায় আপাদমস্তক একজন দুর্নীতিবাজ। তারপরও দল কেন তাকে টিকিট দিয়েছে?  নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে প্রভাব পড়ছে দলের সংগঠনেও। ভোটের মুখে ফুঁসছে দলের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচি  উত্তর ও দক্ষিণ জেলা থেকে পৃথকভাবে শুরু হয়েছিল। উত্তরে দায়িত্ব ছিলেন অমিত রক্ষিত।এবং দক্ষিণের দায়িত্বে ছিলেন টিংকু।বিজেপির ঘরোয়া খবর অনুযায়ী, টিংকু রায় নানান ভাবে চেস্টা করেছিলেন উত্তর জেলার রথ যাত্রা ফ্লপ করতে।কিন্তু পারেন নি।কারণ অমিত রক্ষিত সফল ভাবে রথ যাত্রা কর্মসূচি সফল করেছিলেন। এই সমস্ত সব খবর রয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। তারপরও টিংকু রায়কে কেন টিকিট দিয়ে অমিতকে কেন ব্রাত্য করা হলো? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিজেপির নেতা কর্মী সমর্থকদের মধ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *