ডেস্ক রিপোর্টার,৩১জানুয়ারি।।
       তিপ্রামথা। রাজ্যের পাহাড় রাজনীতির শাসক দল। দলের প্রধান মুখ প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ।প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগ পর্যন্ত প্রদ্যুৎ কিশোর ছিলেন ২৩- র মহাযুদ্ধের গেম চেঞ্জার। অন্তত প্রদ্যুৎ কিশোরের দলের রাজনৈতিক ক্ষিপ্রতা দেখে এমনটাই ধারণা করেছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কিন্তু প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর পরিস্থিতি অনেকটা পাল্টে যায়। প্রদ্যুৎ কিশোরের শক্তিশালী দল নড়বড়ে হয়ে যায়।বলছেন রাজনীতিকরা।
  তিপ্রামথার প্রার্থীর তালিকায় নেই হেভিওয়েট নেতৃত্ব। দলের প্রথম লেয়ারের নেতাদের দেওয়া হয়নি টিকিট।তারা এখন ভুগছেন হতাশায়। নির্বাচনের আগেই তারা ছেড়ে দিতে পারেন দল।গুঞ্জন রাজ অন্দর মহলে।
     প্রার্থী ঘোষণার প্রাক লগ্নে তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোর নিজেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে কয়েক যোজন দূরে সরিয়ে নিয়েছেন।অথচ প্রদ্যুৎ কিশোর লড়াই করেছিলেন এডিসি নির্বাচনে। কিন্তু প্রদ্যুৎ কেন বিধানসভা নির্বাচনে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলেন লড়াইয়ের অলিন্দ থেকে? প্রদ্যুৎ কিশোর টাকারজলা থেকে লড়াই করলে নিশ্চিত ভাবে তিনি জয়ী হতে পারতেন। তিনি তা করেন নি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উকি দিচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ অবশ্যই বলতে পারবেন প্রদ্যুৎ কিশোর।
    এবারের প্রার্থীর তালিকায় স্থান পান নি এডিসির চেয়ারম্যান জগদীশ দেববর্মা।তিনি এডিসি নির্বাচনে মন্দাই থেকে লড়াই করেছিলেন। তার রুদ্র তাপে খাক হয়ে গিয়েছিল আইপিএফটি প্রার্থী। অথচ বিধানসভার মত নির্বাচনে টিকিট পেলেন না জগদীশ। এটাও আম জনতার কাছে রহস্য জনক।
    রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া। তিনি আইপিএফটি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তিপ্রামথায়।আবার করার মত ঘটনা সদ্য প্রাক্তন হওয়া মন্ত্রী নেবার কুমারকে টিকিট দেওয়া হয়নি।প্রদ্যুৎ অবশ্যই কারণ ব্যাখ্যা করেন নি।
    বিজয় রাঙ্খল।তিনি দলের সিনিয়র নেতা। গত এডিসি নির্বাচনে তিনি করমছড়া থেকে লড়াই করেছিলেন। এর আগে আমবাসা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তিনি দুইবার জয়ী হয়ে গিয়েছিলেন বিধানসভায়।কিন্তু এক রহস্য জনক কারণে প্রার্থীর তালিকায় নাম নেই বিজয় রাঙ্খলের। কেন? উত্তর দেন নি প্রদ্যুৎ।
    রাজেশ্বর দেববর্মা। তিনি টিপ্রামথার প্রথম সারির নেতা। প্রাক্তন বিধায়ক। বর্তমানে মথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোরের ওএসডি। টাকারজলা বিধানসভা কেন্দ্রে রাজেশ্বর দেববর্মার বেশ রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে। কিন্তু তারপরও রাজেশ্বরের কপালে জোটেনি টিকিট ।যেহেতু টাকারজলাতে প্রদ্যুৎ কিশোর লড়াই করেননি, তার পরিবর্তে নিশ্চিতভাবে রাজেশ্বর দেববর্মা এই কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন। তাহলে তার জয়ও প্রায় নিশ্চিত ছিল।বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কিন্তু কেন রাজেশ্বর দেববর্মা টিকিট পেলেন না? এখন পর্যন্ত তার কোন ব্যাখ্যা দেননি কথার প্রধান প্রদ্যুৎ।
        এন্থনি দেববর্মা। তিপ্রা মথার প্রবক্তা।মথার  কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বেশ ভালো। তিনি একজন সুবক্তাও বটে। দলের তাত্ত্বিক নেতাদের একজন।অথচ এনথনির মতো নেতাকে দল টিকিট দেয়নি।এডিসির যে কোনো আসন থেকেই তিনি লড়াই করে ভালো ফলাফল করতে পারতেন।কিন্তু কোথায়,? এন্থনি। তার নাম নেই প্রার্থীর তালিকায়।
         বিজেপি ছেড়ে তিপ্রামথায় যোগ দিয়েছিলেন করবুকের বিধায়ক বুরবমোহন ত্রিপুরা। অবাক করার বিষয় প্রার্থীর তালিকায় স্থান পেলেন না তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রদ্যুৎ কিশোরের এই প্রার্থীর তালিকা নিয়ে রহস্যের জাল আবৃত্ত হচ্ছে। রাজনীতিক মহলে উঠতে শুরু করেছে গুঞ্জন। প্রদ্যুৎ কিশোরকে যদি ক্ষমতায় আসার ইচ্ছা থাকতো তাহলে কেন,দলের স্টাইকিং লিডারদের টিকিট দিলেন না ?সাধারণ মানুষকে কিন্তু প্রদ্যুৎ কিশোর আজ পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি এবং আগামী দিনেও পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই কারণেই তাকে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছ।  মথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন কার স্বার্থে নির্বাচনে সহজ -সরল জনজাতিদের ভাবাবেককে  ভাসিয়ে দিলেন গোমতী – রাইমা – খোয়াই – মনু নদীতে। নাকি পর্দার আড়ালে কোনো গটআপ গেম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *