ডেস্ক রিপোর্টার,১২নভেম্বর।।
            গোটা দেশের সঙ্গে আলোর উৎসবে মাতোয়ারা রাজ্য। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পূজিত হবেন মা কালী। দীপাবলি উৎসব উপলক্ষ্যে সেজে ওঠেছে শক্তিপিঠ উদয়পুরের মা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির। উদয়পুরে দীপাবলিতে তিন দিন ব্যাপী চলবে মেলা। দীপাবলি উৎসব উপলক্ষ্যে মাতা বাড়ি সহ গোটা উদয়পুরে জোরদার নিরাপত্তার ব্যবস্থা। কোথায় মাছি গলার জায়গা নেই।


রবিবার বেলা বিরাতেই পুন্যার্থীদের ভিড় বেড়েছে। আছড়ে পড়েছে জন ঢল।মাতা বাড়ি চত্বরে অনুষ্ঠিত মেলায় বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে দীপাবলি উৎসবের মূল কেন্দ্র বিন্দু ত্রিপুরা সুন্দরীর মন্দির সেজে ওঠেছে আলোর ঝর্নার মাঝে।

।।মাতা বাড়িতে জন ঢল।।

ইতিহাসে কথিত আছে, ১৫০১ খ্রিস্টাব্দে ত্রিপুরার তৎকালীন মহারাজা ধন্য মানিক্য ত্রিপুরা সুন্দরীর মন্দির স্থাপন করেছিলেন।  কালিকা পূরানের তথ্য অনুযায়ী,এটি ৫১ পীঠের একপিঠ ত্রিপুরা সুন্দরীদেবী। এখানেই নাকি সতীর ডান পায়ের অংশ পড়েছিল। উদয়পুরে মাতা ত্রিপুরা সুন্দরীকে দেবী ষোড়শী রূপে পূজা করা হয়। দেবী এখানে পুজিত হন ষোল বছরের কন্যা হিসাবে।


মাতা বাড়ির মন্দিরে থাকা দেবী ষোড়শীর বিগ্রহ সম্পূর্ণ কষ্টিক পাথরের।বিগ্রহের উচ্চতায় ১ মিটার ৫৭ সেন্টিমিটার। প্রস্থ ৬১ সেন্টিমিটার। মন্দিরের স্থানটি দেখতে কচ্ছপের পিঠের আকারের। মা ত্রিপুরা সুন্দরীর মূর্তির পাশেই আছে ছোট একটি প্রতিমা। এই প্রতিমারও বিশেষত্ব রয়েছে। ইতিহাসে বলা হয়েছে,  ত্রিপুরা সুন্দরীর পাশে থাকা মূর্তিটি মহারাজা ধন্য মানিক্যের ছোট মা।

।।ছোট মা।।

রাজা কোনো যুদ্ধ বা শিকারে যাওয়ার সময় সঙ্গে করে ছোট মাকে নিয়ে যেতেন। এবং পূজা করতেন। মাতাবাড়ি চত্বরেই আছেন ভোলানাথের মন্দির। মন্দিরে থাকা শিব লিঙ্গের সঙ্গে আছে হনুমানের বিগ্রহ। ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে থাকা ভোলানাথকে ত্রিপুরেশ্বর রূপেও পূজিত করা হয়।৫২২বছরের এই ইতিহাস এখনো জ্বলজ্বল করছে মাতা ত্রিপুরা সুন্দরীর মন্দিরে।
              


ইতিহাসের কোথায় কোথায়ও বলা হয়েছে, মহারাজা ধন্য মানিক্যের ছোট মা, আসলে মঙ্গল চণ্ডী।তিনি নাকি দেবী ষোড়শীর আরেক রূপ। তিনি মন্দিরে পূজিত হন মঙ্গল চণ্ডী রূপে।  রাজন্য শাসনে মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলো রাজ পরিবার।

।।ত্রিপুরেশ্বর (মহাদেব)।।

পরবর্তী সময়ে ১৯৪৯ সালে ত্রিপুরা ভারতের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব বর্তায় রাজ্য সরকারের।পদাধিকার বলে ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের প্রধান সেবায়েত হলেন গোমতী জেলার জেলা শাসক।

।।হনুমানের বিগ্রহ।।

বর্তমানে মন্দির সরকার পরিচালনা করলেও 
পুজোর অর্ঘ্য আহুতি হয় রাজপরিবারের সদস্যদের নামেই। এখন মায়ের পুজোর অর্ঘ্য আহুতি হয়
  প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন নামে। ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের প্রধান ভোগ প্যাঁড়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *